কাঁচরাপাড়ায় জোড়া গোষ্ঠী কলহে গুরুতর জখম কিশোরী-সহ ৪
HnExpress দেবাশিস রায়, কাঁচরাপাড়া : পুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল বীজপুর বিধানসভার কাঁচরাপাড়া। এমনটা যে ঘটতে পারে তা বেশ কিছুদিন ধরেই বোঝা যাচ্ছিল কিছু টুকরো ঘটনায়। আর সোমবার, ২২ অক্টোবর একই দিনে দু-দুটো গোষ্ঠী কলহের ঘটনা ঘটায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দুটি ঘটনায় এক কিশোরী-সহ কমপক্ষে চারজন আহত হয়েছেন।
ঘটনা সূত্রে প্রকাশ, এদিন সকালে মণ্ডলবাজার এলাকার বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী সানি যাদবকে বাড়িতে ঢুকে আক্রমণ করে একদল দুষ্কৃতি। সানিকে গুরুতর আহত অবস্থায় কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সানির বন্ধু ও পরিবারের অভিযোগ, তৃণমূলেরই আরেক গোষ্ঠী এই হামলা চালিয়েছে। যার নেতৃত্বে রয়েছেন রাজা সরকার নামে এক যুব তৃণমূল নেতা। সানি আবার বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের ঘনিষ্ঠ। আহত সানিকে দেখতেও যান বিধায়ক স্বয়ং। এঘটনারই পাল্টা হিসেবে সানির দলবল সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কাঁচরাপাড়ার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জোনপুরের একটি তৃণমূল পার্টি অফিসে বোমাবাজি করে ও ভাঙচুর চালায়। সে সময় মায়ের সঙ্গে ওষুধ কিনে বাড়ি ফিরছিল বছর দশেকের কিশোরী বর্ষা সরকার। বোমার আঘাতে আহত হয় বর্ষা। তার কোমরে ও পায়ে বোমার স্প্রিন্টার ঢুকে যায়। বর্ষাকে প্রথমে কাঁচরাপাড়া রেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। বর্ষার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
আরেকটি ঘটনা ঘটছে দুর্গাপুজোর বিসর্জন ঘিরে। প্রতিবছরই কাঁচরাপাড়ায় এই বিসর্জন ঘিরে থাকে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশেষ উদ্দীপনা। এবার সেই মাত্রাটি বাড়িয়ে দিয়েছিল কাঁচরাপাড়া পুরসভার শতবর্ষ হিসেবে বিসর্জন ঘিরে বিশেষ প্রতিযোগিতা। দুপুর থেকেই চলছিল এই বিসর্জন পর্ব। রাত আটটা নাগাদ শহিদনগর যুবক ও মহিলাবৃন্দের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় হামলা হয়। কাঁচরাপাড়া কলেজ মোড়ে শোভাযাত্রা পৌঁছতেই স্থানীয় আরেকটি পুজো কমিটির প্রধান জনৈক মলয়ের নেতৃত্বে সদস্যরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। কিন্তু কী কারণে এই হামলা তা জানা যায়নি। তবে বিশেষ সূত্রে খবর, শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া কোনও একটি বা একাধিক দলকে তাদের শোভাযাত্রায় না পাওয়াতেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রসঙ্গত, দুটো সংগঠনই তৃণমূলের আশ্রিত ক্লাব। এঘটনায় শহিদনগর যুবকবৃন্দের দুজন সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বীজপুর থানার আইসি কৃষ্ণেন্দু ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। ছুটে আসেন বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি-১ স্বপন দত্ত স্বয়ং। নামানো হয় র্যাফ।
এদিকে বেশকিছু কাউন্সিলর অভিযোগ করেছেন, পুরপ্রধান তাদের কারো সঙ্গে আলোচনা না করেই শতবর্ষ উপলক্ষে এমন আয়োজন করেছেন তাঁর পকেটের কয়েকজকে নিয়ে। শোভাযাত্রায় গণ্ডগোলের দায় তাঁকেই নিতে হবে। পুরপ্রধান আবার টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতিও। দুই দায়িত্ব পেয়ে তিনি পুরসভায় একচ্ছত্র স্বেচ্ছাচারিতা চালাচ্ছেন বলে কাউন্সিলরদের একাংশের মত।
পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ক্ষোভ, পুরপ্রধান শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রা বিষয়ে তাঁদের কিছুই জানাননি। এখানেও তিনি পক্ষপাতিত্ব করেছেন।
দুঃসহ ঘটনা…..রাজনীতির বলি শিশুরা ! এ কেমন রাজনীতি !