সম্প্রতি গ্রিস এবং তুরস্কে অনুভূত হয় শক্তিশালী ভূমিকম্প, যার আশঙ্কার তালিকায় রয়েছে আরও বিভিন্ন দেশ
HnExpress ১লা নভেম্বর, আই ভি কুমার ঃ প্রায় প্রতিদিনই বিশ্বের কোনও না-কোনও অঞ্চলে ভূ-কম্পন অনুভূত হচ্ছে। তুরস্ক-গ্রিসে শক্তিশালী ভূমিকম্পে জেরবার হলো ইউরোপ। তুরস্কের সংবাদমাধ্যমে মধ্য ইজমিরে ভেঙে পড়া বহুতলের ছবি সামনে এসেছে। সেই সঙ্গে সামনে এসেছে উদ্ধার কর্মীদের উদ্ধার কাজে নেমে পড়ার ছবিও। সম্প্রতি গ্রিস এবং তুরস্কে অনুভূত হলো শক্তিশালী ভূমিকম্প, যা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে বিভিন্ন দেশ।
ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগর ভূকম্প বিজ্ঞান কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, শুরুতে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৬.৯ রিখটার স্কেল। যার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইউনানের উত্তর-উত্তরপূ্র্বে সামোস দ্বীপ। আর এরপর মধ্য ইজমিরেও বেশ কয়েকটি জায়গায় ধোঁয়া ওঠার ছবি সামনে এসেছে। ইজমিরের মেয়র জানিয়েছেন, এই ভুমিকম্পে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন প্রায় ১২০ জন। এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সেই দেশের সরকার।
এই কম্পন অনুভূত হয়েছে তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলেও। তবে সেখানে ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর মেলেনি এখনো। মার্কিন জিওলজিক্যল সার্ভে থেকে জানিয়েছে, সেখানে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭ রিখটার স্কেল। আরও জানা গিয়েছে যে, তুরস্ক-গ্রিসে শক্তিশালী ভূমিকম্পে, মৃত অন্তত ২৫,১৯৬ বার আফটার শক। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বহু মৃতদেহ চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এর পরপরই বৃহস্পতিবার তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক।
রিখটার স্কেলে যার কম্পনের মাত্রা ছিল ৭। এই ভূমিকম্পে সেদেশে মৃত্যু হয়েছে অন্তত প্রায় ১৭ জনের। আহত কমপক্ষে ৭০৯ জন। যদিও অন্য একটি সূত্রের খবর, অন্তত প্রায় ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৮০০ জনেরও বেশি আহত মানুষ হয়েছেন। এই ভূমিকম্পের পরদিন আবারও ১৯৬ বার আফটার শকের খবর মিলেছে। যার মধ্যে ২৩টির কম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৪-এরও বেশি ছিল। তুরস্কের পাশাপাশি পড়শি গ্রিসেও অনুভূত হয়েছে সেই কম্পন।
সেখানে কমপক্ষে ২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর তুরস্কের উপকূলবর্তী শহর ইজমিরে আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন লোকজন। এই ভূমিকম্পের ফলে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যমে। মধ্য ইজমিরে একটি বহুতলের ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ছবিও সামনে এসেছে।
শহরের বিভিন্ন জায়গায় ধোঁয়া উঠতেও দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার গ্রিস ও তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। গ্রিসের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, কয়েকটি দ্বীপের বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র সরে গিয়েছেন। আর তুরস্কের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে যে, কম্পনের ফলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। অন্তত ১৭টি ভবন ভেঙে পড়েছে। সেখানে উদ্ধারকার্য চলছে। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
এদিন তুরস্কের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সুলেমান সোয়লু জানিয়েছেন, ইজমিরের বেয়ারাকলি এবং বোরনোভা জেলায় ৬টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। উসাক, ডেনিজলি, মনিসা, এডেন, মুগলার মতো সংলগ্ন প্রদেশগুলিত সামান্য ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে। স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে, সেগুলিতে লোকজনকে ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে আটকদের বের করে আনার চেষ্টা চালাতে দেখা গিয়েছে।
ফলে কার্যত, বিভিন্ন জায়গায় ভূকম্পনের এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভূতত্ত্ববিদদের আশঙ্কা এর প্রভাব বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই পড়তে পারে বলে। একদিকে করোনা মহামারীর আতঙ্ক, তার উপর এই ভূকম্পনের আশঙ্কায় বিশ্ববাসী জেরবার।এই সমস্ত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বিশ্ব সংস্থার বিভিন্ন পর্যবেক্ষক দলসমুহ বলে জানা গিয়েছে।