ভয়ংকর চেহারা নিয়ে বারংবার গতিপথ বদলাচ্ছে সাইক্লোন বুলবুল, তোলপাড় জলপথ

0

HnExpress জয় গুহ, ওয়েদার রিপোর্ট ঃ ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়ে বারংবার গতিপথ বদলাচ্ছে বুলবুল, দুরত্ব আর মাত্র দীঘা থেকে ১১০ কিমি।
সাগরদ্বীপ থেকে আর মাত্র ১২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বুলবুল। ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে বুলবুল রয়েছে মাত্র ১১৫ কিলোমিটার দূরত্বে। অন্যদিকে কলকাতার থেকে মাত্র ২৪২ কিমি. দূরে রয়েছে বুলবুল। আর বালাসোর থেকে ১৩৫ কিমি দূরে রয়েছে তা। ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় বুলবুল দ্রুত গতিতে ধেয়ে আসছে জনবসতির দিকে।

মারাত্মক উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। গত ৬ ঘণ্টায় ১৮ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে বুলবুল। সমুদ্রে বুলবুলের গতিবেগ এখন ১৭০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। আজ রাতে অথবা মাঝরাতেই ১৩৫ কিলোমিটার বেগে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় বুলবুল আছড়ে পড়বে সাগর ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূলের কাছে সুন্দরবন এর বদ্বীপ বরাবর, তা জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।

এদিকে গতকাল দুপুর থেকেই কলকাতায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আজ সকাল থেকে মুখ কালো করে বসে আছে কলকাতার আকাশ। এক নাগাড়ে চলছে বৃষ্টির রিমঝিম বর্ষণ। সঙ্গে রয়েছে ঝোড়ো হাওয়া। বৃষ্টির পরিমাণ বেড়ে গেছে এবং ক্রমেই আরও বৃষ্টি বাড়বে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে হাওয়া অফিস সুত্রে।

শুধু কলকাতাই নয়, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া এই সমস্ত জায়গাতেও এক নাগাড়ে বৃষ্টি চলবে। কলকাতায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ৮০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইবে আজ। গত চব্বিশ ঘণ্টায় পারাদ্বীপে ১৬ সেন্টিমিটার, চাঁদবালি ও বালাসোরে ৪ সেমি, দীঘাতে ৭ সেমি এবং ক্যানিংয়ে ৩ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

৭০ — ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে রাজ্যের উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায়, মেদিনীপুর এবং ওড়িশার কেন্দ্রপারা, জগৎসিংহপুর, ভদ্রক ও বালাসোরে। এরপর হাওয়ার গতিবেগ ক্রমশ বাড়বে বলেই আশংকা ওয়েদার রিপোর্ট অনুযায়ী। আগামী ৩ ঘণ্টায় ওড়িশাতে ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে প্রতি ঘণ্টায় ঝড় বইবে যা ৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় পৌঁছবে। এদিকে রাজ্যে আজ বিকেল থেকেই ১১০ কিমি থেকে ১২০ কিমি এমনকি ১৩৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ব্যাপক ঝড় বইবে।

আশংকা, আজ রাতের মধ্যে দুই চব্বিশ পরগনা, মেদিনীপুর জেলায় অতি ভয়ঙ্কর বুলবুল আছরে পড়বে, এই অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে যে, বড় গাছ উপড়ে পড়তে পারে। কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে। উপকূল অঞ্চলে বিদ্যুৎ এবং সমস্ত রকম যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ছিন্ন হতে পারে।

বেশ কিছু সর্তকতা জারি করা হয়েছে, উপকূল অঞ্চলের বাসিন্দাদের ঘরের ভিতরেই সুরক্ষিত স্থানে থাকতে বলা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের গতকাল রাতের মধ্যেই ফিরতে বলা হয় সমুদ্র থেকে। সমুদ্রের ধারে মানুষ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে। সমুদ্রে এবং সুন্দরবনের বদ্বীপ অঞ্চলেও মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে যেতে বারণ করা হয়েছে।

সর্তকতা জারি করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য, পশ্চিমবঙ্গের যে সমস্ত সমুদ্র তীরবর্তী পর্যটনস্থল রয়েছে যেমন দীঘা, মন্দারমনি, তালসারি শংকরপুর, বকখালি, সাগরদ্বীপে আজ, কাল এবং ১১ তারিখ অব্দি সমুদ্রের কাছাকাছি কাউকেই যেতে দেওয়া হচ্ছে না এবং যেকোনও ধরনের ওয়াটার অ্যাক্টিভিটি বন্ধ করা হয়েছে। এই পর্যটন স্থল গুলি রীতিমতো ফাঁকা বুলবুল আতঙ্কে। কলকাতার রাস্তাঘাটও আজ অনেকটাই ফাঁকা।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply