কালীপুজোয় মাটির প্রদীপের কদর কমছে, তবুও আশাবাদী মৃৎশিল্পীরা

0


HnExpress জয়দীপ মৈত্র, দক্ষিণ দিনাজপুর ঃ হাতে গোনা আর মাত্র ১০ দিন, আর তারপরই সারা দেশ সহ আপামর বাঙালী আলোর রোশনাইয়ে ঝলমলিয়ে উঠবে। কারন ৪ঠা নভেম্বর বৃহস্পতিবার ঘোর অমাবস্যায় ধরাধামকে অন্ধকার মুক্ত করে আলোকসজ্জায় সুসজ্জিত করতে মা কালী মর্তে আবির্ভূতা হবেন। কিন্তু যাঁদের মাটির প্রদীপে ঝলমল করে বা করেছে উৎসবের আঙিনা, সেই মৃৎশিল্পীদের ঘরেই এখন অন্ধকার। কারণ, বাজারে চিনা বাল্ব ও নানান বাহারি আলোর টুনি বাল্বের প্রচলনের জেরে কালীপুজোয় মাটির প্রদীপের কদর কমে গেছে অনেকটাই।

আর তার জায়গায় সৌজন্যতা রাখতে বৈদ্যুতিক মোমবাতি, টুনি লাইট প্রভৃতি এসে গেছে বাজারে।
আগে কালীপুজো এলেই ঘর আলো করতে মাটির প্রদীপের চাহিদাই থাকত বেশি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে গৃহস্থরা ঝুঁকেছেন তুলনায় সস্তা এবং বাহারি বৈদ্যুতিক আলোর দিকে। এই পরিস্থিতিতে কালী পুজোর সময়ে দুঃশ্চিন্তার মুখে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমোররা। ফলে মাটির প্রদীপের কদর কমতে থাকায় এই কাজ ছেড়ে অনেকেই এখন অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন।

আলোর উৎসব তথা দীপাবলীতে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে মাটির প্রদীপের আলো। তবে প্রদীপের চাহিদা কমলেও হাল ছাড়েননি জেলার অনেক মৃৎশিল্পীরা। সারা রাজ্য জুড়েই মৃৎশিল্পীরা পুজোর নানান উপকরণের সঙ্গে মাটিজাত প্রদীপ তৈরি করে আসছেন বংশ পরম্পরায়। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতি বাজারে চলে আসায় প্রাচীন সেই মাটির প্রদীপ হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু বাজারে সেই প্রদীপের কম চাহিদা থাকায় প্রায় বন্ধের মুখে এই মৃৎশিল্প।

জেলার বিভিন্ন গ্রামের বহু কুমোর পরিবার আগে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল, এখন সেটা কমে গুটিকয়েক পরিবারে এসে দাঁড়িয়েছে। মৃৎশিল্পীরা দীপাবলিকে সামনে রেখে ব্যস্ত নানা ধরনের প্রদীপ তৈরি করতে। তবে বেশ কিছু মৃৎশিল্পীর গলায় আক্ষেপের সুর স্পষ্ট। তাঁরা বলেন, আজকালকার ডিজিটাল যুগে যে হারে চায়না লাইট, টুনি বাল্ব ও নানা ধরনে এলইডি লাইট এসেছে সেই তুলনায় হাতে গড়া মাটির প্রদীপের ব্যবহার ও বিক্রয় কমেছে, কমেছে তার কদরও।

তুলনামূলক লাভ না হলেও কুমোরদের আশা এই বছর তাঁরা কিছুটা লাভের মুখ দেখবেন। তাঁরা আরও বলেন, বর্তমানে মাটি ও খড়ির দামও বেড়েছে। কিন্তু প্রদীপের দাম বাড়ছে না। যাতে কোনও রকম খাওয়া খরচটা ওঠে তাই এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন তাঁরা। যদিও আগামী দিনে মাটির প্রদীপের চাহিদা বাড়বে বলেই এখনও আশাবাদী জেলার মৃৎশিল্পীরা।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply