দীপাবলির দিনে শ্রমিক এবং মালিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে গেল ডুয়ার্সের চা বাগান, অসহায় ২০০০ শ্রমিক পরিবার
HnExpress ১৫ই নভেম্বর, অরুণ কুমার, ডুয়ার্স ঃ দীপাবলির আলো জ্বলতে না জ্বলতেই বন্ধ হয়ে গেল ডুয়ার্সের বিন্নাগুড়ির চা বাগান। বাগানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। গতকাল শনিবার সকালে বন্ধ হয়ে গেল ডুয়ার্সের শতাব্দী প্রাচীন বিন্নাগুড়ি চা বাগান। সুত্রের খবরে জানা গিয়েছে শ্রমিক এবং মালিক অসন্তোষের জেরে বিন্নাগুড়ি চা বাগান কর্তৃপক্ষ শুক্রবার রাতে চা বাগানে লকআউট নোটিস টানিয়ে বাগান ছেড়ে চলে যায়।
আজ সকালে কাজে গিয়ে শ্রমিকরা দেখতে পায় বাগানে সাসপেনশন ওফ ওয়ার্কের নোটিশ জারি করা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রায় দুই হাজার চা শ্রমিকের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্ন চিহ্নের মুখে।
বাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রমিকদের কিছু দাবী দাওয়া নিয়েই বাগানে গত মঙ্গলবার থেকে জয়েন্ট ফোরামের গেট মিটিং চলছিল। এদিকে মঙ্গলবার বাগানের শ্রমিকরা কাজেও যোগ দেননি বলে জানা গেছে। তারপর দু-তিন ধরে সকালের দিকে গেট মিটিং হয়।
কিন্তু শ্রমিকরা কিছু বুঝতে পারেননি। শুক্রবার বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মজুরীও দেয়। তাই শনিবার সকালে বাগানে কর্মবিরতি ঘোষণার কথা জানতে পেরে শ্রমিকদের মধ্যে মানসিক হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। এদিন সকালে বাগানের সবকটি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা একই সুরে বলেন, শ্রমিকদের দাবী দাওয়া থাকতেই পারে। কিন্তু তার জন্য এভাবে বাগান বন্ধ করে মালিক পক্ষের চলে যাওয়া মোটেও ঠিক হয়নি।
শ্রমিকরা সকলেই চাইছেন শীঘ্রই আগে বাগান খুলুক, তারপর এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। বিন্নাগুড়ি চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার নীরেন্দ্রনাথ মিত্র বলেছেন, ‘আমি এই চা বাগানে ২৩ বছর ধরে যুক্ত রয়েছি। বাগানের শ্রমিকদের নিজের পরিবারের মত দেখি। বিন্নাগুড়ির চা বাগানের ডিসিপ্লিন, প্রোডাক্ট যা বাগানের বিভিন্ন মিটিংয়ে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়। কিন্তু গত চারদিন ধরে একটি শ্রমিক সংগঠন শ্রমিকদেরকে গেট মিটিং করে বাগানের কাজ বন্ধ রেখে বাগানের পরিবেশ নষ্ট করছে।
যা নিয়ে আমি খুব চিন্তিত। সেই কারনে কোন উপায় না পেয়ে, শুক্রবার বাগান শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে বাগান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিই। আমিও চাই বাগানের আগের পরিবেশ ফিরে আসুক এবং নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রেখে আবার বাগানের কাজকর্ম শুরু হোক।‘ অপরদিকে, চা বাগান মালিকপক্ষ সংগঠন ডিবিআইটিএ’র সম্পাদক সঞ্জয় বাগচী বলেন, ‘চা বাগানে কয়েকদিন ধরে একটা সমস্যা চলছিল।
শ্রমিকরা দাবী দাওয়া আদায়ের জন্য কাজ বন্ধ রাখে, পরবর্তীতে বিক্ষোভের হুমকি দেওয়া হয়। এই সব কারনেই চা বাগানটি লকআউট ঘোষনা করা হয়েছে।‘ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ৩০ বছরের জীবনে বিন্নাগুড়ির মত বাগানে এই সব সমস্যা কখনো দেখিনি। বিন্নাগুড়ির মত বাগান যাতে বেশিদিন বন্ধ না থাকে এবং খুব শিগগিরি খুলে যাক সেই চেষ্টাই করব আমরা।‘