‘দূর্গে দূর্গে দূর্গতনাশিনী‘
HnExpress অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা : বছরের এই সময়টাই তো সেজে ওঠে তিলোত্তমা। অন্দরমহল আলোকিত হয় দেবীপক্ষের আগমনে। আর তার শুরু হয় মহালয়ার বাদ্যিতে। রেডিওতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বরের পর বাঙালির মুখ্য আকর্ষণের জায়গা হয় টেলিভিশনের পর্দা। মহীষাসুরমর্দিনী হয়ে ওঠার গল্প চলে যে সেখানে। এই নিয়ে আলাপ আলোচনারও শেষ থাকে না।
সোমবার শুভ মহালয়া। শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন। পিতৃপক্ষের শেষে দেবীপক্ষের শুরু। পুরাণমতে এদিন দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটে।
মহালয়ার মাধ্যমে দেবী দুর্গা আজ পা রাখলেন মর্ত্যলোকে। অশুভ অসুর শক্তির কাছে পরাভূত দেবতারা স্বর্গলোকচ্যুত হওয়ার পর চারদিকে শুরু হয় অশুভ শক্তির পরাক্রম। এই অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে একত্র হন দেবতারা। তখন দেবতাদের তেজরশ্মি থেকে আবির্ভূত হন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা।
শ্রী শ্রী চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। আর এই ‘চন্ডী’তেই আছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা এবং দেবীর প্রশস্তি। শারদীয় দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপর্ণ অনুষঙ্গ হলো এই মহালয়া।
হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, যেহেতু পিতৃপক্ষে প্রেতকর্ম (শ্রাদ্ধ), তর্পণ ইত্যাদি মৃত্যু-সংক্রান্ত আচার-অনুষ্ঠান পালিত হয়, সেই হেতু এই পক্ষ শুভকার্যের জন্য প্রশস্ত নয়। দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতে গণেশ উৎসবের পরবর্তী পূর্ণিমা (ভাদ্রপূর্ণিমা) তিথিতে এই পক্ষ সূচিত হয় এবং সমাপ্ত হয় সর্বপিতৃ অমাবস্যা, মহালয়া অমাবস্যা বা মহালয়া দিবসে। উত্তর ভারত ও নেপালে ভাদ্রের বদলে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষকে পিতৃপক্ষ বলা হয়।
সোমবার সাতসকালে টালিগঞ্জে প্রশান্ত শূর উদ্যাণে বসেছিল এক অভিনব মহালয়ার আসর ‘দেবীবন্দনা’। ‘মুক্ত মঞ্চ‘-র প্রথম প্রয়াস ‘দূর্গে দূর্গে দূর্গতনাশিনী‘ দেখতে সমবেত হন এলাকার মানুষজন। ছিলেন দূরের কিছু আগ্রহীও। উদ্যোক্তাদের অধিকাংশই প্রবীন। কিছু নবীনকেও সামিল করেছেন অনুষ্ঠানে। গৌতম সেনগুপ্ত, রাওয়াল পুষ্প, সুপ্তি সেনগুপ্ত প্রমুখের অনুপ্রেরণায় সেই নবীনরা নিজেরা নাচলেন, গাইলেন, নাচালেন, গাওয়ালেন বড়দেরও। পরতে পরতে ছিল দেবীবন্দনার পরশ।