আবহাওয়ার ঘটবে পরিবর্তন, সেরকমই আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে বলে জানাল হাওয়া অফিস—
HnExpress ৭ই জুলাই, জয় গুহ, ওয়েদার রিপোর্ট ঃ বর্ষার মরসুম শুরু হতেই এতদিন উত্তরবঙ্গ ভাসছিল। প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল। তিস্তা সহ বিভিন্ন নদী ফুঁসতে শুরু করেছিল। তিস্তায় জারি হয়েছিল হলুদ সতর্কতা। দার্জিলিং, কালিম্পং এর পাহাড়ে ধস নামছিল প্রবল বৃষ্টির কারণে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গে তখন বৃষ্টিই ছিলনা। বরং ছিল ভ্যাপসা গরম। যার জেরে পুরো নাজেহাল হতে হচ্ছিল মানুষকে। কিন্তু সেই আবহাওয়ার ঘটবে পরিবর্তন, সেরকমই আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে বলে জানাল হাওয়া অফিস।
তবে অবশেষে দক্ষিণবঙ্গে গতকাল, শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টি নেমেছে। খুব ভারী বৃষ্টি না হলেও, দফায় দফায় তো বৃষ্টি হচ্ছেই। আকাশ থাকছে প্রধানত মেঘাছন্ন। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের ওপর একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা অবস্থান করছে। সেইসঙ্গে মৌসুমি বায়ুও সক্রিয় রয়েছে। যার জেরেই দক্ষিণবঙ্গে আগামী ২ দিন ভাল রকম বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তা অতিভারী না হলেও বৃষ্টি হবে ভালোই এবং তার পরিমাণ অনেকটাই বাড়বে বলে পূর্বাভাস।
যার কিছুটা রবিবারই টের পেয়েছেন কলকাতার মানুষজন। দক্ষিণবঙ্গ এর কলকাতা সহ প্রায় আশপাশের সব জেলাগুলিতেই আগামী ২ দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আনলক পর্বে শহর কলকাতা এখন যথেষ্ট সচল। করোনা বাড়লেও নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে মানুষ কাজে নেমে পড়েছেন। আজ সোমবার সপ্তাহের প্রথমটাই হল কাজের দিন। ফলে এইদিন খুব বেশি বৃষ্টি হলে মুশকিল বলেই মনে করছেন শহরবাসীরা। এমনিতেই যানবাহন এখনও সহজলভ্য অবস্থায় আসেনি। তারমধ্যে বৃষ্টির পরিস্থিতি আরও ঘোরাল করতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপ। তার ফলে প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্প ঢুকছে বাংলার অভিমুখে। ফলে ফের দক্ষিণবঙ্গের বুকে তুমুল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসের সুত্র অনুযায়ী, এখন সক্রিয় রয়েছে মৌসুমী বায়ু। আগামী ৪৮ ঘন্টা দক্ষিণবঙ্গে রয়েছে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুরের মত জেলাগুলিতে ভারিবৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস।
মৌসুমী অক্ষরেখা সক্রিয়। গোয়ালিয়র, রাঁচি, জামশেদপুর এরপর হলদিয়া হয়ে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রভাবে জলীয়বাষ্প ঢুকছে। রাজস্থান ও পূর্ব উত্তরপ্রদেশে রয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে পশ্চিম মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে মূলত অন্ধ্র ও ওড়িশা উপকূলে।কলকাতায় আজ ছিল আংশিক মেঘলা আকাশ। কখনো পুরোপুরি মেঘলা আকাশ। বজ্রবিদ্যুৎ সহ দু-এক পশলা বৃষ্টির পূর্বাভাস।
বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বজায় থাকবে। কলকাতায় আজ সকালে তাপমাত্রা ছিল সর্বনিম্ন ২৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। গতকাল বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রাতর পরিমাণ ৬১ থেকে ৯০ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮.৪ মিলিমিটার। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হবে মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও।
সোম ও মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস।দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। সোমবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমানেও। কলকাতা সহ বাকি জেলাগুলিতেও বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস। চলতি সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও বজ্রপাতের এর সম্ভাবনা বাড়বে।