অবশেষে বউবাজার-বিপর্যয় কাটিয়ে উঠল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো
HnExpress রাজ ঘোষাল, কলকাতা : যাবতীয় অনিশ্চয়তার অবসান। দীর্ঘ পাঁচ বছরের চেষ্টায় অবশেষে বউবাজার-বিপর্যয় কাটিয়ে উঠল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো (East-West Metro)। ২০১৯ সালে পাতালে মাটি কাটার সময় জল ঢুকে বসে যায় টানেল বোরিং মেশিন (TBM)। মাটির তলা থেকে সেই মেশিন তুলতে খোঁড়া হয় ৩৮ মিটারের কুয়ো। গত পাঁচ বছরে একাধিকবার কাদামাটি যুক্ত জল ঢুকে পশ্চিমমুখী টানেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশি-বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তবে টানেলের বিপজ্জনক অংশে জল ঢুকে পড়া বন্ধ করা গিয়েছে স্থায়ীভাবে। তারপর ওই ৩৮ মিটার কুয়োর মুখ স্থায়ীভাবে বন্ধ করাই মেট্রো রেল এবং নির্মাণকারী সংস্থার (ITD-Same) কর্তাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। গত কয়েকমাস ধরে ধাপে ধাপে ঢালাই করে উন্মুক্ত ওই অংশ ছোট করার কাজ চলে। শেষ ৬ মিটার অংশে ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে শনিবার রাতে।
ফলে বহু প্রতীক্ষিত এসপ্ল্যানেড শিয়ালদহ মেট্রো (Esplanade Sealdah Metro) চলাচল এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষায়। ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, ২০ দিন পর ঢালাই থেকে লোহার বিমের ‘সাপোর্ট’ সরিয়ে নেওয়া হবে। তারপরই বউবাজারের ওই অংশে মাটিরতলা দিয়ে শুরু হবে মেট্রোর লাইন পাতার কাজ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মার্চে ইস্ট-ওয়েস্টের সম্পূর্ণ রুটে মেট্রোর ট্রায়াল রান শুরু হয়ে যাবে।
সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে মেট্রো চেপে গঙ্গার নীচ দিয়ে হাওড়া ময়দান (Howrah Maidan) পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ মিলবে আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকেই। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বউবাজারে বারবার ধস, বাড়িঘরে ফাটল ধরার কারণে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সম্পূর্ণ রুট চালু করা নিয়ে সংশয় চরমে উঠেছিল। পাতালপথে বারবার জটিলতা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছিল ওই এলাকার বাসিন্দা ও সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
বউবাজারের শতাধিক বাসিন্দা বছরের পর বছর কার্যত ঘরছাড়া হয়েছিলেন। রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুরসভা সবরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। ব্যস্ত বউবাজারের রাজপথ সচল রেখেই পাতালপথে এই ‘মহাযজ্ঞ’ চলেছে। নির্মাণকারী সংস্থার প্রযুক্তিবিদরা (Technicians) এক্ষেত্রে কারিগরি কৌশল ও দক্ষতার চরম নির্দশন রেখেছেন বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন মেট্রোর শীর্ষকর্তারা। তাঁদের মূল্যায়ন, দেশ তো বটেই, গোটা এশিয়া মহাদেশে (Asia Continent) এই ধরনের কাজ আগে খুব একটা দেখা যায়নি।