বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারালেন সুন্দরবনের ভোম্বল বৈষ্ণব
HnExpress ফারহান গাজী, সুন্দরবন ঃ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অধিকাংশ মানুষদের আশ্রয়স্থল বলতে কেবলমাত্র একটি কুঁড়েঘর। সুন্দরবনে মধু, নদীর কাঁকড়া, মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন অধিকাংশ মানুষ। বিপদকে মাথায় করে জীবন জীবিকার টানেই চার-পাঁচজন সঙ্গীকে নিয়ে সুন্দরবনের অরণ্যে জঙ্গল থেকে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে ছিলেন বছর পঞ্চাশের ভোম্বল বৈষ্ণব। এই মধু সংগ্রহ করতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি।
এদিন বাকি সঙ্গীরা বাড়ি ফিরলেও, আর বাড়ি ফেরা হয়নি ভোম্বল বৈষ্ণবের। বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারান বছর পঞ্চাশের ওই মৌলে। রবিবার ভোরে সুন্দরবনের বসিরহাট রেঞ্জের অন্তর্গত ঘোলের খালে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত ভোম্বল বৈষ্ণবের বাড়ি ছোট্ট মোল্লাখালির কুমীরমারি গ্রামে। আচমকাই খালের ধারের ম্যানগ্রোভের ঝোপ থেকে একটি তোরা রয়াল বেঙ্গল টাইগার লাফিয়ে পড়ে নৌকায়। মুহূর্তেই ভোম্বলকে মুখে তুলে নিয়ে পালিয়ে যায় জঙ্গলের গভীরে।
আচমকা এই ঘটনায় রীতিমতো ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন ভোম্বলের বাকি দুই সঙ্গী। পরে সঙ্গীদের সহযোগিতায় ভোম্বল বৈষ্ণবের নিথর দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। ভোম্বল পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি ছিলেন। পরিবারের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোরবেলা রোজকার মতই নিজের দুই সঙ্গী নিরাপদ বৈদ্য ও প্রদীপ মণ্ডলের সঙ্গে খালে কাঁকড়া ধরতে যান তিনি। কাঁকড়া ধরার পরে জঙ্গল থেকে মধু সংগ্রহ করার কথাও ছিল ভোম্বলের।
সেই মতোই নৌকা নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে ছিলেন তিনি। বন দফতর সূত্রে খবর, চিলামারি জঙ্গলে কী করে বাঘের হানা বাড়ল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে বাঘটি আক্রমণ করেছে সেটিরও খোঁজ করা হচ্ছে। কোনও ভাবে বাঘটি আহত কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি ওই ধীবররা অনুমতি নিয়ে জঙ্গলে গিয়েছিল কি না তাও খতিয়ে দেখছে বনদফতর। পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তির মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া ।