৪৮ ঘন্টা বনধের মিশ্র প্রভাব সর্বত্রই

0


HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, কলকাতা ঃ এবার লকডাউনের জেরে বনধ নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সারা দেশ ব্যাপী ৪৮ ঘন্টার সাধারণ বনধের ডাক দিয়েছে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ ফোরাম। বনধ সফল করার জন্য যৌথ ফোরাম গুলি কেন্দ্রের ‘শ্রমিক বিরোধী, কৃষক বিরোধী, মানুষ বিরোধী এবং দেশবিরোধী নীতির’ বিরুদ্ধে মানুষকে প্রতিবাদে নামার আর্জি জানিয়েছে। তাদের দাবী এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডে (ইপিএফ) সুদের হার ৮.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮.১ শতাংশ করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ, কেরোসিন, পেট্রল, ডিজেল, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে মধ্যবিত্তকে ক্রমশ নুইয়ে দেওয়া হচ্ছে। সোজাসাপ্টা ভাবে বললে কর্মীদের সঞ্চয়ের উপর কোপ মারছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। সূত্রের খবর থেকে জানা যায়, ব্যাঙ্কিং, বিমা ও আর্থিক ক্ষেত্রের বিভিন্ন সংগঠন গুলির সাথে কয়লা, লোহা, টেলিকম, তেল, ডাক, আয়কর, রেল, প্রতিরক্ষা এবং তামা ক্ষেত্রের সংগঠনও ধর্মঘটে যোগ দেয়।



দুই দিন ব্যাপি এই ধর্মঘটে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির যৌথ ফোরামের এআইসিইউ, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি, এইচএমএম, সিটু, এআইইউটিইউসি, টিইউসিসি, এআইসিসিটিইউ, এলএফপি, সিপিআইএমএল এবং ইউটিইউসি-সহ রাজ্য স্তরেের বিভিন্ন ইউনিয়নকেও সেই ফোরামের তরফে বনধ সমর্থন করার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। ২৮শে মার্চ কলকাতার এন্টালিতে ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল করলেন বাম নেতা মহম্মদ সেলিম, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মনোজ ভট্টাচার্য, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এর মত নেতৃত্ব।

মিছিলটি এসএন ব্যানার্জি রোড হয়ে ধর্মতলা পর্যন্ত যায়। এই দিন রায়গঞ্জের ঘড়িমোড়ে বামেদের মিছিল আটকায় রাজ্য পুলিশ। সেই সময়ে আইএনটিটিইউসি সমর্থকদের একটি মিছিল চলে আসে ঘটনাস্থলে। দুই মিছিল থেকে চলতে থাকে স্লোগান। পুলিশ দু’টি মিছিলকে ফিরে যেতে বাধ্য করে। উত্তেজনা থাকলেও পরিস্থিতি খুব তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। রাজ্য সরকার বনধের দিন বিশেষ নির্দেশিকা জারি করে, বনধের দিন সরকারি অফিস, বেসরকারি অফিস, সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসে হাজিরা বাধ্যতামূলক।

উপযুক্ত কারণ ছাড়া কামাই করলে কাটা যাবে বেতন। অন্যদিকে দুপুর প্রায় ১টা নাগাত ঝাড়গ্রাম জেলার বেশির ভাগ জায়গায় বনধের প্রভাব পড়ে। ব্যাংক ও পোস্ট অফিসের সাথে ঝাড়গ্রাম, বেলপাহাড়ি, শিলদা, বিনপুর, রামগড়, লোধাশুলি এলাকার দোকান-বাজার প্রায় বন্ধ ছিল। ফলতঃ সাধারণ মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয় বনধের প্রথম দিনেই। কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক এসে দোকান-বাজার খোলার চেষ্টা করলেও কাজের কাজ হয়নি। এদিন শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় ডায়মন্ডহারবার লাইনের হোটর স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করেন বনধ সমর্থনকারীরা।

সকালে যাদবপুর স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করেন বনধ সমর্থনকারীরা। বেপরোয়া ভাবে হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে রেললাইন ও ট্রেনের উপরে উঠে পরে সমর্থনকারীরা। বাসের চাকার হাওয়া বের করে দেওয়া এবং বাস ভাঙচুর করে বনধ সমর্থনকারীরা। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সাঁতরাগাছি ব্রিজের সামনে রাস্তা অবরোধ করেন বন্ধ সমর্থকরা। রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “ধর্মঘট সফল।

সারা বাংলার মানুষ বনধের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছেন। শাসকের চোখ রাঙানির জন্যই অফিস কাছারিতে মানুষ যেতে বাধ্য হয়েছেন। যেভাবে পেট্রোল, ডিজেলের দাম বাড়ছে তাতে সব মানুষ একত্রিত হয়ে পথে নেমেছেন। ধর্মঘট ভাঙার জন্য এই বাংলায় যেভাবে পুলিশকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে সেটা সারা দেশের অন্য কোনও রাজ্যে হয়নি। তিনি পাহাড়ে বসে আছেন ঠান্ডায়, আর এখানে পুলিশকে লেলিয়ে দিয়েছেন”।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply