ডাক বিভাগের অভিনব পত্রলেখা প্রতিযোগিতা
HnExpress সম্রাট গুপ্ত, কলকাতা ৭ জানুয়ারি : বেহাল ডাকব্যবস্থা নিয়ে আমজনতার বিরক্তি যতই তুঙ্গে হোক, সিলভার লাইনিং বলে একটা কথা আছে তো! ডাক কর্মীদের একাংশ এখন মহাব্যস্ত পত্রলেখা প্রতিযোগিতা নিয়ে। তবে প্রতিযোগিতায় সাড়া দিয়েছেন নানা বয়সের প্রায় ২২ হাজার প্রতিযোগী। তার থেকে পর্যায়ক্রমে চলছে বাছাইয়ের কাজ। এই মুহূর্তে সেটা পৌঁছে গেছে প্রায় চূড়ান্ত স্তরে।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ও আমার দেশের মাটি‘ অনুসরণ করে প্রতিযোগিতায় এ বারের বিষয় ছিল দেশমাতৃকাকে চিঠি লেখা। মূলত ছিল দু‘টি ভাগ— এনভেলপে এবং ইনল্যান্ড লেটারে। প্রথমটিতে এ ফোর কাগজে লিখতে হয়েছে অনধিক ১০০০ শব্দে। দ্বিতীয়টিতে অনধিক ৫০০ শব্দে। এই দুই বিভাগ বিভক্ত দু‘টি করে ভাগে— ১৮ বছরের উর্ধ্বে এবং অনূর্ধ্বে। নিয়ম অনুযায়ী লেখা এসেছে বাংলা, ইংরেজি ও হিন্দিতে।
প্রতিযোগিতার শিরোনাম ছিল ‘ন্যাশনাল লেভেল ধাই অখর লেটার রাইটিং কম্পিটিশন‘। এ বারের প্রতিযোগিতা সরকারিভাবে শুরু হয় গত ১৫ জুন। জানিয়ে দেওয়া হয় ৩০ শে সেপ্টেম্বরের পর দেওয়া ডাকঘরের সিলমোহর এর চিঠি গৃহীত হবে না। এ রাজ্যে জমা পড়ে প্রায় ২২ হাজার চিঠি।
প্রতি ডাক-সার্কলে প্রথম তিন প্রতিযোগীর জন্য পুরস্কার থাকছে যথাক্রমে ২৫ হাজার, ১০ হাজার এবং ৫ হাজার টাকা। আর জাতীয় পর্যায়ে থাকছে যথাক্রমে ২৫ হাজার টাকা, ২৫ হাজার টাকা এবং ২৫ হাজার টাকা।
চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল গৌতম ভট্টাচর্যের নেতৃত্বে চলছে এই প্রতিযোগিতা। এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলেন ডাক বিভাগের সহ অধিকর্তা (ফিলাটেলি) অভিনব প্রতাপ সিং। তদারকির জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন ওয়েলফেয়ার ইন্সপেক্টর পাপন বিশ্বাসের মত কিছু ডাককর্মী। ভাবুন তো, মাস দুয়ের মধ্যে প্রায় ২২ হাজার চিঠি খুলে সেগুলি পড়ে অপেক্ষাকৃতদের বাছাই, আরও বাছাই, তারও পরে বাছাই, সেগুলি তালিকাবদ্ধ করে প্রায় ৪৫০ চিঠি প্রধান বিচারকের (কেন্দ্রীয় সরকার মনোনীত এক অভিজ্ঞ সাংবাদিক) কাছে পাঠানো, এর পর তাঁর দেওয়া নম্বরের ভিত্তিতে সেরাদের নির্বাচিত করে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো— গোটা প্রক্রিয়া কতটা দুরূহ!
এর পরেও কেউ যদি বলেন ডাককর্মীরা কাজ করেন না, ওঁরা দুঃখ পাবেন না? অন্তত কেউ কেউ তো নিশ্চয়ই করেন! না হলে চোখের আড়ালে নিঃশব্দে এত বড় কর্মযজ্ঞ হতে পারে?