দেশ জুড়ে কৃষকদের হরতালে সম্পূর্ণ অচল জলপাইগুড়ি
HnExpress ৮ই ডিসেম্বর, অরুণকুমার, শিলিগুড়ি ঃ কৃষক বিরোধী তিনটি কৃষি আইন এবং বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল বাতিলের দাবিতে দেশ জুড়ে কৃষকদের ডাকা হরতালে আজ মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলা সম্পূর্ণ অচল হয়ে যায়। কর্পোরেট স্বার্থবাহী কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দেশ জোড়া হরতালে এদিন বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাগুলি সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল জলপাইগুড়ি শহরে।
সকাল থেকেই জীবন বীমার ডিভিশনাল অফিস, বড় পোস্ট অফিস, ইনকাম ট্যাক্স দপ্তর, পিএফ অফিস, স্টেট ব্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা, বিএসএনএল দপ্তরের গেট আটকে দাঁড়িয়ে যান ধর্মঘটী কৃষক, শ্রমিক সহ ছাত্র, যুব শিক্ষক, কর্মচারী, মহিলা কর্মীরা। বিভিন্ন স্থানে নেতৃত্ব দেন শ্রমিক নেতা জিয়াউল আলম সহ সুদীপ চক্রবর্তী, বিপুল সান্যাল, তপন গাঙ্গুলী, অরিন্দম চক্রবর্তী, শক্তি গোস্বামী, কৃষ্ণ সেন, সুভাষ দেব প্রমুখ।
এদিন জলপাইগুড়ি শহরের নেতাজি পাড়াস্থিত জীবনবীমার ডিভিশনাল দপ্তরে সকাল দশটা নাগাদ ডিভিশনাল ম্যানেজার ভেতরে ঢুকতে গেলে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। এখানে উপস্থিত শ্রমিক নেতা জিয়াউল আলমের নেতৃত্বে শ্রমিক-কৃষক, ছাত্র-যুব, মহিলা কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুললে বাধ্য হয়ে ডিভিশনাল ম্যানেজার সহ কর্মচারীরা সেখান থেকে চলে যান। উত্তেজনা তৈরি হয় স্টেট ব্যাঙ্কের মেইন ব্রাঞ্চ, পিএফ দপ্তরের সামনেও।
হরতালে বন্ধ ছিল সমস্ত রাজ্য সরকারি দপ্তর, স্কুল, কলেজ। এদিন সকালে এলআইসি-র ডিভিশনাল দপ্তরের সামনে থেকে নেতাজি পাড়ার সরকারি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মিছিল হয়।
ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষকদের বিশাল বাইক মিছিল জলপাইগুড়ি শহর এবং সংলগ্ন এলাকা পরিক্রমা করে এদিন। ৪ নম্বর ঘুমটি এলাকায় শিলিগুড়িগামী একটি সরকারি বাস মিছিলের সামনে পড়লেও ছাত্র, যুবদের বিক্ষোভে পুনরায় নেতাজি পাড়ার ডিপোতে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
শহর সংলগ্ন পাহাড়পুর মোড়ে ২৪ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষকরা। জাতীয় সড়ক এদিন ছিল শুনশান, সড়ক শহরের ডিবিসি রোডে টায়ার জ্বালিয়ে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এদিন প্রায় সকাল থেকেই জলপাইগুড়ি শহরের গুরুত্বপূর্ণ দিনবাজার, স্টেশন বাজার, বয়েলখানা বাজার সহ বিভিন্ন বাজারগুলি পূর্ণরূপে বন্ধ ছিল।
জলপাইগুড়ি শহরের জেলা আদালতের গেটে বিক্ষোভ দেখান বামপন্থী এবং সমস্ত কংগ্রেসী আইনজীবীরা। জেলার চা বাগানগুলিতে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান চা শ্রমিকরা। জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ এবং ময়নাগুড়ি ব্লকের সমস্ত সরকারি দপ্তর, হাট-বাজার এদিন ছিল বন্ধ। এদিন জেলাজুড়ে কৃষক বিরোধী কৃষি আইনের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধর্মঘটে সামিল হবার জন্য জেলাবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সলিল আচার্য।
জলপাইগুড়ির ক্লাব রোডস্থিত স্টেট ব্যাঙ্কের মেইন ব্রাঞ্চ এর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে শ্রমিক নেতা জিয়াউল আলম জানিয়েছেন আদানি, আম্বানিদের কথায় নয়, দেশ চলবে সাধারণ মানুষের কথায় প্রমাণ হলো এদিনের ধর্মঘটে। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এদিনের ধর্মঘট। অবিলম্বে দেশের অন্নদাতা কৃষকদের দাবি মেনে নিক মোদি সরকার জানিয়েছেন তিনি। এদিন বিজেপি-র ডাকে উত্তরবঙ্গে বনধ্ থাকাকালিন কোনো বিজেপি কর্মীকে জলপাইগুড়ি শহরের রাস্তায় দেখা যায়নি ।