ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন কামারহাটি পুরসভার বহু অঞ্চল

0

HnExpress ৫ই অগাস্ট, ঝুমা দেবনাথ, কামারহাটি ঃ দিনের দিনে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি। এই অবস্থায় গত মঙ্গলবার ও বুধবারের ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে উওর শহরতলির কামারহাটি পুরসভার বহু অঞ্চল। কোথাও ডুবে গিয়েছে রাস্তা, আবার কোথাও পানীয় জলের কল, আবার কোথাও নর্দমার জল রাস্তায় জমা জলের সাথে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছে।

কোথাও আবার দেখা গিয়েছে এই জমা জলই ডুকে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের ডাইনিং রুমে। কামারহাটি পুরসভার অন্তর্গত আড়িয়াদহ, দেশপ্রিয়নগর, নন্দননগর সহ টেক্সম‍্যাকো কারখানার বয়লার বিভাগও জলমগ্ন। ফলত টেক্সম‍্যাকো কারখানার বয়লার বিভাগের কাজ বন্ধ রেখেছেন কর্তৃপক্ষ এবং একই সঙ্গে জন জীবন ব‍্যাহত হচ্ছে বলেই দাবি তুলছেন অনেকেই।

কামারহাটি পুরসভার স্থানীয় এক বাসিন্দা উদয় নস্কর জানান, একে এই করোনা পরিস্থিতি তাতে দোসর এই ‘বাণভাসি’ অবস্থা। তিনি আরও বলেন, তার বাড়িতেও অনেকটাই জল ডুকে গেছে। তিনি আশঙ্কা ও ভয় জড়ানো কন্ঠে প্রশ্ন তোলেন, জমা জল থেকে যদি তার পরিবারের কারোর ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে তার দায় নেবেন কে?

কামারহাটি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা প্রশাসক মন্ডলীর প্রধান গোপাল সাহা বলেন, যেহেতু এই কামারহাটি পুরসভার জমা জল নামার জন্য বাগজোলা খালের ওপর নির্ভর করতে হয়, তাই বাগজোলা খালে যত তাড়াতাড়ি জল নামবে, তত তাড়াতাড়িই জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন মানুষ। এরই পাশাপাশি জল জমার জন্য মানুষকে দায়ী করে বলেন, অনেকেই পুরসভার আর্বজনার গাড়িতে প্লাস্টিক বা আর্বজনা না ফেলে নর্দমা বা খালে ফেলেন।

এবং একই সঙ্গে তিনি কামারহাটি অঞ্চলে করোনা পরিস্থিতিকে মাথার রেখে বলেন, যাতে জমা জল তাড়াতাড়ি নেমে যায়, সেই দিকে সদা সর্তকতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কামারহাটি পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর আরেক প্রশাসক নবীন ঘোষাল জানান, আগের তুলনায় অনেকটাই জল নেমে গিয়েছে। এছাড়াও পুরসভা থেকে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে পাম্প চালিয়ে জল নামানোর ব‍্যাবস্থা গ্ৰহণ করা হয়েছে বলেই জানান তিনি।

কামারহাটি পুরসভার এক প্রশাসক সমীরণ দাস জানান, বাগজোলা খালের ওপর নির্ভর করতে হয় এই অঞ্চলে জমা জল নামানোর জন্য। এর পাশাপাশি বলেন তিনি, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরসভা থেকে পাম্প চালানো পদক্ষেপ গ্ৰহণ করার ফলে আগের তুলনায় অনেকটাই জল নেমে এসেছে। তৃণমূল নেতা মদন মিত্র জানান, কামারহাটি অঞ্চল সহ শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় জল জমার জন্য ৩৪ বছরের বাম রাজত্বের কুফল বলেই দাবি তাঁর।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তী পর্যায়ে যাতে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তার জন্য বাগজোলা খাল সংস্কারণের ভাবনাকে নবান্নে জানাবেন। অন্যদিকে, এই দু-দিনের বৃষ্টিতে কামারহাটির বাণভাসি অবস্থানকে ঘিরে বিরোধীদের গলায় সমালোচনার সুর উঠেছে তুঙ্গে। উওর দমদম পুরসভার বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য জানান, এই সরকারের কোন পরিকাঠামোই নেই। তিনি আরও বলেন, বাম সরকারের আমলে বিদ‍্যাধরী নদী সংস্করণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু তৃণমূল সরকার আসার পর এই সংস্করণ না হওয়ার জন্য আজ এই বানভাসি অবস্থার মুখে পড়ছেন মানুষ। তিনি সারা রাজ‍্যে আজ লকডাউন প্রসঙ্গ নিয়েও কটাক্ষের সুরে বলেন, রাজ্যের মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন ‘আমাদের রোগের সাথে লড়তে হবে, রোগীর সঙ্গে নয়। তিনি তার সাথেই সুর মিলিয়ে বলেন, ‘আমাদেরও পাগলামীর সঙ্গে লড়তে হবে, পাগলীর সঙ্গে নয়’, এমনটাই বক্তব্য বাম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য এর।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply