আনিস খান হত্যা মামলায় গ্রেফতার সিভিক ভলান্টিয়ার সহ হোমগার্ড, শুভেন্দু তরফে আইনি সাহায্য পরিবারকে

0


HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ঃ “রক্ত দিয়ে ব্যানার লিখবো। যত রক্ত লাগে আমার নিয়ে নাও।” আন্দোলনে একথা বলেছিল বছর আঠাশের আনিস খান। কিন্তু সব রক্ত ঝরিয়ে হাওড়ার আমতায় সারদা দক্ষিণ খাঁ পাড়ার ছেলেটা চলে গেলো চিরতরে। ২৯তম বসন্তে আর পা দিল না সে। বাগনান কলেজে এসএফআই, আলিয়ায় এসে আইসা, এআইএসএফ, এআইএমএমএ একাধিক সংগঠনের হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ত আনিস খান।

২০১৫ সালে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় আনিস। ২০১৭ সালে আলিয়ার ৮০ দিনের বেশি চলতে থাকা আন্দোলনের মাধ্যমে সামনের সারিতে উঠে আসে সে। জোর গলায় স্লোগান, তীব্র সাহস, জুনিয়র ছেলেটা এক লহমায় নেতা হয়ে যায়। ২০১৮ সালে এমটেক ছাত্রদের কোনো কারনে সাসপেন্ড করে আলিয়া কর্তৃপক্ষ। সেদিন পুলিশের চোখে চোখ রেখে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় আনিস খান। এর পর ২০১৯ সালে পার্ক সার্কাসে এনআরসি বিরোধী আন্দোলনেও আলিয়ার অন্যতম নেতা ছিল আনিস খান।


আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কারও কোনও সমস্যা হলে, ঝাঁপিয়ে পড়তেন। সাধ্যমতো সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতেন। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক পড়ুয়া সাজিদুর রহমান বলেছেন, “ছাত্রনেতা হিসেবে অত্যন্ত ন্যায় নিষ্ঠ ছিলেন আনিস। যেখানে অন্যায় দেখেছেন, সেখানেই প্রতিবাদ করতেন ছেলেটি। তা যে সময়ে, যে পরিস্থিতিতেই হোক না কেন। যে সময় তাঁর এসএফআইয়ের আদর্শকে সত্য মনে হয়েছে, সেই সময় সে এসএফআইকে পাথেয় মনে করেছে।

আবার পরবর্তী সময়ে সে আইএসএফ করেছে। বিভিন্ন সময়ে তাঁর যেটা নিজের মন মতো মনে হয়েছে, সেটাকেই বেছে নিয়েছে। ওর মধ্যে সততা বিষয়টি রয়েছে। ছাত্র হিসেবে অন্যতম প্রধান দায়িত্ব– অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, আর সে সেই প্রতিবাদটা করে গেছে। তাতে এনআরসি ইস্যু হোক বা ডঃ কাফেল খানের বহিষ্কার হোক বা রোহিত ভেমুলা… প্রতিটি ইস্যুতেই সরব হয়েছে সে”। আনিস খানের মৃত্যুর কয়েক দিন পর হলেও ছাত্র বিপ্লবের চাপে পড়ে আমতা থানার হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা ও সিভিক ভলান্টিয়ার প্রীতম ভট্টাচার্যকে পুলিশ গ্রেফতার করে।



রাজ্য পুলিশের ডিজি বলেন, ”আবার ময়নাতদন্ত করতে চায় পুলিশ। কিন্তু তাতে রাজি হচ্ছে না তাঁর পরিবার। আনিস খানের মোবাইল ফোনও দেওয়া হচ্ছে না। তাই তদন্তে অসুবিধা হচ্ছে।” পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করুক পরিবার, এমন আবেদন করেছেন ডিজি। সিটকে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁর। এরপরই তিনি দাবি করেন, ”১৫ দিনের মধ্যে সব তথ্য আপনাদের সামনে চলে আসবে।” অন্যদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “কোনও তদন্তই কার্যকর হবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত CBI এর তদন্ত শুরু করছে।

দুইজন আইপিএস এতে জড়িত আছে বলে জানা গেছে। “আমার সঙ্গে আনিসের দাদার কথা হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ কলে। আমি আইনি সাহায্য করছি তাঁদের পরিবারকে। ওরা হাইকোর্ট, দরকার হলে সুপ্রিম কোর্টেও যাবে, এমনটা জানালেন শুভেন্দু”। অন্যদিকে মধ্যমগ্রাম পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মনোনীত প্রার্থী সুভাষ ব্যানার্জির সমর্থনে পথ সভায় এসে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, যে সম্প্রদায়ের মানুষকে একত্রিত করে এ ধরনের কাজ শুরু করেছেন কিছু বাতিল হওয়া নেতা, তাদের জেনে রাখা উচিত যে সেই সম্প্রদায়কেই শুধু নয়, বাংলার মানুষকে যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগলে রেখেছেন তাঁর থেকে বড় বন্ধু বাংলাতে আর দুটো নেই”।



FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply