২ জনের শরীর জুরে উপসর্গ, হোম কোয়রান্টিনে রাখা হলো ইএম বাইপাসের ধারে বস্তির ১৫ হাজার মানুষকে
HnExpress ২০শে এপ্রিল, জয় গুহ, কলকাতা ঃ একশো বিঘা জমির বস্তিতে বসবাস প্রায় ১৫ হাজার মানুষের। আর ওই ঘিঞ্জি কলোনিতেই এক মহিলার করোনা পজ়িটিভ মিলেছে। পরে আরও দুই বাসিন্দার মধ্যে এই রোগের উপসর্গ পাওয়া গিয়েছে। ওই ঘটনার পরেই কিছুটা হলেও আতঙ্কে প্রশাসন। শনিবার রাত থেকেই ইএম বাইপাস সংলগ্ন কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদ স্মৃতি কলোনির প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দাকে কার্যত হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
রবিবার সকাল থেকেই বস্তির পাশে টহল দিচ্ছে কমব্যাট ফোর্স। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই কলোনির বাসিন্দা প্রায় হাজার তিনেক মহিলা বাইপাস সংলগ্ন এলাকা-সহ দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় পরিচারিকার কাজ করেন। শুধু ওই কাজেই নয়, কলোনির বাসিন্দাদের অনেকে আরও নানান ধরনের কাজেই আশে পাশের এলাকা ছাড়াও কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগণায় যাতায়াত করেন। কলোনির এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এখানে সাতশো থেকে সাড়ে সাতশো ঘর রয়েছে।
ওই ছোট ছোট ঘুপচি ঘরে আবার একাধিক ভাড়াটেরও বাস রয়েছে বলে সুত্র অনুযায়ী জানা গেছে। এদিকে লকডাউনের পরেও এখানে সামাজিক দূরত্ব-বিধি বা মাস্ক পরিধান কোনও ভাবেই প্রয়োগ হয়নি। ঘুপচি ঘরের মধ্যে গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকাই এখানকার মানুষের রেওয়াজ বা পরিস্থিতিবশত অভ্যাসও বলা যায়।’’ প্রসঙ্গত, এ রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্ত আমলা-পুত্র ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডেরই অধীনে নিউ গড়িয়ার একটি আবাসনেরই বাসিন্দা। দিন কয়েক আগে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক কর্মরত ওই কলোনির বাসিন্দার করোনার উপসর্গ দেখা দেয়।
তাঁকে ওই বেসরকারি হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার রাতে তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। এর পরেই তাঁর পরিবারের তিন জনকে কোয়রান্টিনে নিয়ে নেওয়া হয়। ওই মহিলার পজ়িটিভ ধরা পড়ার পরেই নড়েচড়ে বসেন জেলা প্রশাসন ও কলকাতা পুরসভার কর্মকর্তারা। করোনায় আক্রান্ত মহিলার স্বামীর ওই কলোনিতে মুরগির মাংসের দোকান রয়েছে। সুত্র বলছে, লকডাউন চলাকালীন ওই দোকান থেকেই তাঁদের পড়শি এবং আশপাশের অঞ্চলের অনেকেই মাংস কিনেছেন।
ওই মাংসের দোকানের গা ঘেঁষেই আবার রয়েছে একাধিক দোকানপাটও। প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, ওই কলোনিতে যে ভাবে লোকজন গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকেন, তাতে অন্য বাসিন্দাদেরও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে পুরোদস্তুর। সেই কারণেই ওই কলোনির বাসিন্দাদের বাইরে যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধই করে দেওয়া হয়েছে। এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্সও মোতায়েন করা হয়েছে।
কোনও ভাবেই ওই কলোনি থেকে যাতে সংক্রমণ না ছাড়ায়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। উপসর্গ অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ ইএম বাইপাস থেকে ওই বস্তির চার দিকের সমস্ত রাস্তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড পঞ্চসায়র ও পূর্ব যাদবপুর থানার অধীনে রয়েছে। শহিদ স্মৃতি কলোনি মূলত পঞ্চসায়র থানার অধীনেজ। তা সত্ত্বেও দু’টি থানার নজরদারিতেই রাখা হয়েছে ওই কলোনিকে। ওই কলোনিকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে দাবি করছেন প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তিরা।