রবিবারের বৈঠকী আড্ডা ঃ প্রথম ভাগ

0

HnExpress একটু অন্যরকম, শুভাদিত‍্য ঘোষ দস্তিদার ঃ অনেকদিন বাদে আজ কলেজস্ট্রিট হয়ে প্রেসিডেন্সির দিকে হাঁটছিলাম। প্রেসিডেন্সির সামনে পৌঁছতেই হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল তাঁর কথা। প্রেসিডেন্সি কলেজে সে আমার সহপাঠী ছিল। মাঝারি গড়ন, লম্বা ঘন চুল, পাতলা গোলাপী ঠোটের ফাঁকে সারি সারি ছোট দাঁত। মুখ, চোখ গড়তে ঈশ্বর অনেক সময় না নিলে এমন মুখ তৈরি হয় না। সেই মেয়ে, যে কোনো ছেলের সঙ্গে কথা বলা দূরে থাক তাকিয়েও দেখে না।

অথচ এমনই এক বসন্তের দুপুরে আমি তাকে প্রাণ খুলে হাসতে দেখেছিলাম তার বান্ধবীদের সাথে। আমি তখন কলেজের নির্বাচিত জেনারেল সেক্রেটারি। একদিন সামনে তাকে একা পেয়ে গেলাম। বলছিলাম আমরা একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করছি, আপনি অবশ্যই অংশগ্রহণ করবেন। কী আশ্চর্য, গান, অভিনয় কোনওটাই আমি পারিনা। একটু হেসেই বললাম তবে কি পারেন? আমি কি পারি তা যদি জানতাম! এই কথাটুকু বলেই, সে সেদিন চলে গিয়েছিল। চব্বিশটা বছর অথচ মনে হয় এই তো সেদিন।

যেকোনো রকম বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

আজ রবিবার। আসানসোল বইমেলা। এই বিশেষ বইমেলাতেই আমার লেখা একখানি বই খুব জনপ্রিয় হওয়ায় প্রকাশক আমাকে তাঁর সুসজ্জিত স্টলের সামনে বসিয়ে দিয়েছেন। আমার পাঠক- পাঠিকারা তাঁদের কেনা বইখানি একে একে এগিয়ে দিচ্ছেন অটোগ্ৰাফ নেওয়ার জন্য। হঠাৎই এক ভারী চুলের ছোঁয়ায় মুখ তুলতেই চমকে উঠি। কয়েকজন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে হাসিমুখে। যে আমার দিকে প্রথম বইটা এগিয়ে ধরেছে তাঁর সঙ্গে চব্বিশ বছর আগে দেখা সেই মুখের কোনও পার্থক্য নেই। আমাকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে সে বলে উঠল, স্যার একটা অটোগ্ৰাফ প্লিজ। তোমার নাম? অনন্যা।

কে রেখেছেন? মা। কলেজের অধ্যাপিকা শুনে, খুব সাহস করে আমার সেদিনের সহপাঠীনীর নাম উচ্চারণ করলাম। অনন্যা মাথা নেড়ে বললো, না তো। অনন্যা চলে গেল ধন্যবাদ জানিয়ে। চব্বিশ বছর আগের দেখা একই মুখ, একই চেহারা, যদি চব্বিশ বছর পরে নতুন করে ফিরে আসে, তাহলে সেই নামটা এক হয়ে যাক না— ‘স্মৃতির পাত্রে অনেকদিনের রেখে দেওয়া তারল্যকে জোরে ঝাঁকালে কোন্ টা দামী আর কোন্ টা যে নয়, তার মূল্যায়নে কখনো কখনো একটু আধটু ভুল হয়েই যায় হয়তো!’

এখন থেকে প্রতি রবিবার একটু অন্যরকম অনুভূতির ছোঁয়া পেতে হলে চোখ রাখুন আমাদের “রবিবারের বৈঠকী আড্ডা”র পেজে। চাইলে আপনারও আপনাদের লেখা, আপনাদের চিন্তাভাবনা আমাদের ওয়েব মিডিয়া হাউসে মেল করে পাঠাতে পারেন। যাদের লেখা মনোনীত হবে তাদের লেখা নিয়ে প্রতি বরিবারের এই আড্ডা ঘরে জমিয়ে আড্ডা হবে। গল্প, কাহিনী, কবিতা, রম্যরচনা, সাহিত্যের আপডেট পেতে হলে ক্লিক করুন ‘সাহিত্য ও রম্যরচনা’ বিভাগে।

বিঃদ্রঃ ঃ— লেখা মনোনয়নের দায়িত্ব হাউসের সম্পাদকের। সম্পাদকের মনোনয়ন অনুযায়ী যার লেখা নির্বাচিত হবে শুধুমাত্র তার লেখাই পাবলিশ হবে। ধন্যবাদ, সম্পাদক।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply