সাংস্কৃতিক জগতের তিন নক্ষত্রের স্মরণে ‘গঙ্গা জলে গঙ্গা পূজা’

0

HnExpress ইন্দ্রানী সেনগুপ্ত ও সাবির হুসেন মন্ডল, কলকাতা ঃ স্বর্ণযুগের খ্যাতনামা শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, বা কিংবদন্তি অভিনেতা বা চলচ্চিত্র জগতের উজ্জ্বল তারকা মহানায়ক উত্তম কুমারকে কারোর মনে ধরে না, মনে পড়ে না, বা তাঁদের অভাব অনুভব করেন না এমন সাংস্কৃতিক মনা মানুষ পৃথিবীর শেষতম আশ্চর্যের বিষয় বোধ হয়। এযেন ‘গঙ্গা জলে গঙ্গা পূজা’।

তৎকালীন সময় তো বটেই এখনো বহু মানুষ এমন আছেন যাঁদের শয়নে স্বপনে জাগরণেও শিহরণ জাগায় সেই কিংবদন্তি শিল্পী মান্না দে বা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে গাওয়া গানে বাঙালির প্রাণের নায়ক, মহানায়ক উত্তম কুমারের সেই অভিনয় দক্ষতা। তাঁরা প্রত্যেকেই স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও যেন একের মাধ্যমে ওপরের প্রকাশ এক অনন্য মাত্রা যোগায় তাতে বোধকরি কারো কোনো সন্দেহই নেই।

আর তাদের স্মরণার্থে ২৪ শে আগস্ট, শনিবার, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এর ত্রিগুনা সেন মঞ্চে শুভ্র চক্রবর্তীর ভাবনায় ও পরিচালনায় এক হৃদয়স্পর্শী সন্ধ্যা উপহার দিলো “হেমন্ত-মান্নায় মহানায়ক” শিরোনামে এক মনোরঞ্জিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এদিন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী শিবাজি চট্টোপাধ্যায়, যিনি হেমন্ত কন্ঠী হিসেবেই বিখ্যাত, গায়িকা অরুন্ধতী হেমচৌধুরি, গিটারিস্ট পন্ডিত স্বপন সেন ( যিনি সোনার খাঁচা চলচিত্রে উত্তম কুমারের লিপে এবং হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কন্ঠে গাওয়া একটি জনপ্রিয় গান “কে জানে ক ঘন্টা”য় গিটার বাজিয়ে ছিলেন।

যেকোনো রকমের খবর ও বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ঃ ৮২৪০৯০২৪৪৫।

এছাড়াও অতিথিরূপে উপস্থিত ছিলেন শ্রী প্রতাপ ঘোষ, পন্ডিত মল্লার ঘোষ, বাচিক শিল্পী মল্লিকা ঘোষ প্রমুখ। এদিন মঞ্চে এই বিশিষ্ট শিল্পীবৃন্দকে বিশেষ ভাবে সম্বর্ধিত করা হয়। এদিন সঙ্গীত পরিবেশন করেন “ত্রয়ী” এর পক্ষ থেকে টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটির ডিরেক্টর তথা প্রফেসর ড. সুজয় বিশ্বাস, তাঁর স্ত্রী প্রফেসর ড. চন্দ্রানী বিশ্বাস ও কন্যা বৈষ্ণা বিশ্বাস। প্রফেসর সুজয় বিশ্বাস এদিন জানান, গান আমাদের পেশা নয়, নেশা।

আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই পেশায় প্রফেসর, তবু আমাদের এই ব্যস্ততাময় কর্মজীবন থেকেই সময় বার করে নিয়ে আমাদের ভালোবাসার ফসল স্বরূপ “ত্রয়ী”র পথ চলা শুরু। খুব সম্ভব এবছর পুজোয় কিছু ফাটাফাটি গানের সম্ভার নিয়ে অডিও-ভিডিও সিডিতে “ত্রয়ী”র এর আত্মপ্রকাশ ঘটতে চলেছে। এছাড়াও এবছর পুজোয় বহু জায়গায় গানের সুযোগ পেয়েছে আমাদের “ত্রয়ী”। তিনি আরও বললেন, আর আজ এই এত সুন্দর একটি সন্ধ্যায়, বিশেষত শিবাজি চট্টোপাধ্যায়ের মত একজন স্বনামধন্য সঙ্গীত শিল্পীর সাথে একই মঞ্চে গান গাইবার এই সুযোগ পাওয়ায় আমরা সত্যিই গর্বিত।

অন্যদিকে বাচিক শিল্পী মৌ গুহ এর সঞ্চালনায় এদিনের সমগ্র অনুষ্ঠানটি এক অন্য মাত্রা এনে দেয়। এছাড়াও এদিন সঙ্গীত শিল্পীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পল্লব ঘোষ, জয়ন্ত দে, অষ্টমী -শর্মিষ্ঠা, সুকন্যা কর্মকার প্রমুখ। অবশেষে বলব, সুরের আকাশের দুই বাঙালি শুকতারা যেমন বাংলা সহ ভারতের সাংস্কৃতিক জগতে তাঁদের অমর সব সৃষ্টির মধ্যে আজও জীবিত, তেমনই উত্তম কুমারের মাধুর্য্য বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ সম্পর্কে যে উন্মাদনা জাগিয়েছিল তা যেন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত গায়ক গায়িকাদের সাথে সাথে অগণিত দর্শকের মনে গুনগুনিয়ে গাওয়া গান আবারও তা প্রমান করে দিলো।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply