পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয় যাকে সেই আমাজনের জঙ্গল পুড়ছে ভয়াবহ দাবানলে

0

HnExpress ওয়েবডেক্স নিউজ, সমাজ সচেতনতা ঃ বিগত তিন সপ্তাহ ধরে ভয়াবহ দাবানলে আমাজনের জঙ্গল পুড়ছে, পৃথিবীর ফুসফুস বা সবুজ সাগর বলা হয় যাকে, যে জঙ্গল পৃথিবীর ২০% অক্সিজেন প্রদান করে, যার কারনে পৃথিবীর ১০% Bio Diversity সম্পন্ন হয়, এর কারনেই পৃথিবীর ক্লাইমেট অনেকাংশে নির্ভর করে, আজ সেই জঙ্গল জ্বলছে দাউ দাউ করে। জ্বলে পুড়ে খাক হচ্ছে গাছপালা, জীব-জন্তু। সুত্রের খবর অনুযায়ী, এই আগুন নেভাতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না ব্রাজিল সরকারের পক্ষ থেকে। অথচ সেই ব্রাজিলেরই অর্ধেক আকাশ ঢেকে গেছে সেই বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায়। আমাজন থেকে ১৭০০ মেইল দূরে সাঁও পাওলোতে নেমে এসেছে সেই বিষাক্ত ধোঁয়ার গাঢ় অন্ধকার।

এই দাবানল এর লেলিহান শিখা এতই বীভৎস যে স্পেস বা মহাকাশ থেকে এই ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে, ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে যে, প্রায় ১৭০০ কিমি দূরে পর্যন্ত ছাই উড়ে যাচ্ছে। সাথে ধোঁয়ার তেজ এতটাই বেশী যে তা দেখা যাচ্ছে মহাকাশের INPE থেকেও! এই মুহুর্তে প্রায় ২০০০ মাইল জুড়ে ৭৩০০০ টা স্থান দাউদাউ করে পুড়ছে। হ্যাঁ, ঠিকই পড়লেন। ৭৩০০০ টা! ধোঁয়া ছড়িয়েছে প্রায় ১.২ মিলিয়ান মাইল জুড়ে, যার আউটকাম হতে চলেছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে অধিবাসীদের ক্যান্সার বা DNA ড্যামেজ। বাতাসে কার্বনের পরিমাণ মারাত্মক রকম বেড়ে যাওয়ায় নিঃশ্বাস নেওয়াও কষ্টকর হয়ে পরেছে। ফলে শহরের মানুষ তাদের ঘর বাড়ি ছাড়তেও বাধ্য হচ্ছে। অথচ এতসবের পরেও ব্রাজিল সরকার নিশ্চুপ, নিঃস্পৃহ।

গত দশমাসে গাছকাটার হার বেড়েছে ২০%,শুধু গতমাসেই তা বেড়ে হয়েছে ৮৮% এবং এই মুহুর্তে প্রতিমিনিটে একেকটা ফুটবল মাঠের আকারের জমি জ্বলে পুড়ে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে, নিমেষে। প্রতিবছর বৃক্ষচ্ছেদনের কারণে লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে প্রায় ৫০০০-৬০০০টি প্রজাতি। চাষাবাদ, কাঠ আর খনিজখননের লোভে দ্রুত বিনষ্ট হতে থাকা, প্রায় ১০ মিলিয়ান প্রজাতির বাসস্থান এই অরণ্য। যার প্রতিনিয়ত দৈন্য দশা খুব তাড়াতাড়িই সেই ক্রিটিক্যাল পয়েন্টের দিকে অগ্রগামী, যার পরে এই সবুজকে পুনরুদ্ধার করা আর হয়েতো সম্ভব হবে না।

তবে ক্ষীণ হলেও আশার আলো যে- গত বৃহস্পতিবার খানিকটা বৃষ্টি হয়েছে আমাজনে। পাশাপাশি ১৫০০ লিটার জলবাহী সুপার ট্যাঙ্কার এসেছে, যেটা আকাশ থেকে আগুন নেভানোর কাজে অনেকটাই সাহায্য করবে। ৩৫০ টি এথনিক গ্রুপের একমাত্র ঠিকানা, সহায় সম্বল এই আমাজনের জঙ্গল। কিন্তু আজ তারাও কয়েক হাজার পশুপাখি, কীটপতঙ্গের সাথে এই লেলিহান দাবালনের আগুনে পুড়ে তন্দুরি হয়ে যাচ্ছে। বড় অসহায় ভাবে দাউ দাউ করে জ্বলছে পৃথিবীর ফুসফুস।

যেকোনো রকমের খবর ও বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ঃ ৮২৪০৯০২৪৪৫।

এমতাবস্থায় সকল মানবজাতি যেভাবে সাহায্য করতে পারে তা নিম্নরূপ —

১) Rainforest Action Network-এ ডোনেট করুন।

২)Rainforest Trust-এ ডোনেট করুন। এঁরা ১৯৮৮ থেকে আমাজন রক্ষার্থে একরের পর একর জায়গা কিনে নেওয়ার কাজ করে চলেছেন। সারা পৃথিবী থেকে অর্থসাহায্য সংগ্রহ করে এঁরা এখন অবধি প্রায় ২৩ মিলিয়ন একর জায়গা কিনে নিয়েছেন।

৩) The World Wide Fund for Nature আমাজনসহ সারা পৃথিবীতে গাছপালা ও প্রাণিসম্পদ সংরক্ষণের কাজ করে চলেছে, পারলে ডোনেট করুন।

৪) পারলে Amazon Watch বা Amazon Conservation Team-এ ডোনেট করুন। এঁরা বছরের পর বছর পৃথিবীর ফুসফুসকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

নিজেদের বেঁচে থাকার তাগিদেই না হয় এই কাজটি করুন। প্রচন্ড তেষ্টা পেলে এক গ্লাস জল পাওয়ার জন্য করুন।

তথ্যসূত্র ও চিত্র ঃ সোস্যাল মিডিয়া (দিপেন্দু ঘোষ)।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply