রবিবারের বৈঠকী আড্ডা ঃ তৃতীয় ভাগ

0

HnExpress একটু অন্যরকম, শুভাদিত্য ঘোষ দস্তিদার ঃ সোহিনীর চিঠি

শ্রীচরণেষু,
সম্প্রতি আমার স্বামী এলাহাবাদ বদলি হয়েছেন। সম্ভবত আমরা পাটনা হয়েই যাব। যতদূর জানি রাত সাড়ে আটটা নাগাদ আমাদের গাড়ি পাটনা স্টেশন পৌঁছবে। থামবে মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য। আপনি যদি একটি বার স্টেশনে আসেন খুব ভালো লাগবে। অনেক দিন হলো আপনাকে দেখি নি। খুব দেখতে ইচ্ছে করে। আসছেন তো? আশা করি আমাকে ভুলে যাননি একেবারে।

সোহিনী সেনগুপ্ত

হ্যাঁ ঠিকই বলেছো। কিছুই ভুলিনি। অতীতের সেইসব ফেলে আসা দিনগুলো তাদের সমস্ত বর্ণসুষমা নিয়ে আবার যেন ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। বিশেষ করে মনে পড়ছে সেই দিনটির কথা, সেদিন অনেক ইতস্তত করে আশা- আশঙ্কা- উদ্বেল হৃদয়ে তাকে প্রথম প্রণয়- নিবেদন করেছিলাম। মনে বেশ ভয় ভয় ছিল, যদি সে ভুল বুঝে আমার উপর রাগ করে।
দেখা হলে কি বলব তাকে?

এতদিন পর দেখা তাও পাঁচ মিনিটের জন্য। স্টেশনের ভিড়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে কিই বা তাকে বলব? অথচ বলবার মতো কত কথাই মনের মধ্যে সঞ্চিত হয়ে রয়েছে। কিন্তু মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে সমস্ত কথা গুছিয়ে বলব কেমন করে? হয়তো কিছুই বলা হবে না। জীবনে হয়তো তার সঙ্গে আর দেখাও হবে না। সহসা মনে হল, আরে তার স্বামী তো সঙ্গেই থাকবে।
এদিকে নানা ধরনের মানুষ তাদের নানা ধরনের জিনিসপত্র নিয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছে।

ওর প্রিয় চানাচুর আর নীল রঙের গোলাপ নিয়ে আমিও একটু অন্যমনস্ক ভাবেই প্ল্যাটফর্মে পায়চারি করছিলাম। সমস্ত অন্তর জুড়ে একটা বেদনার অনুভূতি ধীরে ধীরে স্পন্দিত হচ্ছে। কতক্ষণে আসবে সেই আকাঙ্ক্ষিত ট্রেনটা? একজন রেলওয়ের কর্মচারী কিছু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, এলাহাবাদগামী ট্রেনটির আসবার আর কত দেরি আছে ভাই?

যেকোনো রকম বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন।

তিনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন খানিকক্ষণ, তারপর বললেন, সে ট্রেন তো আটটা পঁয়তাল্লিশে ছেড়ে চলে গেছে। এখন অন্য ট্রেন আসছে। এখন তো বাজে মশাই সাড়ে ন’টা। সে কি! নিজের হাত ঘড়িটার দিকে তাকালাম। সাড়ে সাতটা বেজে রয়েছে। সহসা মনে হল, আজ সকালে ঘড়িতে দম দেওয়া হয়নি। সোহিনীর চিঠি পেয়ে এতটাই অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম যে, ঘড়িতে দম দিতেই ভুলে গেছিলাম। বিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম বহুক্ষণ।

এখন থেকে প্রতি রবিবার একটু অন্যরকম অনুভূতির ছোঁয়া পেতে হলে চোখ রাখুন আমাদের “রবিবারের বৈঠকী আড্ডা”র পেজে। চাইলে আপনারও আপনাদের লেখা, আপনাদের চিন্তাভাবনা আমাদের ওয়েব মিডিয়া হাউসে মেল করে পাঠাতে পারেন। যাদের লেখা মনোনীত হবে তাদের লেখা নিয়ে প্রতি বরিবারের এই আড্ডা ঘরে জমিয়ে আড্ডা হবে। গল্প, কাহিনী, কবিতা, রম্যরচনা, সাহিত্যের আপডেট পেতে হলে ক্লিক করুন ‘সাহিত্য ও রম্যরচনা’ বিভাগে।

বিঃদ্রঃ ঃ— লেখা মনোনয়নের দায়িত্ব হাউসের সম্পাদকের। সম্পাদকের মনোনয়ন অনুযায়ী যার লেখা নির্বাচিত হবে শুধুমাত্র তার লেখাই পাবলিশ হবে। ধন্যবাদ, সম্পাদক।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply