৭০তম বসন্ত আর পার করা হলো না বাপি লাহিড়ীর, পবন হংস শ্মশানে চোখের জলে বিদায় শিল্পীকে—

0


HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, মুম্বাই ঃ এমন কি বয়স হয়েছিল যে এখনই চলে যেতে হলো! আর কয়েকটি বসন্ত কি পার করা যেতো না? মাত্র ৬৯ এ কি চলে যেতে হলো? এক গুচ্ছ প্রশ্ন নিয়ে শোকাহত ভক্তকুল ও গোটা সংগীত জগৎ। মধ্য রাতের কিছু আগে ওএসএ (অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া) ‘র কারণে বিশিষ্ট সঙ্গীত পরিচালক, সঙ্গীতশিল্পী-সুরকার বাপি লাহিড়ি জীবনাবসান হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, “বাপি লাহিড়ি এক মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং সোমবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু মঙ্গলবারই আবার তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। তাঁর পরিবার ডাক্তারকে জানালে, তাঁরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলেন। তাঁর একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা গিয়েছিল। বাপি লাহিড়ি পশ্চিমবঙ্গের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে সমৃদ্ধ এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম  আলোকেশ বাপ্পী লাহিড়ি। বাবা অপরেশ লাহিড়ী ছিলেন একজন বাংলা সঙ্গীতের জনপ্রিয় গায়ক। মা বাঁশরী লাহিড়িও ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ ও গায়িকা। তাদের পরিবারে একমাত্র সন্তান বাপ্পী লাহিড়ি।

তিন বছর বয়সেই তবলা বাজাতে শুরু করেন। তার মায়ের আত্মীয় হিসেবে ছিলেন বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী কিশোর কুমার এবং এস. মুখার্জী। পিতা-মাতার সান্নিধ্যে থেকেই তিনি সঙ্গীতকলায় হাতে খড়ি ও প্রশিক্ষণ নেন। এরপর তিনি ১৯ বছর বয়সে দাদু নামক বাংলা চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ করেন। দু’বছর বয়স থেকেই শিলিগুড়ির কোর্ট মোড় এলাকায় মাসির বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল বাপি লাহিড়ীর।

পরিবার সূত্রে খবর, মাসতুতো দাদা ভবতোষ চৌধুরী ও বাপি লাহিড়ী মামার বাড়িতে একসঙ্গে বেড়ে উঠেছিল ছোট বেলা থেকেই, তারপর তিনি একা কলকাতায় চলে আসেন। মামার বাড়ি সূত্রের খবর, মুম্বইয়ে চলে যাওয়ার পরও কিন্তু
বছরে অন্তত চার থেকে পাঁচবার আসতেন এই বাড়ি। ২০১৭ সালে শেষ এসেছিলেন মামার বাড়ি এবং ২০১৬ সালে শেষ লাইভ শো করেছিলেন শিলিগুড়িতে। মামার বাড়ির দোতালায় বাপির জন্য একটা আলাদা ঘর রাখা ছিল এবং যখন শিলিগুড়ি যেতেন, তখন ওই ঘরেই থাকতেন তিনি।



মাছ-ভাত খেতে খুব ভালবাসতেন বাপি লাহিড়ী। তাই মামার বাড়িতে তাঁর আবদার মতই হরেকরকম মাছের সাথে চিতল, কাতলা মাছ রান্নার হিড়িক পরে যেত। দাদা ভবতোষ চৌধুরীর কথায়, “গত বছরই বাপির শরীর খারাপের সময় দেখা করতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু আর হয়ে ওঠেনি। নিজেকে দোষী লাগছে। বাড়িতে এলেই দিনভর আড্ডা হত। চলত গান বাজনা। আড্ডা বসত ড্রয়িং রুমে”। সূত্রের খবর, মোট ২২ কোটি টাকার সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন বাপি লাহিড়ী।

প্রতি বছর ২ কোটি ২ লক্ষ টাকা আয় ছিল তাঁর। মোট ১১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা। সরকারের কাছে সব চেয়ে বেশী পরিমানে করদাতাদের একজন ছিলেন তিনি। এছাড়াও ২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেন। শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন। আজ সকাল ১০টায় বাপ্পি লাহিড়ীর শেষকৃত্যর কাজ শুরু হয়। মুম্বাই এর সান্তাক্রুজের পবন হংস শ্মশানে সঙ্গীতজ্ঞ বাপি লাহিড়ীর মরদেহ দাহ করা হয়।


 

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply