ভোটের খবর করতে গিয়ে মধ্যমগ্রামের ৭নং ওয়ার্ডে সাংবাদিক নিগ্রহ, ভূলুণ্ঠিত দেশের গণতন্ত্র


HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, মধ্যমগ্রাম ঃ বাংলার ১০৮টি পুরসভার শেষ কিস্তির ভোট শেষ হয়। কিন্তু চিরাচরিত নিয়ম মেনেই অশান্তি কমেনি একটুও৷ কোনো সময় বিরোধীরা শাসক দলের দিকে আঙুল তুলছে, তো আবার কখনও উল্টোটাও হচ্ছে। মধ্যমগ্রামের ৭নং ওয়ার্ডের নুরুন্নবী সিনিয়র মাদ্রাসা স্কুল বুথে ইভিএম মেশিন ভাঙচুর নিয়ে এলাকা উতপ্ত হয়। অভিযোগের তীর বিরোধীদের দিকে দিয়ে ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী পঙ্কজ চন্দ বলেন, “ইভিএম মেশিন ভেঙে পালানোর সময় এলাকাবাসীরা তাদের তাড়া করেন।

আমারা এখনও লিখিত কমপ্লেন করে উঠতে পারিনি, কারন আমাদের ভোটাররা বহুক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে৷ সেই মুহুর্তে প্রায় ১৬০০ পোল হয়ে গেছিল। তিনি আরও দাবি করেন যে, ইভিএম মেশিন্টা যে ছেলেটি ভাঙে সেই ছেলেটি ফরওয়ার্ড ব্লকেরই এজেন্ট ছিল”। ভোটদাতাদের কথায় যারা ইভিএম ভাঙচুর করেছিল তাঁরা এই এলাকারই বাসিন্দা ছিল, আবার কিছু বাইরেরও ছিল। এইদিন মধ্যমগ্রামের ৭নং ওয়ার্ডের ইভিএম ভাঙার খবর করতে গিয়ে নিদারুণ নিগ্রহ হতে হয় সাংবাদিকদের।


শাসক দলের অভিযোগ সিপিএম এর দিকে৷ সিপিএম এর এজেন্টরাই ইভিএম মেশিন ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিকেল ঠিক ৩.৩০ নাগাদ ইভিএম মেশিন ভাঙ্গার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় ভোটে কর্তব্যরত জেলা সাংবাদিকরা। ঠিক সেই সময় প্রায় ৪০-৫০ জন দুষ্কৃতি এসে সাংবাদিকদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাদ যায়নি HnExpress এর মহিলা সাংবাদিকও। ক্যামেরা ভেঙ্গে দেওয়া হয়, কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোন। মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধোর করা হয় গণতন্ত্রের চতুর্থত স্তম্ভকে।

তবে যেখানে গণতন্ত্রই আজ ভূলুণ্ঠিত, সেখানে গণতন্ত্রের চতুর্থত স্তম্ভ যে লুন্ঠিত হবে এ আর এমন বড় বিষয় কী! মারধোরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যমগ্রামের যশোর রোডে সাংবাদিকরা জমায়েত হয়ে প্রতিবাদ জানায়, যেন দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হয়। কয়েকজন আহত সাংবাদিকদের মধ্যমগ্রাম মাতৃসদন হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয় প্রাথমিক চিকিৎসা করার জন্য। আদতে সাংবাদিকদের কাজই হলো সত্য নিষ্ঠার সাথে খবর তুলে ধরা।


ইদানীং সাংবাদিকদের মারধরের ঘটনা বেশ চোখে পড়ার মতো। গনতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে আঘাত করে এক শ্রেনীর মানুষ যে ঠিক কি প্রমান করতে চান তা ভাববার বিষয়। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে গোটা ঘটনাটাই ঘটে পুলিশের উজ্জ্বল উপস্থিতিতেই। কিন্তু দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ঘটনাস্থলে পুলিশকে বিশেষ কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। ওইদিন দফায় দফায় বিক্ষোভ, ইভিএম ভাঙচুর, প্রার্থীকে মারধর, ভয় দেখানো, ছাপ্পা ভোট সহ একাধিক অভিযোগ পাওয়া যায়।

তবে এইবার যে অভিযোগ উঠেছে তাতে চমকে যেতে পারেন যেকোনও নাগরিক। কোথাও উঠেছে ধর্ষণের হুমকি, কোথাও আবার বিবস্ত্র করার হুমকিও উঠেছে। খোদ প্রার্থীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উত্তর ব্যারাকপুরের সিপিএম প্রার্থীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলের। এক কথায় বলা যায় যে, ২০২২ এ স্বচ্ছ পুরভোটে জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে। যদিও দাবি করা হয়েছিল এবার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগে স্বচ্ছতা থাকবে। ২রা মার্চ গণনা, এখন দেখার বিষয় রেজাল্ট আউট হওয়ার পরে বাংলার ভোট উৎসবের আনন্দ কোন দিকে গড়ায়—
