গান্ধীজী আর ঐতিহ্য পদযাত্রার মেলবন্ধনে জিপিও
HnExpress অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা : এক জন বিশ্বের চিরকালীন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব মহাত্মা গাঁধী। অপরটি প্রক্ত অর্থেই একটি ঐতিহ্য ভবন। একই সঙ্গে দেড়শ বছর পূর্তি। এ রকম সম্মেলনের অবকাশ সচরাচর হয় কি? উপলক্ষটা তাই হাতছাড়া করতে চাননি কেন্দ্রীয় ডাক দফতর। মঙ্গলবার তাঁরা প্রকাশ করলেন বিশেষ এক স্মারক এনভেলপ। চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল (সিপিএমজি) অরুন্ধতী ঘোষ ও পিএমজি জয়ায়াম চারুকেশি এক অনুষ্ঠানে প্রকাশ করেন এটি। এই সঙ্গে জিপিও-তে শুরু হল সপ্তাহব্যাপী একটি ফিলাটেলিক প্রদর্শনী। মহাত্মাজীর বিভিন্ন সময়ের ডাকটিকিট ও ফার্স্ট ডেয়কভার-সহ একটি প্রদর্শনী চলবে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত।
কলকাতা জিপিও- দেড়শ বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার ছুটির দিন জিপিও কর্তৃপক্ষ আয়োজন করলেন অন্য রকম এক পদযাত্রার। সকাল আটটার আগেই জড়ো হয়েছিলেন আগ্রহীরা। গ্রেট ইস্টার্ন হোটেল থেকে জিপিও ভবন। আধ কিলোমিটারও হবে না কিন্তু দু’পাশের বাড়িগুলির কত ইতিহাস! হোটেলের বাঁ দিকে, রাস্তার ওপারে একটু পিছনে পেল্লাই জায়গা নিয়ে ঐতিহ্যের রাজভবন। একটু এগিয়ে বাঁ দিকে বাঁক নেওয়ার আগে ডান দিকে দেখলেন ওল্ড কারেন্সি বিল্ডিং। বয়সে জিপিও-র চেয়ে প্রায় ৩৫ বছরের বড়। ইতালিয় স্থাপত্যে তৈরি ভবনটিতে গোড়ায় ছিল অধুনালুপ্ত আগ্রা ব্যাঙ্ক। পরে সরকারের ইস্যু অফ কারেন্সির অফিস। ১৯৩৭ পর্যন্ত এটি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দায়িত্ব পালন করেছিল।
একটু দূরে সেন্ট অ্যান্ড্রুজ গির্জা। ঠিকানা, ১৫ বিবিডি বাগ নর্থ। এট ‘উৎসর্গ’ হয় ১৮১৮-র ৮ মার্চ। মানে, এরও ২০০ বছর পূর্ণ হল।মিছিলকারীরা অনেকে নতুন চোখে দেখলেন সেন্ট্রাল টেলিগ্রাফ অফিস। ১৭৭০ সালে ইওরোপীয় স্টাইলে তৈরি ওই বাড়িতে ছিল প্রথম ব্যাঙ্ক হিন্দুস্থান ব্যাঙ্ক। ওই জায়গায় তৈরি হল সুদৃশ্য নয়া ভবন। ১৮৬৮-তে হল নকশা। বাড়ি তৈরি শুরু ১৮৭৩-এ। তিন বছর লাগল শেষ হতে। ১২০ ফুট লম্বা ওই বাড়িতে জন প্রিন্সেপ এর অফিস ছাড়াও ছিল মেসার্স বার্কিনইয়ং এর শোরুম। বিদেশি পিয়ানো বিক্রির দোকান। ১৮৮২-তে চালু হল টেলিফোন-টেলিগ্রাম পরিষেবা। বাড়িটা সরকার নিয়ে সেই কাজে লাগাল।
আর একটু এগিয়ে হংকং ব্যাঙ্কের ভবন। ১৯২২-এ ১২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে, মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানির তৈরি। এবার বড় রাস্তা ধরে ডাইনে লালদিঘীর বিপরীতে সেই স্বপ্নের জিপিও। তার দেড়শ বছর স্মরণের মিছিল শেষ হল।
দুরন্ত খবর । প্রাচীন ঐতিহ্যকে ফিরে দেখা এবং তার সাথে বর্তমানের সংমিশ্রণ ।