অবচেতনে আজও উঁকি মারে সেই চিঠি, স্মৃতিচারণে অলোকানন্দা

0

HnExpress অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা ঃ আজও আমাকে ভাবায়, আন্দোলিত করে ছেলেবেলার স্মৃতি, অবচেতনে আজও উঁকি মারে সেই চিঠি। স্মৃতিমেদুরতার পাখায় ভর দিয়ে চলে যাই সেই দিনগুলোয়টা । সর্বভারতীয় ডাক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করতে এসে বুধবার এই মন্তব্য করলেন ‘কালচারাল থেরাপি‘-র অন্যতম প্রবক্তা শিল্পী অলকানন্দা রায়।

প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করতে গিয়ে মহাজাতি সদনে অলকানন্দা বলেন, পুরনো দিনের সেই চিঠি আজও আমাদের অনুভূতির তন্ত্রীতে নাড়া দেয়। রাস্তার সেই লাল বাক্স, বাড়ির ছোট্ট কাঠের বাক্সে আশাভরা উঁকি— এ সব এখন অতীত। প্রযুক্তি বড় তাড়াতাড়ি কেড়ে নিল সব। এখন গতির যুগ। ই-মেল, সামাজিক মাধ্যমের ওপর আমরা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। তবু আমি চিঠি লেখারই পক্ষে। নিজে চিঠি লিখি এখনও।

অলকানন্দা বলেন, সুর-ছন্দ-তাল-লয় — জীবনের একটা বড় উপাদান এগুলো। আকাশ, বাতাস, পাখীর গান, সমুদ্রের ঢেউ— সব কিছুর মধ্যে ছন্দ আছে। মন আর আত্মার মাধ্যমে এগুলো আমরা অনুভব করি।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ডাক পর্ষদের সদস্য তথা প্রাক্তন চিফ পোষ্ট মাস্টার জেনারেল (সিপিএমজি- বেঙ্গল সার্কল) অরুন্ধতী ঘোষ অনুষ্ঠানে বললেন, “মনুমেন্টের পাদদেশে বা ইতিহাসের বইয়ের পাতায় আবদ্ধ থাকার বিষয় নয় সংস্কৃতি। ছেলেবেলা থেকে শুরু হয় এর অনুশীলন। ক্রমে চায়ের আসর বা কফিহাউসের আড্ডায় ছড়িয়ে পড়ে তার অনুরণন।

অলোকানন্দা রায়ের মত অনেক গুনী শিল্পীর শহর কলকাতা। এখানে সর্বভারতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হচ্ছে জেনে ভাল লাগছে। গত বছর বরোদায় এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিল কলকাতা। দেখা যাক, এবার কারা জেতে।

যেকোনো রকমের খবর ও বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন।

সিপিএমজি- বেঙ্গল সার্কল গৌতম ভট্টাচার্য অনুষ্ঠানে বলেন, দস্যু রত্নাকর যদি বাল্মিকী হতে পারেন, বন্দিরাও অনুকূল পরিবেশ এবং অনুপ্রেরণা পেলে সুস্থ জীবন কাটাতে পারেন। এ ব্যাপারে আমাদেরও একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। এ দিন এই বিষয়ে একটি বিশেষ ডাকটিকিট মঞ্চে প্রকাশিত হয়। এর পাশাপাশি প্রকাশিত হয় অলকানন্দা রায়ের ওপর একটি ‘মাই স্ট্যাম্প’।

ডাক ডিরেক্টর মীরা হান্ডা বলেন, গোটা দেশে ডাককর্মী প্রায় পাঁচ লক্ষ। প্রতিয়শ বছর আমরা তাঁদের এই সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাকে যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিই। কলকাতা সংস্কৃতির পীঠস্থান। যুক্তিসঙ্গতভাবে আগের ৩৩টি প্রতিযোগিতার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উদ্যোক্তা শহরের শিরোপা পেয়েছে এই শহর।

কারাবন্দিদের সন্তানদের নিয়ে এ দিন একটি অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন অলকানন্দা রায়। প্রায় এক যুগ আগে তিনি কীভাবে বন্দিদের মনোভাব বদলাতে ‘কালচারাল থেরাপি’-র প্রয়োগ করেন, শোনান তার নির্যাস।

গোটা দেশের প্রায় ৪০০ ডাককর্মী অংশ নিচ্ছেন এই প্রতিযোগিতায়। চলবে আগামী রবিবার পর্যন্ত। সঙ্গীতের হিন্দুস্থানী ও কর্নাটকী স্টাইল, ছোট ও একাঙ্ক নাটক, বিভিন্ন ধরণের নৃত্য— এ সবের ওপর হবে বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতা। ধ্রুপদী, লঘু ও লোখকগীতি— সঙ্গীতের তিন বিভাগ থাকছে প্রতিযোগিতায়। ভারতনাট্যম, কত্থক, মনিপুরী, ওডিশি, কুচিপুরি, কথাকলি, মোহিনীআট্টম— প্রতিযোগিতায় থাকবে এই সব নাচও। উৎকর্ষের সন্ধানে থাকবেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিচারকমন্ডলী।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply