বাঁচতে চাই, চাই আইনি অনুশাসন— গৃহমালিক সমিতিতে সমস্বর

0

HnExpress অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা ঃ প্রায় পাঁচ দশক আগের কথা। কুমার বিশ্বনাথ রায়ের পোস্তার রাজবাড়িতে বসেছিলেন জনা ত্রিশ ‘নির্যাতিত’ গৃহমালিক। তাঁদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা ভাড়াটিদের দাপটে। নিজেদের বাঁচানোর পথ খুঁজতে তৈরি করলেন ‘দি ক্যালকাটা হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন‘।বাঁচতে চাই, চাই আইনি অনুশাসন— গৃহমালিক সমিতিতে তাদেরই সম্মিলিত সমস্বর।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার রক্ষিত জানান, এর পর দফায় দফায় আলোচনা, সরকার ও পুরসভাকে চিঠি লেখা থেকে শুরু করে রাস্তায় গামছা পড়ে প্রকাশ্য প্রতিবাদ— সংগঠনের তরফে সবই হয়েছে। কিন্তু কোথাও প্রায় নিখরচায় থেকে যাওয়া, কোথাও বা নামমাত্র ভাড়ায় থাকা ভাড়াটিয়ারা মনে করতে লাগলেন ‘এটাই বুঝি আমার হকের বাড়ি’। গৃহমালিক-ভাড়াটিয়ার আইনি বিবাদ বাড়ছে। বেড়েছে বৈরিতা। এই অবস্থায় আমরা সংগঠনকে আরও মজবুত করার চেষ্টা করছি।

সাহিত্যিক তথা ‘যষ্ঠিমধু‘-র সম্পাদক কুমারেশ ঘোষ, আইনজীবী স্নেহেশ শূরের মত অধুনা প্রয়াত সমাজের বিভিন্ন স্তরের সম্ভ্রান্ত কিছু মানুষ নানা সময়ে সংগঠনের হাল ধরার চেষ্টা করেছেন। এখন প্রাক্তন সরকারি আধিকারিক ৮২ বছরের অমর মিত্র, বর্ষীয়ান শিক্ষাবিদ বিষ্ণু ঘোষ, সংগঠনের সভাপতি আন্দুল রাজবাড়ির শরিক অসিত চৌধুরীর মত প্রবীণরা যেমন আছেন, তেমনই আছেন সংগঠনের সহ সভাপতি প্রাক্তন মেয়র গোবিন্দ দে-র পুত্র সুজয়, তাঁর স্ত্রী কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত আইনজীবী ইরা দে ঘোষের মত মানুষজনও।

রবিবার (১৬/১১) সন্ধ্যায় বাগবাজার স্ট্রিটে এক সমাবেশে উপস্থিত হন পঞ্চান্নজন এ রকম নাগরিক। তাঁদের প্রায় সকলেরই এক সুর— “এ রকম চলতে পারে না। দেওয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গিয়েছে।“ মুদ্রাস্ফিতীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে জীবনধারণ অনেকের কাছেই দায় হয়ে উঠেছে। নামমাত্র ভাড়ায় থাকা ভাড়াটিয়ারা আইনের বা যুক্তির তোয়াক্কা না করে ঘর আঁকড়ে আছেন। অনেকে অন্যত্র ফ্ল্যাট কিনে বাপ-ঠাকুর্দার আমলে সস্তায় ভাড়া নেওয়া ঘরে তালা ঝুলিয়ে চলে গিয়েছেন। আদালতে দৌড়োদৌড়ি করার ক্ষমতাও নেই গৃহমালিকদের অনেকের।

ইতিমধ্যে সম মনোভাবাপন্ন ১৭টি সংগঠন মিলিয়ে তৈরি হয়েছে ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি অফ হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন‘। সুকুমার তার আহ্বায়ক। ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোয় তো প্রশ্নই ওঠে না, ভারতের অন্য শহরেও ভাড়াটিয়াদের এ রকম জুলুম দেখা যায় না। জনপ্রতিনিধি, সরকার বা প্রশাসন যদি ক্রমাগত চোখ বুঁজে থাকে, তাহলে জটিলতা আরও বাড়বে। আমরা তো আর লাঠি-বোমা নিয়ে রাস্তায় নামতে পারব না! বেঁচে থাকতে পথ খুঁজে নিতে হবে আমাদেরকেই।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply