হাঁচি দিয়ে করোনা ছড়ানোর কথা বলে জেলে যুবক
HnExpress ২৯শে মার্চ, মৌলি মন্ডল ঃ একদা কালীদাস যে গাছে বসেছিলেন, সেই গাছের ডাল কেটেই তিনি মুর্খামির পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু এই অশান্ত সময়ে মুর্খামির পরিচয় দিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক পোস্ট করেন মুজিব মহম্মদ নামের এক ইনফোসিস কর্মচারী। তার অস্ত্র হাঁচি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, যখন সারা বিশ্ব করোনা আতঙ্কে থরহরিকম্প, সেই জায়গায়, করোনা রোধের প্রচার না করে, রাস্তায় বেড়িয়ে হাঁচি দিয়ে করোনা ছড়ানোর নিদান দিচ্ছেন। তার বক্তব্য, “আসুন সবাই মিলে রাস্তায় বেড়িয়ে হাঁচি দিয়ে ভাইরাস ছড়িয়ে দিই।”
পোস্টটি আপলোড হওয়ার পর ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। তার তাতেই নড়ে চড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। তৎক্ষণাৎ পুলিশের তৎপরতায় তার স্থান হয় শ্রীঘরে। একজন প্রতিষ্ঠিত ও ইনফোসিসের মতো সংস্থায় কর্মরত সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন বিচক্ষণহীনতার কাজ করতে পারেন, তা নিয়ে বিস্মিত সাধারণ মানুষ। তবে মনোবিদরা জানাচ্ছেন, এক নাগাড়ে বন্দী দশায় থাকতে থাকতে মানুষের এমন কিছু অবসাদ আসতেই পারে।
আর সেই অবসাদ থেকে এমন করার সম্ভাবনা অনেক সময় থাকে। কিন্তু পারিপার্শ্বিক উদ্বিগ্ন পরিবেশে এমন কাজ মোটেও কাম্য নয়, তাও জানিয়েছেন তারা। পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার পর চুপ করে বসে থাকেনি ইনফোসিসও। পত্রপাঠ তাকে বরখাস্তও করেন তারা। এই বরখাস্তের কথা তারা তাদের টুইটার হ্যান্ডেলেও জানান। তাদের বক্তব্য, তাদের কর্মচারীর দ্বারা সোশ্যাল মিডিয়ায় করা পোস্ট নিয়ে তাদের তদন্ত শেষ হয়েছে। তারা ওই কর্মীকে বরখাস্ত করেছে।
ব্যাঙ্গালুরুর সংযুক্ত পুলিশ কমিশনার সন্দীপ পাটেল একটি বয়ানে বললেন, যেই ব্যাক্তি প্রকাশ্যে হাঁচি দিয়ে ভাইরাস ছড়ানোর জন্য মানুষকে উস্কাচ্ছিল, তাঁকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আরও বক্তব্য, এই মুহূর্তে, তারাও সোশ্যাল মিডিয়ায় নজর রাখছেন। কোন রকম উস্কানীমূলক পোস্ট দেখলেই, সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত যেখানে দেশের কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রতিটি রাজ্য সরকার করোনা মোকাবিলায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে, সেখানে সাধারণ মানুষের এমন নির্বুদ্ধিতা সত্যি কাম্য নয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে ভারতে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০৩৭ এবং মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় বঙ্গে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৩, অর্থাৎ রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৯, মৃত্যু ১। অন্যদিকে গোটা দেশে সম্পূর্ণ লকডাউনে সাধারণ মানুষের যে অপরিসীম অসুবিধা হচ্ছে তার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তার দাবি, এই সময় করোনা মোকাবিলায় সম্পূর্ণ লক ডাউন ছাড়া আর অন্য কোন উপায় ছিল নেই।