জানেন টিউমার আসলে কি? আজই জেনে নিন, কেন হয় এবং তা প্রতিকারের উপায়
HnExpress ৬ই মার্চ, ওয়েবডেক্স নিউজ, স্বাস্থ্য সচেতনতা ঃ টিউমার আসলে কি? টিউমার হলো একটি ইংরেজি শব্দ। এর বাংলা নাম আব্রূদ। টিউমার বলতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি বিশেষ নিদান তাত্তি্বক অবস্থাকে বোঝান হয়েছে। শরীরের যে কোনো স্থানে কোষ সমূহ যদি ধীরে ধীরে বা দ্রুততার সঙ্গে অস্বাভাবিক ও অসামঞ্জস্যভাবে ফুলে ওঠে, বা এক কথায় বলা যায় টিউমার হলো মূল দেহ কোষের রূপান্তর বা নতুন কোষের সংযোজন মাত্র।
টিউমার সাধারনত তিন প্রকারঃ
তবে কি কি কারণে মানবদেহে এমন টিউমার বা ক্যান্সার হয় তার কারণ জানা যায় নি এখনো। আমাদের দেশে বেশ কিছু পরিচিত টিউমারে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। নিচে বিভিন্ন প্রকার টিউমার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো—
১. হিস্টোমা বা কানেকটিভ টিস্যু টিউমার।
২. সাইটোমা।
৩. টেরাটোমা বা মিক্সড সেল টিউমার।
হিস্টোমা টিউমার আবার দুই প্রকার ঃ—
১. বিনাইন।
২. ম্যালিগন্যান্ট।
বিনাইন টিউমার ঃ—
এ জাতীয় টিউমার তুলতুলে নরম হয় এবং শক্ত হয় না। খুব আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়। এর কোনো আবরণ থাকে না। এর উপরের চর্ম আলাদা বা পৃথক মনে হয়। এই টিউমারের সংলগ্ন গ্রন্থি সমূহ আক্রান্ত হয় না। চাপ দিলে এতে কোনো যন্ত্রণাও অনুভূত হয় না।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার ঃ—
এটা নিরেট বা শক্ত হয়। এটা খুব দ্রুত বড় হয়। এতে একটা আবরণ থাকে। এটার উপরের চর্ম আলাদা বা পৃথক মনে হয় না। এই টিউমার সংলগ্ন গ্রন্থি সমূহও আক্রান্ত হয়। চাপ দিলে এতে যন্ত্রণাও অনুভূত হয়। এতে আঘাত করলে বা অস্ত্রোপচার করলে ক্ষতি হয়। অস্ত্রোপচার করলে পরে প্রায়ই ক্যান্সার হতে দেখা যায়।
আর শরীরের বিভিন্ন স্থানের টিউমার বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন—
১. নাক, জরায়ু প্রভৃতি শৈ্লষ্মিক ঝিলি্লর টিউমারের নাম প্যাপিলোমা।
২. জরায়ু, পাকস্থলী প্রভৃতি স্থানের মাংসপেশির টিউমারের নাম মাইওমা।
৩. চর্মের টিউমারের নাম এপিথেলিওমা।
৪. পিঠ, কাঁধ প্রভৃতি স্থানে ফ্যাটিটিস্যু টিউমারের নাম লিপোমা।
৫. বোনের কার্টিলেজের টিউমারের নাম কনড্রমা।
৬. মাথার খুলি, মুখমন্ডল, নাসিকা গহ্বর প্রভৃতি স্থানে হাড়ের অস্থি টিউমারের নাম অস্টিওমা।
৭. মস্তিষ্ক কোষের টিউমারের নাম গ্লাইওমা।
৮. মস্তিষ্ক, লিভার প্রভৃতি স্থানে রক্ত নালিকার টিউমারের নাম হেমান জিওমা।
৯. ঘাড়, জিহ্বা, বগল প্রভৃতি স্থানের লসিকা নালির টিউমারের নাম লিমফ্যানজিওমা।
সাধারণত কম বয়সে সার্কোমা টিউমার দেখা দেয়। প্রায় ৪০ বছর বয়সের পর কার্সিনোমা টিউমার দেখা দেয়।
এবারে আসি, টিউমারের কারণ ঃ—
যে সব মহিলা ডিঅ্যান্ডসি বা এমআর করে বা কোনো গাছ-গাছড়া দিয়ে ভ্রূণ নষ্ট করে বা প্রসবকালে যেসব মহিলার প্রচণ্ড কষ্ট হয় বা যে সব মহিলা ঘন ঘন সন্তান প্রসব করে বা যে সব মহিলার অতি অল্প বয়সে বিয়ে হয় সেই সব মহিলার জরায়ুতে আঘাত হেতু, জরায়ু, জরায়ুর মুখ, ডিম্বকোষ, স্তন গ্রন্থিতে টিউমার দেখা দিতে পারে। সাধারণত মহিলাদের উপরোক্ত কারণ থেকে নিবৃত থাকা বাঞ্ছনীয়।
পুরুষদের অন্ডকোষে কোনো রকম আঘাত লাগলে অন্ডকোষ ফুলে শক্ত হয়ে টিউমার দেখা দেয়। যারা কলকারখানায় চিমনি পরিষ্কার করে তাদের বিভিন্ন স্থানে টিউমার দেখা দেয়। কোনো কোনো পরিবারে বংশগত ভাবেও টিউমার দেখা দিতে পারে। এছাড়া আঘাত, ঘর্ষণ, পেষণ বা উদ্দীপনার ফলে স্থান বিশেষ অ্যাডিনোমা সৃষ্টি হতে পারে। পুরনো পোড়া ঘায়ে অনেক সময় টিউমার বা ক্যান্সার দেখা দিতে পারে।
আসুন এবারে জেনে নিই, চিকিৎসার পদ্ধতি সমুহ ঃ—
টিউমারের সাধারণ চিকিৎসা অপারেশন। কিন্তু অনেক সময় টিউমার অপারেশন করলে তা থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমার অপারেশন করা একেবারেই নিরাপদ নয়। তবে বর্তমানে উন্নত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে সব রকম টিউমারকেই আরোগ্য করা সম্ভবপর হয়ে উঠেছে, যদি তা প্রথম পর্যায় ধরা পরে।