“বঙ্গবীর তিতুমীর” শীর্ষক এক অভিনব তথ্যচিত্রের আত্মপ্রকাশ
HnExpress ইন্দ্রাণী সেনগুপ্ত, বারাসাত : সোমবার ১৩ই আগষ্ট, বারাসাতের জেলা পরিষদের ভবনের তিতুমীর সভাগৃহে বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা নবীন পরিচালক রূপক প্রামাণিক এর অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্টায় আত্মপ্রকাশ ঘটল “বঙ্গবীর তিতুমীর” শীর্ষক তথ্যচিত্রের। ইতিহাসের পাতা থেকে তুলে আনা বীর তিতুমীর এর দেশপ্রেমের জন্য তাঁর আত্মবলিদানকে নিয়ে তৈরি এই তথ্যচিত্রের সিডি উদ্বোধন করলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা রাজ্যের সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরান সহ, তিতুমীরের ষষ্ঠ বংশধর সৈয়দ মীর মদত আলি ও মীর জামসেদ আলি, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক ও গবেষক ডাঃ নিরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশিষ্ট সমাজসেবী সুদীপ্ত ব্যানার্জী, বিশিষ্ট সাংবাদিক তাপস কুমার সরকার, নায়ীমুল হক, আইনজীবি অশোক পোদ্দার প্রমুখ। এছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন এই তথ্যচিত্রের চিত্রনাট্যকার ও ভাষ্যকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, চিত্রগ্রাহক ও সম্পাদক রবিউল হক সহ মিশনের অনান্য সদস্যবৃন্দ। মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথি সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরান তাঁর মূল্যবান বক্তব্যে বললেন, এই বাংলার গ্রামের দরিদ্র চাষীদের সংঘবদ্ধ করে, গ্রামীণ অস্ত্র শস্ত্র দিয়ে বিদেশী ইংরেজ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন তিতুমির। তিতুমিরের যুদ্ধক্ষেত্র ও বাঁশের কেল্লার সাহাদাতভুমি বাংলার প্রত্যন্ত গ্রাম বাদুড়িয়ার নারকেলবেড়িয়া ও জন্মভিটে হায়দারপুর-চাঁদপুর এলাকাকে ঐতিহ্য গ্রাম ও ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা দরকার। শহিদ তিতুমিরের স্মরণে এলাকাবাসীর এই দাবি নিয়ে তিনি রাজ্য সভায় প্রস্তাব রাখবেন বলে জানান। তার সাথে “বঙ্গবীর তিতুমীর”শীর্ষক তথ্যচিত্র নির্মাতার কর্মকর্তাদের সাধুবাদ জানান তিনি।
উল্লেক্ষ্য, বিশিষ্ট সাংবাদিক এনামুল হক তিতুমীরের সংগ্রামী জীবনের ঐতিহাসিক গবেষনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পরে সভাগৃহে আগত বিশিষ্ট অতিথিবর্গ, দর্শকমন্ডলী ও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের “বঙ্গবীর তিতুমীর” শীর্ষক তথ্যচিত্রটি দেখানো হয়।
অনুষ্ঠান শেষে পরিচালক রূপম প্রামাণিক তাঁর পরিচালিত তথ্যচিত্রের বিষয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে এইচ.এন.এক্সপ্রেসের প্রতিনিধিকে জানালেন যে, যেহেতু তিতুমীর ব্রিটিস নীলকর সাহেবদের বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন শুরু করেছিলেন, যে সময় ব্রিটিশ নীলকর সাহেবরা এবং ততকালিন হিন্দু-মুসলীম জোতদার ও জমিদাররা জোর করে কৃষকদের জমি কেড়ে নিয়ে তাতে নীলচাষ করাতে বাধ্য করতেন। তাতে স্বাভাবিক ভাবেই কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হত। তিতুমীর ঐ সমস্ত প্রান্তিক চাষী ও সাধারণ মানুষদের নিয়ে ব্রিটিশ নীলকর সাহেব ও জমিদারদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু করে দিলেন। সেই আন্দোলনের ফলস্বরূপ একসময় ব্রিটিশরা নীলকুঠি ছেড়ে পালিয়ে যান। তিতুমীরের এই লড়াকু সংগ্রাম ভারতবর্ষের কৃষক আন্দোলনকে এক নতুন রূপ দিয়েছিল। কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে সব কিছুই আজ ইতিহাসের পাতায় বিবর্ণ হয়ে গেছে। সেই ইতিহাস ও তিতুমীরের লড়াকু সংগ্রাম ও আদর্শকে সম্মান জানাতে এবং তার আত্ম বলিদানের কথাকে সকলের সামনে তুলে ধরার জন্যই এই তথ্যচিত্রের উপস্থাপনা। এই গবেষনাধর্মী তথ্যচিত্রে তিতুমীরের নানান অজানা তথ্য ও সত্যকাহিনীকে ব্যক্ত করার লক্ষেই “বঙ্গবীর তিতুমীর” এর আত্মপ্রকাশ। সমগ্র অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন গায়েত্রী ঘোষ।