সাহসিকতা দেখিয়েও ডিফেন্সে শেষের গল্প
HnExpress অভিষেক চ্যাটার্জি, কলকাতা ঃ সব জল্পনার অন্তিম লগ্নে এসে অবশেষে মুক্তির স্বাদ পেল স্বস্তিকা ফিল্ম প্রোডাকশন নিবেদিত পরিচালক জিৎ চক্রবর্তীর প্রথম ছবি ‘শেষের গল্প’। পরিচালকের প্রথম ছবি হিসাবে ভাবনার যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে ছবির নাম ‘শেষের গল্প’ রেখে, তা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু সাহসিকতা দেখিয়েও সাহসিকতার বৃত্তটা সেই একই জায়গায় গিয়ে আবার থমকে গেল।
অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই অমর কাল্পনিক চরিত্র অমিত রে ও লাবণ্য দত্ত এত দিন পর বাস্তবের মাটিতে এসে বা বলা যায় যৌবনের না মিলন হওয়া যুগলের প্রৌঢ়ত্বে এসেও মিলন তেমন ফলপ্রসূ হল না। পরিচালক জিৎ চক্রবর্তী রবীন্দ্রনাথের ধাঁচ ছেড়ে বেরোতে গিয়েও আবার যেন সেই বাঁধা পড়লেন গিয়ে রবীন্দ্রনাথেই।
অন্যদিকে গল্পের ক্ষেত্রে বলা যায়, একদিকে এই ছবিতে বলা হয়েছে এই ছবি ‘শেষের কবিতা’-র না বলা অংশ, আবার অপরদিকে দেখা যাচ্ছে অমিত রে, লিসি বা লাবণ্য সকলেই স্যোশাল মিডিয়ার যুগে অবস্থান করছেন। সেই জায়গা থেকে পরিচালক ছবির মধ্যে ঠিক কোন সময়টাকে ধরতে চেয়েছেন, সেটা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।
যেকোনো রকমের খবর ও বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন।
প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘শেষের কবিতা’ প্রকাশ করেন ১৯২৯ সালে। সেই সময় যদি অমিত ব্যারিস্টার হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে সেই অমিতের বা লাবণ্যের বর্তমান সময়ে অস্তিত্বের সংকট যে ঘটবেই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে পুরোনো প্রেমও যে ভাতে বাড়ে সেটাই এই ছবির মূল ইউএসপি।
সৌমিত্র – মমতার স্নিগ্ধ জুটি সিনেমায় এক অন্য মাত্রা আনলেও রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের মতো কোথাও শেষ হয়েও, যেন হল না শেষ। আরও অনেক না বলা কথা, আরও অনেক কিছু যেন বাকি রয়ে গেল। তবে সমান্তরালে আকাশ কুহুুর আলাপ থেকে তাদের সম্পর্কটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বেশ খানিকটা ধোঁয়াশায় রয়ে গেল। অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্ব নিয়েই যবনিকা পতন ঘটল তাদের একালের সম্পর্কের।
এক্ষেত্রে ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রথম দিকে কুহুর জিন্স প্যান্ট পড়া অভিব্যক্তি গুলি পাল্টে যায় ঠিক শাড়ি পড়ার পর থেকেই, আর সেই সময়ে থেকেই তার মনের সূক্ষ অনুভূতিগুলো বেশি করে প্রকাশ পেতে শুরু করে। তবে এটা মানতেই হবে যে, এই চারটি বিশেষ চরিত্র ছাড়াও যে চরিত্রগুলো নজর কাড়বে দর্শকদের, তারা হলেন খরাজ মুখার্জী, কৃষ্ণকিশোর মুখার্জী, পল্লবী চ্যাটার্জি ও কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়।
তাই এটা বলাই বাহুল্য যে আবারও সোনালী পর্দায় অমিত লাবণ্যের পুনঃ প্রেমকে এক অনন্য স্বাদে চেখে দেখতে হলে একবার অন্তত হলমুখী হতেই হবে। যে চিত্রনাট্যের মধ্যে মিশে আছে অল্পসল্প সাহসিকতার সাথে বেশ অনেকটাই যত্ন।