উৎসবের মরশুমে অগ্নিমূল্যের আকাশে আলু-পেঁয়াজ, ঝাঁজে চোখে সর্ষে ফুল আমজনতার

0

HnExpress ৬ই নভেম্বর, অরুণ কুমার, কলকাতা ঃ রাজ্য জুড়ে চলছে উৎসবের মরশুম, যার রেশ এখনো শেষ হয়নি। ইতিমধ্যে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদীয়ার পরেই মা লক্ষ্মীর আরাধনাও শেষ। এবারে পালা শক্তির আরাধনা করার। সামনেই আসছে আলোর উৎসব দীপাবলি। আর তারপরেই বাঙালির ঘরে ঘরে পালিত হবে ভাইফোঁটা। তাই উৎসবের সময় একটু বেশি করেই বাজারমুখী হচ্ছেন খাদ্যপ্রিয় বাঙালি। কিন্তু বাজারে শাক-সবজি থেকে শুরু করে ডিম, মাছ, মাংস সবকিছুর দামই আকাশছোঁয়া। ফলে উৎসবের মরশুমে অগ্নিমূল্যের আকাশে আলু-পেঁয়াজ, ঝাঁজে চোখে সর্ষে ফুল আর মাথায় হাত আমজনতার

আর তাদের সবাইকে ছাপিয়ে আকাশ ছুয়েছে অগ্নিমূল্য আলু-পেঁয়াজ। তবে এখনই বদলাবে না পরিস্থিতি, এমনটাই মনে করছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার ডিরেক্টোরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড বা ডিজিএফটি’র জারি করা একটি বিবৃতিতে জানা গিয়েছে, আগামী ৩১শে জানুয়ারি, ২০২১ পর্যন্ত কোনও লাইসেন্স ছাড়াই ভুটান থেকে পর্যাপ্ত আলু আমদানি করা যাবে৷ সাধারণত আলু আমদানি করতে গেলে ডিজিএফটি-এর থেকেই অনুমোদন নিতে হয়৷ কারণ এ দেশে আলুর আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই আগামী বছরের ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টন আলু আমদানি করবে ভারত সরকার৷ জোগান বাড়লেই দ্রুত আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে এদিন আশা প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ একে উৎসবের মরশুম, তার উপর বিহারে চলছে ভোট৷ এই পরিস্থিতিতে আলু-পেঁয়াজের অগ্নিমূল্য কেন্দ্রেরও মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

অন্যদিকে, পেঁয়াজের দামও খুঁচরো বাজারে কেজি প্রতি ১০০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে৷ আলুর থেকেও মহার্ঘ হয়ে দাঁড়িয়েছে পেঁয়াজ৷ দাম কমাতে আফগানিস্তান থেকে ১ লক্ষ টন পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ দেওয়ালির আগেই আরও ২৭০০০ টন পেঁয়াজ দেশে এসে পৌঁছবে বলে জানান গোয়েল৷ কিন্তু তার মধ্যেও হু হু করে বেড়েই চলেছে রান্না ঘরের মূল উপাদান আলু আর পেঁয়াজের দাম। জ্যোতি আলু, যা কিছুদিন আগেও ছিল প্রতি কেজি ৩৫ টাকা, তা এখন ৪০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। চন্দ্রমুখী আলু ৪৫ টাকা প্রতি কেজি।

রাজ্যে আলুর ঘাটতি না থাকলেও এত বেশি দাম কেন, তা নিয়ে চিন্তায় সবাই। তবে নতুন আলু না ওঠা অবধি পরিস্থিতি একই থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে, পেঁয়াজের দাম ৮০-১০০ টাকা প্রতি কেজি। অর্থাৎ পেঁয়াজের ঝাঁঝে চোখে জল মধ্যবিত্ত থেকে সাধারণ মানুষের। যদিও ইতিমধ্যেই দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ আলুর দাম আম জনতার নাগালে আনতেও এবার একই পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য৷ অপরদিকে বাজারে জোগান বাড়াতে ভুটান থেকে আলু আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আলু-পেঁয়াজের দাম অগ্নিমূল্য আর এই ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতি আপাতত খুব একটা বদলাবে না বলেই মনে করছে ক্রেতারা। বেশ কিছু ক্রেতাদের ব্যাক্তিগত মতামত যে, এবারে রান্না ঘরের মূল উপাদান আলু-পেঁয়াজ খাওয়া তো দূর অস্ত, কেনাই বয়কট করতে হবে। সামনেই শীতের মরশুম, ফলত আরও অনেক ধরনের শীতের সব্জির দিকে ঝুকবে আম জনতা। অগ্নিমূল্যের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে মিটিং, মিছিল, ধর্মঘট বা পথ অবরোধ না করে এবারে নতুন পন্থায় আলু-পেঁয়াজ বয়কটের ডাক দিতে রাজি মধ্যবিত্ত থেকে আমজনতা।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply