শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সব রকম সাহায্যের আশ্বাস রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
HnExpress ১৩ই ডিসেম্বর, প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, কলকাতা ঃ বাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালিন এবং সেই সরকার ক্ষমতা থেকে সরে যাবার পরবর্তী সময়কালে মানুষটিকে দেখা যেত নিজের পাম এভিনিউ এর বাড়িতে। সদা হাস্যময় নয়, তিনি বেশ গাম্ভীর্যপূর্ণ এক ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ব্যাস্ত থাকতেন বই পড়া ও লেখালেখি নিয়েই। এর আগেও বেশ কয়েক বার শারীরিক নানা অসুস্থতার কারনে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। এইদিনও শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন তিনি, পরে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
গভীর রাতে জ্ঞান ফিরেছে তাঁর। তবুও ঘুম তাঁকে পাড়িয়ে রাখা হয়ে ছিল। পরিবার সুত্রের খবর, অনেক দিন আগে থেকেই শরীর খারাপ ছিল। শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশনের পরিমাণ কমতে কমতে ৭০ শতাংশে পৌঁছে যায়। বাড়িতেই অচৈতন্য হয়ে যান তিনি। নিয়ম মাফিক কোভিড টেস্ট হয়, কিন্তু ফল নেগেটিভ আসে। ৫ জন ডাক্তারের তত্তাবধানে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চলছে তাঁর।
বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশনে রাখার পর তাঁকে মেকানিকাল ভেন্টিলেশলনে রাখা হয়। তারপর অবস্থার উন্নতির পরে ভেন্টিলেশন থেকে বের করে দেওয়া হয় তাঁকে। শেষ টেস্টের রিপোর্টে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ৪২ শতাংশ পাওয়া গিয়েছিল। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ছিল ৬২ শতাংশ। ঘুমের ওষুধ কমানো হচ্ছিলো ধীরে ধীরে, কমানো হচ্ছিলো ভেন্টিলেশনও। মেডিকেল বোর্ড এর চিকিৎসকরা আশাবাদী ছিলেন আগের থেকেই।
চিকিৎসকদের কাছে এটাই বড়ো চ্যালেঞ্জ ছিল যে ভেন্টিলেশন থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে কি ভাবে বের করা আনবেন তাঁরা। অবশেষে তিনি কথা বললেন তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ের সাথে। তবে ডাক্তারদের তিনি জানালেন যে হাসপাতালে আর থাকতে চান না। অন্যদিকে হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখন তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ %। রক্তচাপ ও নাড়ির গতি স্থিতিশীল। তবুও এখনো তাকে রাইসল টিউব দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। কিন্তু বেশ কিছুদিনের মধ্যেই খুলে নেয়া হবে টিউব এবং ক্যাথিটার।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শরীর খারাপের কথা শুনেই বনগাঁর জনসভা থেকে তাঁকে দেখতে সোজা হাসপাতালেও চলে আসেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন তাঁর পরিবারকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দেন তিনি। এছাড়াও তাঁকে দেখতে গিয়ে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তীর মতন ব্যক্তিত্বরা। হাসপাতালে থাকাকালীন যাতে কোভিড সংক্রমণ না হয় তাই বাড়ি চলে যেতে চান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বুদ্ধদেবের সুস্থতা কামনা করে একটি ট্যুইটও করেন।