করোনা ভাইরাস মোকাবিলার আবহে কেমন ভাবে সময় কাটচ্ছে সেলেবদের? আজ HN Express এর মুখোমুখি অভিনেতা সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়

0

HnExpress ৪ঠা এপ্রিল, বিশেষ প্রতিবেদন, মুখোমুখি ঃ সারা ভারত তথা রাজ্য জুড়ে যখন করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় চলছে ২১ দিনের সম্পূর্ণ লক ডাউন। সেই আবহে কেমন ভাবে সময় কাটছে সেলেবদের? তারই সুকুল সন্ধানে আজ HN Express এর প্রতিনিধি অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের সামনে “মুখোমুখি”তে রয়েছেন বিশিষ্ট অভিনেতা সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। কি বললেন তিনি বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে, জেনে নিন এক নজরে —


প্রঃ বিশেষজ্ঞদের মতামত করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় মূল অস্ত্র একান্তে ঘরে থাকা, কিভাবে সময় কাটাচ্ছেন?
উঃ আমি মূলত যেটা করছি সেটা হল বই পড়ছি প্রচুর, কবিতা পড়তে ভালবাসি তাই কবিতা পড়ছি, ভিডিও করছি ফেসবুকের জন্য, মাঝে মাঝে কিছু নতুন গান তোলার চেষ্টা করছি, একটা সময় গান শিখতাম আর কি। তো সেই অভ্যাসটা আরেকবার ঝালিয়ে নিচ্ছি। গতকাল অর্চন ভট্টাচার্যের সুর করা একটা গান আমায় খুব অনুপ্রাণিত করে, সেটা আমি তুলে নিই। এছাড়া মায়ের সাথে গল্প করছি, যদিও আমি খুব একটা টেলিভিশন দেখতে ভালোবাসি না, তবুও টিভিতে নিউজটা দেখছি, ফোনে ছবি দেখে পুরনো স্মৃতিগুলোকে ঝালিয়ে নিচ্ছি, বন্ধুরা ফোন করলে আড্ডা মারছি, এভাবেই কেটে যাচ্ছে আর কি।

খুব যে এঞ্জয় করছি আইসোলেশন বা ‘হোম কোয়ারেন্টাইন’ তা নয়। যদিও এটা তো আমি বলতে পারি না, আমাদের করতেই হবে। দেশের জন্য তো অবশ্যই, তার সাথে সাথে নিজের ও পরিবারের জন্যও এটা খুব জরুরী।
প্রঃ অনেকে এত দিন ‘লক ডাউন’-এ থেকে অবসাদে ভুগছেন। তাদের অবসাদ তাড়াতে আপনি কি উপদেশ দেবেন?
উঃ জানো তো, অবসাদ হওয়াটাই খুব স্বাভাবিক। যদি সেটা খুব বেশি রকম পর্যায়ে যায়, তাহলে অবশ্যই মনবিদের সাহায্য নিতে বলব। বাকিটা কিন্তু আমাদের হাতেই। কারণ এই ‘লক ডাউন’-টা তো আর সারা জীবনের জন্য নয়। কয়েক মাসের জন্য বা কয়েক দিনের জন্য। এই দিন গোনাটা নিজের মধ্যে রাখতে হবে। ক্যালেন্ডারে দিনগুলোকে ক্রস করতে থাকা আর কি। আর একটা জিনিষ, যেটা খুব জরুরী, এই অবসাদ কেন আসছে, সেটা কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে।

 

 

যদি সেটা দীর্ঘদিন বাড়িতে বন্দী থাকার কারণে হয়, তাহলে এটা বুঝতে হবে যে, বাড়িতে নতুন জিনিষগুলো যেগুলো আমরা এতদিন দেখতে পাইনি বা পাইনা যে সম্পর্ক গুলোকে, তাকে আরেকবার নাড়াচাড়া করা উচিত, সেগুলোতে একটু সময় দিলে আমার মনে হয় অবসাদটা কাটবে। যদিও সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আপনার আগে থেকে অবসাদ আছে কিনা তার ওপর। আমি জানি এই সময় আমার অনেক বন্ধুবান্ধবরা অবসাদের তুঙ্গে আছেন আর কি। এই সময় অসম্ভব রকমের ‘সেক্সুয়াল ফ্রাস্ট্রেশন’-ও কাজ করে। যেটা কিন্তু খুব মারাত্মকও হতে পারে আর কি। এই কথা কিন্তু সাধারণত কেউ বলবে না। এটাও কিন্তু একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা।

