সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এলেও জ্বর কমেছে, পদ্মশ্রী প্রসঙ্গে কড়া জবাব রুপম সহ সন্ধ্যা কন্যার

0


HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, কলকাতা ঃ কে সেই মহিলা? যে ছয় সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট কন্যা, যে একজন ভারতীয় নেপথ্য গায়িকা, সংগীতশিল্পী, বাংলা সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ! ২০২২শে দাঁড়িয়ে বাঙালির মনে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এক বুক ভালোবাসা। কালের নিয়মে প্রানী মাত্রই ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় প্রায় সকলেই। ব্যাতিক্রম হয়নি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও।

জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নব্বইয়ের বর্ষীয়ান গায়িকা গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার গ্রিণ করিডোরের মাধ্যমে তাঁর লেকগার্ডেনসের বাড়ি থেকেই এসএসকেম হাসপাতালে শিল্পীকে নিয়ে আসা হয়। বিকেলে করোনা টেস্টের পর তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ পাওয়া যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তান্তরে অন্য এক বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে।

ওই বেসরকারি হাসপাতাল গঠিত পাঁচ জন চিকিৎসকের দল জানিয়েছেন, ওনার রক্তচাপ কম, ওষুধ দিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ফুসফুসে সংক্রমণ রয়েছে। আর শরীরের বেশকিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিকমতো কাজও করছে না। বাথরুমে কয়েকদিন আগেই পড়ে যাওয়ায় ফিমার বরাবর বাঁ দিকে চোট রয়েছে। তবে কোমরের এই চোট আর অনান্য অসুবিধা সত্ত্বেও জ্বর অনেকটাই কমেছে।

খাওয়া-দাওয়া আর ঘুমও ঠিকমতোই হয়েছে বলে সুত্রের খবর। তবে রাইলস টিউব দিয়ে খাওয়ানো হয়েছে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার সুশান মুখোপাধ্যায় ও কার্ডিওলজির প্রধান ডাক্তার প্রকাশচন্দ্র মণ্ডল, ডাক্তার দেবরাজ যশ (পালমনোলজি), ডাক্তার সুরেশ রামাসুব্বন (ক্রিটিক্যাল কেয়ার) এবং বিডি চট্টোপাধ্যায়ের (অর্থোপেডিক্স) নেতৃত্বে তাঁর চিকিৎসা চলছে



সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের আরোগ্য কামনায় গোটা শিল্পীমহল। গায়ক রূপঙ্কর বাগচি বলেছেন, ‘শুনলাম সন্ধ্যাদি খুবই অসুস্থ। খুবই দুঃশ্চিন্তা হচ্ছে। ওঁর অনেকটাই বয়েস হয়েছে। কিন্তু খুবই সাধারণ জীবন যাপন করেন। বলা চলে খুবই ডিসিপ্লিনড লাইফ লিড করেন তিনি। নিয়ম মেনে ভোর বেলা ঘুম থেকে ওঠা, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া, সঠিক সময়ে খাবার খাওয়ার মত অভ্যাস রয়েছে ওঁনার।

আমাদেরও পরামর্শ দিতেন, সময়ে ঘুমানো এবং খাওয়া-দাওয়া সেরে ফেলার জন্য। তবে বয়েস হয়েছে। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হতেই পারেন। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। এখনও ওনার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’ অন্যদিকে গায়ক রুপম ইসলাম শিল্পীর আরোগ্য কামনার সাথে সাথে পদ্মশ্রী প্রত্যাখ্যান নিয়েও বলেন যে, ‘সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এটাই কামনা করি। তবে পাশাপাশি এটাও বলছি, পদ্মশ্রী নিয়ে উনি দুঃখ পেয়েছেন খুবই।

আমরা কী ভাবছি বা পৃথিবী কী ভাবছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বড় কথা এটাই যে উনি খুব দুঃখ পেয়েছেন এই ঘটনায়। এই বয়েসে এই দুঃখ না দিলেই ভালো হত। যে কোনও পুরস্কারই একজন শিল্পীর কাছে অনেক বড়। তবে তার চেয়েও বড় পুরস্কার উনি মানুষের মণিকোঠায় ছিলেন, আছেন আর থাকবেন। কিন্তু এই বয়েসে উনি পদ্মশ্রী ডিসার্ভ করেন বলে আমার মনে হয় না। আমার ব্যক্তিগত মতামত, উনি ভারতরত্ন ডিসার্ভ করেন। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় দুঃখ্য পাওয়ায় আমরা বাঙালিরাও অত্যন্ত দুঃখ্য পেয়েছি।’

পদ্মশ্রী প্রত্যাখ্যান নিয়ে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মেয়েও এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মা’কে ফোনে বলা হয় পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য মনোনয়ের একটা ব্যাপার আছে, আপনি কি পুরস্কার গ্রহণ করবেন? এমনও বলা হয়, আপনি পুরস্কার গ্রহণ করতে চাইলে তবেই আপনার নাম তালিকায় দেওয়া হবে। আর তখনই মা স্পষ্ট করে বলে দেন, ‘আমার শরীর ভালো নেই, আমি এই পুরস্কার গ্রহণ করতে পারব না।’ পরে ফের হিন্দিতে জানতে চাওয়া হয়, এই পুরস্কার না নেওয়ার অন্য কোনও কারণ আছে কিনা। মা বলেন, ‘মেরা দিল নেহি কর রাহা হ্যায়’ যার ‘মানে আমার মন চাইছে না।’

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply