সহবাস করে এক অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে প্রত্যাখ্যান, চার্জশিট দিয়েই ৯ দিনের মধ্যেই সশ্রম কারাদণ্ড সহ যাবজ্জীবন অপরাধীর—
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ঃ সম্প্রতি উল্টোডাঙা থানায় এসে একজন মহিলা একটি গুরুতর অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, তাঁর ১৭ বছরের নাবালিকা কিশোরীর সঙ্গে একাধিকবার সহবাস করেছে বিশ্বজিৎ দে নামের এক যুবক। ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়ে সেই মেয়েটি। এই কথা জানার পরেই তার সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বিশ্বজিৎ। অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটির কোনও দায়িত্ব নিতেই সে আজ রাজি নয়।
অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তে নেমে পড়ে উল্টোডাঙা থানার সাব ইনস্পেকটর আরশাদ আলির নেতৃত্বে এক বিশেষ টিম। পুলিশ সুত্রের খবর, একটি মোবাইল নম্বর বাদে বিশ্বজিৎ সম্পর্কে আর বিশেষ কোনও তথ্য জানাতে পারেননি সেই মহিলা। তিনি শুধু জানতেন, বিশ্বজিতের বাড়ি রাজারহাট এলাকায়। কিশোরী মেয়েটিকে নিজের প্রকৃত ঠিকানা কোনও দিন জানায়নি বিশ্বজিৎ। এমনকি, বিশ্বজিতের কোনও ছবিও ছিল না সেই মহিলা বা তাঁর মেয়ের কাছে।
ফলে তথ্য বেশি না থাকায় প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হয়। জানা গেছে, দ্রুতই বিশ্বজিতের একটি ছবি হাতে আসে কেসের তদন্তকারী অফিসারদের। সেই ছবি-সমেত খবর দেওয়া হয় নানান লোকাল গোপন সোর্সদের। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিশ্বজিতের আসল ঠিকানারও সন্ধান মেলে। রাত ২.০৫-এ রাজারহাটের বাড়ি থেকে বিশ্বজিৎকে গ্রেপ্তার করে উল্টোডাঙা থানার বিশেষ টিম। অভিযোগ পাওয়ার পর দেড় ঘন্টাও কাটেনি তখন।
এদিন বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে পকসো আইনে (Protection of Children from Sexual Offences Act) মামলা রুজু করা হয়। সাথে মেয়েটির মেডিক্যাল রিপোর্ট ও অন্যান্য তথ্য প্রমাণ-সহ চার্জশিট জমা দেওয়া হয় মাত্র ১ দিনের মধ্যেই। হ্যাঁ, মাত্রা একদিনের মধ্যেই! আর মাত্র ৬ দিনের ভিতরে শেষ হয় বিচারের প্রক্রিয়াও। আর সেই মামলারই রায় বেড়ায় ২রা অগস্ট। এই ঘৃণা কাজের জন্য বিশ্বজিতের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন মাননীয় বিচারক।
আরও জানা গেছে যে, সঙ্গে ২ লক্ষ টাকা জরিমানাও দিতে হবে অপরাধের খেসারত হিসেবে। তবে এই জরিমানার ৯০ শতাংশ টাকাই ক্ষতিপূরণ বাবদ যাবে মেয়েটির কাছে। এই কেসের তদন্তকারী অফিসার উল্টোডাঙা থানার সাব ইনস্পেকটর আরশাদ আলির অক্লান্ত পরিশ্রম ও তৎপরতায় অভিযোগ পাওয়ার মাত্র ৯ দিনের মধ্যেই শাস্তি সুনিশ্চিত হয়েছে অপরাধীর। এটা সত্যিই অকল্পনীয়। পুলিশের মানবিক প্রচেষ্টায় এক নিরিহ মেয়ে তাঁর ধর্ষণের আসামির শাস্তির লড়াইয়ে বিজয়ী হলো।
তথ্যসূত্র ও চিত্র ঃ কলকাতা পুলিশ ফাইল।