এবারে পুর ভোটে পুরাতনকে সরিয়ে নতুনদের সুযোগ শাসকদলে, পরিবারতন্ত্রের তকমা মুছতেই কি এই বদল?

0


HnExpress কলকাতা, প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ ঃ সংক্রমণ এর গতি বাড়ুক কিম্বা কমুক, পুর ভোট এবার হচ্ছেই৷ তাই শুক্রবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়,
ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও সুব্রত বক্সীর উপস্থিতিতে তৃণমূল ভবনে এই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। বিগত বছরের পুরসভা নির্বাচন এর প্রার্থী তালিকায় এ বছর ফের বদল আনলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। পুরনোদের সরিয়ে নতুনদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবারেও। বাদ গেছে বিধায়করাও।

এই প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নতুনদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবারের পুরসভা নির্বাচনে। নবীন-প্রবীনের সম্বন্বয়ে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কোনও বিধায়কও নেই এই প্রার্থী তালিকায়। একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকেও সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে তাঁর দাবি। সকলকে তো সুযোগ দেওয়া যায় না। সকলেই ফার্স্ট বয় হতে পারে না।” ১০৮টি পুরসভার তালিকা  দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন সাপেক্ষ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এবার দলের কোনও বিধায়ককেও পুরভোটে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ এক্ষেত্রে “একব্যক্তি একপদ” তত্ত্বকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে বলে  মনে করছেন অনেকেই। এর মধ্যেই বালুরঘাটে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই সাত জন প্রার্থীর নাম পরিবর্তন করল শাসকদল। শুক্রবার এমন ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো শোরগোল পড়েছে গোটা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে।

নাম ঘোষণার পরেও কেন সাতজন প্রার্থীকে সরাতে হলো তা নিয়ে বালুরঘাটে শুরু হয়েছে দীর্ঘ জল্পনা। যার প্রভাব ভোটব্যাঙ্কেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক মহল। অন্যদিকে পুরুলিয়া পুরসভা নির্বাচনে টিকিট না পেয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দল ছাড়লেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ী কাউন্সিলর সহ প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা কর্মী। তারা তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন।



পুরুলিয়া শহরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো। দলত্যাগীরা হলেন পুরুলিয়া পুর বোর্ডের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুকাইয়া খাতুন ও তাঁর স্বামী আসলাম শের, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা শীতল দত্ত ও তাঁর স্ত্রী দুর্বা দত্ত সহ অন্যান্য ওয়ার্ডের প্রচুর তৃণমূল কর্মী।

কলকাতা পুরনিগমের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি থেকে সরে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। টিকিট দেওয়া হয় ফিরহাদ হাকিম সহ অতীন ঘোষ, দেবাশিস কুমারের মতো বিধায়কদের। সাংসদ হয়েও টিকিট পেয়েছেন মালা রায়। বিশেষ ব্যাপার এই যে, কলকাতার পুরভোটে পরিবারতন্ত্র প্রকট হয়ে ওঠে। দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যারে ভ্রাতৃবধূকেও টিকিট দেওয়া হয়েছে।

প্রার্থী হন শশী পাঁজার মেয়ে, শান্তনু সেনের স্ত্রী, তারক সিং-এর ছেলে ও মেয়ের মতো অনেকেই। বিরোধীরা পরিবারতন্ত্র নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক দলকে। সেই জন্যই একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে টিকিট দিচ্ছে না তৃণমূল। এই প্রার্থী তালিকায় নাম উঠেও নাম বাদ যাওয়ায় জেলাভিত্তিক বহু জায়গায় শুরু হয়েছে গোষ্ঠী কোন্দল। জায়গায় জায়গায় চলছে অবরোধ, বিক্ষোভ, লঙ্কাকাণ্ড।

সুত্রের খবর, আজ উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বারাসত পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বদল করার ইস্যুতে বারাসত কাজিপাড়ায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করা হয়। ঘটনাস্থলে বারাসাত থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং অবরোধ তুলে দেয়। তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের দাবি, প্রথম তালিকায় যাকে প্রার্থী করা হয়েছিলো তাকেই প্রার্থী হিসাবে চায় তাঁরা। পরবর্তীতে প্রার্থী টিকেন্দ্রনাথ সরকারকে বদল করে মিলন সর্দারকে প্রার্থী করা হয়।

এ প্রার্থী বহিরাগত, তাই এই প্রার্থীকে কোনভাবেই মানতে পারবে না বলে আন্দোলনে নামেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। বারাসাত কাজিপাড়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করায় এলাকায় ব্যপক যানজট তৈরি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছায় বারাসাত থানার পুলিশ বাহিনী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়ায়।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply