কিছু দেশের প্রাণঘাতী অস্ত্র নিয়ে নতুন করে সাজছে ছোট্ট ইউক্রেন
HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, বিশেষ প্রতিবেদন ঃ “রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে সফল হতে পারে, তবে ভবিষ্যতে দীর্ঘদিন এই সিদ্ধান্তের দাম দিতে হবে তাদের। রাশিয়া ভাবতেও পারছে না আগামী দিন কতটা কঠিন হতে চলেছে!” এমনই হুঙ্কার দিয়েছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন। রাশিয়ার উত্তর কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ? বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার জন্য যে ভাবে রাশিয়াকে অর্থনৈতিক চাপ দেওয়া শুরু করেছে ইউরোপ-আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলি, তাতে ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিছুটা চাপে ছিল রাশিয়া।
এই পরিস্থিতিতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর কথা বলে আসলে আশঙ্কা নয় পশ্চিমী দেশগুলিকে একটি সম্ভাবনার কথাই জানিয়েছিল রাশিয়া। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘Why You Wouldn’t Survive World War 3’ নামে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। ওই ভিডিওতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হলে কি হতে পারে তা দেখাতেই বলা হয়, এমনিতেই বিগত দু’বছর করোনাকালে নাজেহাল গোটা পৃথিবী।
এরই মধ্যে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ বাঁধলে এবং ওই যুদ্ধে যদি পারমানবিক অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়, তাতে পৃথিবীর অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। সাথেই পৃথিবীর তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে পৃথিবী। এমনকী পারমানবিক অস্ত্রের কবলে পড়ে মহাকাশ থেকে কৃত্রিম উপগ্রহ অর্থাৎ স্যাটেলাইট নেমে আসতে পারে পৃথিবীর বুকে। গোটা পৃথিবীর গাছপালা পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘাতে না জড়ালেও সামরিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল আমেরিকা-সহ অন্যান্য দেশ।
সংবাদ সুত্রের মারফত জানা গেছে, ইউক্রেনে মোট প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এর অস্ত্র পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছিল আমেরিকা। এছাড়াও আমেরিকার কাছে কিছু ট্যাঙ্ক এবং বিমান ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্রও চেয়েছিল ইউক্রেন। এই অস্ত্রগুলিও শীঘ্রই পাঠানো হবে বলেও পেন্টাগন জানিয়েছিল। বেলজিয়াম ইউক্রেনকে তিন হাজার স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, ২০০টি ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী অস্ত্র এবং তিন হাজার ৮০০ টন জ্বালানি সরবরাহ করা হবে বলে সংবাদ সুত্রের খবর।
কানাডিয়ান সরকার ইউক্রেনকে প্রাণঘাতী কিছু ভারী অস্ত্র এবং প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়ে অর্থ সাহায্য পাঠানোর কথা জানিয়ে ছিল। জার্মান সরকার এক হাজার ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী অস্ত্র ও ৫০০টি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপকারী মিসাইল সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আর ডাচ সরকার ইউক্রেনকে ২০০টি যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, ৫০টি প্যানজারফাস্ট ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী অস্ত্র এবং আরও ৪০০টি রকেট সরবরাহ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল।
ব্রিটেনও ইউক্রেনকে সাঁজোয়া গাড়ি বিধ্বংসী কিছু অস্ত্র ও কিছু প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়েও সাহায্য করবে বলে জানা গেছে। কিন্তু কোনো দেশই সোজাসুজি ভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি। কারন রাশিয়ার থেকে ভারত সহ প্রায় প্রতিটা দেশই সাহায্য পেয়ে থাকে। অন্যকে ফরাসি প্রেসিডেন্টের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ইউক্রেনের চারটি শহরে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছে রাশিয়া। নিরাপদে মানুষকে বের করার জন্য তৃতীয়বারের মত সাময়িক যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা করে রাশিয়া।
ইতিমধ্যে রাশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা TASS ল্যাভরভের এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ”মস্কো কখনওই যুদ্ধ চায়নি। এবং এই সংঘর্ষ শেষ করতেও উন্মুখ হয়ে রয়েছে রাশিয়া।” রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ (sergey lavrov) বলেছেন, ‘রাশিয়া যুদ্ধ চায় না। বর্তমান সঙ্কট শেষ করতে চায় রাশিয়া।’ আলোচনার পরিস্থিতি যে রয়েছে, তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এখন দেখার বিষয় ইউক্রেন তাতে কতটা সম্মত!