সুপারি কিলার দিয়ে খুন স্বামীকে, ধৃত মঙ্গলী মারান্ডি

0


HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, কুলটি ঃ ধৃত মঙ্গলী মারান্ডি সুপারি কিলার দিয়ে নিজের স্বামীকে খুন করিয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ সুত্রের খবর, স্বামীর সমস্ত সম্পত্তি একাই ভোগ করার অভিপ্রায় তাঁকে ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে খুন করিয়েছেন মঙ্গলি। গত সোমবার কুলটির তুলসিহিড় গ্রামের বাসিন্দা বহিষ্কৃত ইসিএল কর্মী পরেশ মারান্ডিকে গুলি করে খুন করে কিছু দুষ্কৃতী। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সেই খুনের কিনারা করল কুলটি থানার অন্তর্গত নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ।

তদন্তের তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে যে, মেয়ের বন্ধুকে অর্থের বিনিময়ে হাত করে স্ত্রী মঙ্গলি বিহারের মুঙ্গেরের শার্প শুটারকে ভাড়া করে এনে খুন করায় স্বামী পরেশ মারান্ডিকে। এই ঘটনায় মঙ্গলী সহ সন্দীপ নোনিয়া, বিশাল পাসওয়ান, বিক্কি নোনিয়া নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা করেছে পুলিশ। কিন্তু পলাতক মুঙ্গেরের বাসিন্দা আসল ঘাতক হিমাংশু পাসওয়ান, তার খোঁজ চলছে জোরকদমে। প্রসঙ্গত, গত ১৯ শে জানুয়ারি কুলটির তুলসিহিড়ের বাসিন্দা পরেশ মারান্ডি খুন হয় কিছু দুষ্কৃতি আততায়ীর হাতে।

https://www.facebook.com/HN-Express-জনগণের-সাথে-জনগণের-পাশে-104215761171088/

পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বেরিয়ে আসা পর পর তিনটি গুলির আঘাতে নিহত হন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য থেকে জানা যায় যে, পরেশের কারুর সাথেই কোনও ব্যাক্তিগত শত্রুতা ছিল না। তাহলে এই খুনের মোটিভ কী হতে পারে? আর এই নৃশংস খুনের পিছনে মাস্টার মাইন্ডটিই বা কে? বস্তুতঃ এই খুনের কিনারা করতে তদন্তে নেমেই প্রথম সন্দেহের তীর যায় স্ত্রী মঙ্গলী মারান্ডির দিকে। ফলে তাঁকে থানায় নিয়ে এসে বারংবার জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জেরার মুখে পরে ভেঙে পড়েন মঙ্গলি এবং ভাড়াটে সুপারি কিলার দিয়ে স্বামীকে খুন করানোর কথা স্বীকারও করে নেয় সে।



জেলা পুলিশের ডিসি অভিষেক মোদি জানান, মঙ্গলি তাঁর মেয়ের বন্ধু বিক্কি নোনিয়াকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে জানায় যে পরেশকে তার পথ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে চিরতরে। বিক্কি সে কথা জানায় তাঁর বন্ধু সন্দীপ ও বিশাল পাসওয়ানকে। বিশালের পরিচিত বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা হিমাংশু পাসওয়ান ছিল শার্প শুটার, যাকে সুপারি কিলার হিসেবে ভাড়া করা হয় আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে। বিহার থেকে এসে সন্দীপ নোনিয়ার বাড়িতেই লুকিয়ে ছিল হিমাংশু। জানা গেছে, প্রতিদিন এলাকার একটি দোকানে বসে থাকত পরেশ।

কয়েকদিন ধরে তাঁকে ফলো করতে করতে অবশেষে বুধবার সকালে সুযোগ বুঝে খুব কাছ থেকে সহজেই পরেশকে গুলি করে খুন করে হিমাংশু, সাথে ছিল সন্দীপ নোনিয়া। খুনের পরে হিমাংশু পালিয়ে যায় বিহারে, বাকিরা এলাকাতেই গা ঢাকা দেয়। তদন্তে নেমে পুলিশ মৃত পরেশের স্ত্রী মঙ্গলির বয়ান ও তথ্য অনুযায়ী বিক্কি, সন্দীপ ও বিশালকে গ্রেফতার করে৷ ধৃতদের আসানসোল মহকুমা আদালতে পাঠানোর পর তাদের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেয় বিচারপতি। ধৃতদের কাছ থেকে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। জানা গেছে যে, পরেশ মারান্ডি ইসিএলের একজন কর্মী ছিলেন।

কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কাজে অনিয়মিত উপস্থিতির জন্য তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। বহুদিন ধরে সম্পর্ক ছিল না স্ত্রীর সাথেও। ফলে স্ত্রী ও মেয়েদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পারেন এমন আশংকায় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠেছিল মঙ্গলী। একদিকে ইসিএলে স্বামীর চাকরিটা পাওয়ার আশায়, আর অন্যদিকে স্বামীর সমস্ত সম্পত্তির মালিকানার হস্তগত করার জন্যই মঙ্গলী তাঁর স্বামীকে নৃশংস ভাবে খুন করিয়েছে বলে পুলিশ এর প্রাথমিক তদন্তের অনুমান। যদিও এই খুনের পিছনে আরও কোনও কারণ আছে কী না তাও খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে পুলিশ।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply