বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে খুন স্ত্রীর, ধৃত প্রেমিক সহ আরও এক
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদা ঃ একের পর এক প্রতিহিংসামূলক ও স্বার্থসিদ্ধির অভিপ্রায় নৃশংস খুনের ঘটনা এখন সব খবরের শিরোনামে। লোভের বশিভূত হয়ে খুনের পাশাপাশি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন বা পরকীয়ার কেলেংকারি এখন যেন একটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে এসে দাঁড়িয়েছে। চিরাচরিত নারী-শিশু নির্যাতনের সাথে সাথে বেড়েছে পুরুষদের উপর অত্যাচার, খুন, যখম। কুলটির সুপারি কিলার দিয়ে স্বামীকে খুনের কিনারা করতে না করতেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্ত্রীর ষড়যন্ত্রে স্বামী হত্যার ঘটনা মালদায়। সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হল সেই ব্যক্তির পঁচা গলা মৃতদেহ।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই তাঁকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে, এমনটাই দাবি মৃত সাদিকুল খানের (৩৮) পরিবারের। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী, তার প্রেমিক ও আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে মালদার ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। পুলিশ সুত্রের খবর, মালদার ইংরেজবাজারের মোহনপুর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ছিলেন সাদিকুল খান, পেশায় তিনি দিনমজুর। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর দশেক আগে সারিফা বিবির সঙ্গে দেখাশুনো করেই বিয়ে হয় সাদিখুল খানের। তাঁদের একটি করে ছেলে এবং মেয়েও রয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, প্রায় বছর চারেক ধরে স্থানীয় এক যুবক নুর আলমের সঙ্গে সারিফার বিবি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিল। বিষয়টি সাদিকুলের গোচরে আসতেই তা নিয়ে সারিফার সাথে প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক অশান্তি লেগেই থাকত৷ এসব অশান্তি মাথায় নিয়েই গত ১০ই জানুয়ারি বাড়ি থেকে কাজের উদ্দেশ্যে বের হন সাদিকুল। আর তারপর থেকেই তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বলে অভিযোগ পরিবার সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বেশ কিছু দিন তাঁর ফিরে আসার অপেক্ষার পরে গত ১৬ই জানুয়ারি ইংরেজবাজার থানার অন্তর্গত মিলকি পুলিশ ফাঁড়িতে মিসিং ডায়েরি দায়ের করেন মৃতের পরিবার।
মিসিং ডাইরির পরে ঘটনার তদন্তে নেমে লালচাঁদ শেখ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। তাকে জেরা করতেই গরগর করে আসল ঘটনার কথা বলে দেয় তদন্তকারী অফিসারদের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সারিফা বিবির এই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের পথে রীতিমতো বাঁধা হয়ে দাঁড়িছিলেন স্বামী সাদিকুল। নিত্যদিন এ নিয়ে অশান্তির হাত থেকে বাঁচতে এবং তাদের সম্পর্কের পথ থেকে চিরদিনের মতো কাঁটা সরাতে প্রেমিক নুর আলমের সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় ষড়যন্ত্র করে সারিফা বিবি নিজের স্বামীকে হত্যা করে। আর এই নৃশংস হত্যালীলায় তাদের সাহায্য করে নুর আলমের সঙ্গী ধৃত লালচাঁদ শেখ।
১০ই জানুয়ারী সাদিকুল কাজের উদ্দেশ্যে বাইরে বের হলেই এই তিনজন পূর্ব পরিকল্পনা মতো তাঁকে রাস্তা থেকেই অপহরণ করে। পরে কড়া ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তারপর তাঁর গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়৷ আর সাদিকুলের নিথর মৃতদেহটি বস্তাবন্দি করে নুরেরই এক আত্মীয়ের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়। সেখান থেকেই সাদিকুলের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে মিলকি ফাঁড়ির পুলিশ। খুনের ঘটনায় জড়িত সারিফা বিবি, প্রেমিক নুর আলম ও লালচাঁদ শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।