প্রঃ করোনার আতঙ্ক মোকাবিলায় ভারতের পদক্ষেপে কি আপনি সন্তুষ্ট?
উঃ আমি এই সম্পর্কে বক্তব্য দেওয়ার কেউই নই। কিন্তু এটুকু বলতে পারি যে, কেন্দ্রীয় সরকার যেটা বলেছে, হয়ত ১৪ দিনের ‘লক ডাউন’-এর পর আস্তে আস্তে জনজীবন স্বাভাবিক করা হতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয়, এই ব্যাপারে ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েই কাজ করা উচিত। সাধারণ মানুষের স্বার্থে যদি ‘লক ডাউন’ বাড়াতে হয়, তাহলে আমি বলব বাড়ানো উচিত। নাহলে ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিউশন’ যদি একবার শুরু হয়ে যায়, তাহলে আমাদের দেশে এই রোগ অতিমারী সৃষ্টি করবে। এটা কিন্তু মহামারীর জায়গায় থাকবে না। একটা কথা আমাদের কাছে খুবই স্পষ্ট যে, ইতালী আমাদের কাছে শুধু একটা উদাহরণ। খারাপ উদাহরণ হলেও, সেটাই তো সত্যি। আগে তো প্রাণে বাঁচতে হবে।

প্রঃ আচ্ছা, সাংবাদিকরা যারা মাঠে ময়দানে নেমে কাজ করছেন, তারা অনেক সময় তাদের কাজের চাপে বা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারছেন না, মাস্ক বা স্যানেটাইজার অমিল, এক্ষেত্রে তাদের সুরক্ষা নিয়ে আপনি কি বলবেন?
উঃ আমি একেবারে প্রথম দিন থেকেই এই কথাটাই বলছি। সাংবাদিকরা কিন্তু সব থেকে সংবেদনশীল জায়গায় কাজ করছেন আর কি। আপনারা খবরগুলো করছেন বলেই আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারছি। আমি আপনাদের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ, শুধু আমি কেন আমরা সবাই আপনাদের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ, প্রতিটা সাংবাদিক ভাই ও বোনের কাছে। আপনাদের সুরক্ষার দিকটা সত্যিই আছে কিনা সেই দিকে বিশেষভাবে দেখতে হবে। তবে আমি আপনাদের বলব নিজেদের খেয়াল রাখবেন, সাবধানে থাকবেন।

 

 

আমার মতে, সাংবাদিকদের সুরক্ষার কথাটাও সরকারের খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে দেখা উচিত। যদি সেটা সরকারের তরফে এখনও করা না হয়ে থাকে, তাহলে সেটা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ সাংবাদিকরা যেভাবে এই করোনা ভাইরাসের সামনে দাঁড়িয়ে মোকাবিলা করছে, ওরাও তো পুলিশেরই মতো। তারা তো নিউজটা করছে, হাসপাতালে যাচ্ছে, করোনা আক্রান্ত রোগীর সাথে কথা বলছে, এটা তো তাদের কাজেরই একটা অংশ। তাই তাদের সুরক্ষার কথাটাও সরকারের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। সাংবাদিকদের সরকার থেকে ‘প্রোটেক্টিভ কেয়ার’ অবশ্যই দেওয়া উচিত।
প্রঃ দাদা, এই কঠিন পরিবেশে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন চ্যানেলের পক্ষ থেকে এটাই কাম্য
উঃ আপনারাও ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন আর যতটা পারেন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার চেষ্টা করুন।

ক্রমশ —

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply