সংগীত শিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর নামে ও সাংস্কৃতিক শব্দের অপব্যবহারে হতবাক বাংলার রাজনৈতিক এবং অ-রাজনৈতিক মহল

0

HnExpress ৭ই নভেম্বর, অরুণ কুমার, ওয়েবডেস্ক নিউজ ঃ শুক্রবার হঠাৎ করে সোশ্যাল মিডিয়ার একটি পোস্টকে ঘিরে তুমুল হইচই শুরু হয় নেট দুনিয়ায়। একটার পর একটা ভাইরাল হতে থাকে ছবি, যাকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের অপসাংস্কৃতিক শব্দের প্রয়োগ হতে থাকে বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর নামে। এ বিষয়ে বলতে হয় যে অমিত শাহের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকারের পরপরই পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীকে “বেইমান” বলে সম্বোধন করে কিছু ছবি শেয়ার করা হয় তৃণমূল সমর্থকদের দ্বারা পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজে।

এই পোস্টে একটার পর একটা ছবি শেয়ার হওয়ায় উত্তাল হয়ে ওঠে সারা রাজ্য। জানা গিয়েছে যে, পূর্ব–নির্ধারিত কর্মসূচি মেনেই গতকাল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো দেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখান থেকে তিনি যান বিখ্যাত সংগীতশিল্পী পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর বাড়িতে। স্বাভাবিক নিয়ম অনুসারেই কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অমিত শাহকে স্বাগত জানান পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী ও তার স্ত্রী। তারপর পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রুতিনন্দনে পৌঁছান অমিত শাহ।

তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। আর এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে রীতিমত ছবি দিয়ে মিম বানিয়ে তাঁকে “বেইমান” আখ্যা দেয়। আর এরপর এই ভাইরাল হওয়া ছবি দেখে নেট দুনিয়ায় সত্যি অনেকেই তাদের হতবাক আবার কথা ব্যক্ত করেছেন। অন্যদিকে শিল্পী অজয় চক্রবর্তী নিজে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার পর বলেছেন, “আমার একটাই পার্টি, আর সেটা হলো মিউজিক পার্টি”।

সেই মানুষকেই বেইমান বলল মমতার তৃণমূলের একটি অংশ। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নিতান্তই সৌজন্য সাক্ষাৎ। যার সঙ্গে রাজনীতির কোন সম্পর্কই নেই। অজয় চক্রবর্তী বললেন, “এত বড় মাপের মানুষকে আমন্ত্রণ করার সাহস তাঁর নেই। অমিত শাহ নিজে থেকেই তাঁর বাড়িতে এসেছেন, আর সে কারণে তিনি গর্বিত। আমার একটাই পার্টি, মিউজিক পার্টি। আমার বিজেপি, টিএমসি, সিপিএম, কেউ নেই।” সেই মানুষকে কি করে তৃণমূলের একটি স্বঘোষিত পেজ থেকে বেইমান বলে অপমান করতে পারল তা নিয়ে হতবাক বাংলার রাজনৈতিক-অ-রাজনৈতিক সব মহলই।

তবে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি কেউই। এদিন, টালিগঞ্জের গলফ ক্লাব রোডে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর সংগীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শ্রুতিনন্দনে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপরেই, তৃণমূল এর একটি সোশ্যাল মিডিয়া পেজে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর ছবি দিয়ে তাঁকে বেইমান বলে আখ্যা দেয় তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। সেই ছবি ইতিমধ্যেই তৃণমূলের সমর্থকদের সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেন এসেছিলেন?‌ প্রশ্ন করা হয় অজয় চক্রবর্তীকে।

উত্তরে পণ্ডিতজি সরাসরি জানিয়ে দেন, “‌আমি রাজনীতির মানুষ নই। আমি সংগীত জগতের মানুষ। এখানে কোনও রাজনীতির যোগ নেই। এখানে প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামও এসেছিলেন”।‌ কিন্তু হঠাৎ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আগমন কেন?‌ এই প্রশ্ন শুনেই পণ্ডিতজির সরল প্রতিক্রিয়া, “একজন বিশিষ্ট বড়মাপের মানুষ, আমার বাড়িতে আসছেন, এটা জেনেই আমি খুব খুশি। তাছাড়া আমি তো আমন্ত্রণ করিনি। আসতে চেয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই। আমরা তাঁকে স্বাগত জানিয়েছি, ওটা আমাদের কর্তব্য”।

দেশের একজন মন্ত্রী যদি কোনো নাগরিকের বাড়িতে যায়, তবে কি তাঁকে সম্মান না জানিয়ে বের করে দিতে হয়? এমনই হাজার প্রশ্ন উঠে আসছে নেটিজেনদের মনে। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শুধু রাজ্যেই নয়, দেশের বিভিন্ন অংশে অদ্ভুত প্রভাব বিস্তার করেছে। একজন বিশ্ব বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পীর নামে এ ধরনের পোস্টকে ঘিরে তাঁর গুণমুগ্ধ শ্রোতারা স্বভাবতই খুশি নয় তা নেটদুনিয়ার বিভিন্ন অভিমতেই প্রতিফলন ঘটেছে। এখন দেখার বিষয়, আগামী দিনে এ ঘটনায় রাজ্যের শাসক দল তাদের কি প্রতিক্রিয়া দেয়। আর তা জানতে হলে আমাদের অপেক্ষা করতেই হবে।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply