October 11, 2024

কঙ্গনা প্রতিশোধ কাণ্ডে জেরবার মহারাষ্ট্রে উদ্ধব সরকার, সঙ্কট ক্রমেই ঘনীভূত

0
Advertisements

HnExpress ১০ই সেপ্টেম্বর, অরুণ কুমার ঃ কঙ্গনা রানাওয়াত প্রতিশোধ কাণ্ডে দেশ জুড়ে প্রতিবাদের জেরে মহারাষ্ট্রে উদ্ধব সরকারের সঙ্কট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল শিবসেনা মুখপাত্র “সামনা”তে কঙ্গনার পালি হিলস্ এর বাড়ির ভাঙচুরের ছবি জেসিবি সহ দেখানো হয়। পাশাপাশি সেখানে লেখা হয়েছে যে কঙ্গনার বাড়ির স্ট্রাকচার ভাঙ্গার পাশাপাশি বাড়ির ভেতরে থাকা তার মোজাইক করা মেঝে, আয়না, ফার্নিচার, ইন্টিরিয়ার ডেকোরেটিভ দামি আসবাবপত্রও নষ্ট করা হয়েছে।

এই কথাগুলো উল্লেখ করার পর সমগ্র মহারাষ্ট্র জুড়ে একটা অসম্ভব জোরদার প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি এক হাস্যকর খোরাক হয়ে উঠেছে উদ্ধব ঠাকরের দল‌। সরাসরি এটাকে গুন্ডামিও বলছেন অনেকেই। মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের অধিকার নিশ্চয়ই আছে বেআইনি স্ট্রাকচারার ভাঙ্গার, কিন্তু অধিকার নেই বাড়ির আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী ভাঙার। শুধুমাত্র মহারাষ্ট্র নয় সারা দেশজুড়ে আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। মুম্বাই হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের ফলে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন তাদের কর্মকাণ্ড স্থগিত রেখেছে।

কিন্তু পরবর্তীকালে হাইকোর্ট কি রায় দেয় তার ওপরে নির্ভর করছে উদ্ধব সরকারের ভবিষ্যৎ এর অনেক কিছুই। যাই হোক, এটা জানার জন্য আমাদের আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। যা প্রকৃত সত্য তাকে কোন মতেই দাবিয়ে রাখা যায় না বা যাবে না। উদ্ধব ঠাকরের নিজের ছেলে আদিত্যকে বাঁচানোর জন্য যেরকম নিম্ন ধরনের চিন্তা ভাবনার প্রয়োগ করতে গিয়ে যত রকমের বাধ্যবাধকতা ছিল তার সমস্ত সীমারেখা অতিক্রম করে গেছেন। আজকের প্রেক্ষাপটে বালাসাহেব ঠাকরে যে আদর্শ চিন্তাভাবনা সেটা ক্ষমতার জন্য জলাঞ্জলি দিয়ে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে এটাই চরম সত্য ও দুর্ভাগ্যজনক।

আজ যদি বালাসাহেব বেঁচে থাকতেন তাহলে তিনি ক্ষমতার জন্য তার নিজের চিন্তাভাবনা আদর্শকে কখনোই জলাঞ্জলি দিতেন না‌। আজকে একা কঙ্গনাকে নিয়ে ল্যাজেগোবরে মহারাষ্ট্র সরকার। একে রিহার হাজতবাসে যারপরনাই শোকস্তব্ধ করিনা, বিদ্যা, সোনম তথা প্রায় গোটা বলিউড ইন্ডাস্ট্রি। ড্রাগ এর মত কেলেঙ্কারির ফাঁস নিয়ে রিহার গুডবুকে না থাকতে মরিয়া ফারহান আকতার-ও। কঙ্গনার ইনস্টাগ্রাম পোস্টেই জানা যায়, সুশান্তের মৃত্যুর দিন সন্ধ্যায় ফারহান আকতারের বাড়ি গিয়েছিল রিহা।

কিন্তু কী বলতে সেটা জানা যায়নি এখনো, তবে এই ঘটনার সাক্ষী আছে মিডিয়াও। সব মিলিয়ে
কঙ্গনা প্রতিশোধ কাণ্ডে দেশ জুড়ে প্রতিবাদের জেরে মহারাষ্ট্রে উদ্ধব সরকারের সঙ্কট ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। কঙ্গণা যে এক সাহসী অভিনেত্রী, যা বলার সেই কথাটি খুব স্পষ্ট করেই উচ্চারণ করেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখোমুখি দাঁড়াতে পারেন, ময়দান ছেড়ে পালিয়ে যান না! তাই বহু মানুষই কঙ্গণার পাশে দাঁড়িয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। এমতাবস্থায় উদ্ধব কি ভাবছেন কিছু? সুশান্তেরও ড্রাগ-যোগ নম্বর ওয়ান অ্যাকিউজড রিহার মুখের কথায় তো প্রতিষ্ঠিত হবে না।

একটা অন্তত কংক্রিট টেক্সট, জবরদস্ত প্রমাণ তো তার টিমকে দিতেই হবে! সুশান্তের আটটি হার্ডডিস্ক নষ্ট করে ফেলা থেকে অ্যাপার্টমেন্টের সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট করা, কী না করেছেন রিহা। সিবিআইকে সে জন্যই আজ এতটা বেগ পেতে হচ্ছে। আর ড্রাগ চক্রের পর্দা ফাঁস হলে মুম্বইয়ের মাফিয়ার টাকার উপর শুয়ে থাকা তারকাদের কী হবে তা জানা নেই। তবে সাধারণ ও অতি সাধারণ ঘরের বাবা-মায়েদের উপকার হলেও হতে পারে। কারণ, মূলত কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরই তো টার্গেট করে ড্রাগ মাফিয়াদের হাতে।

জানি, হয়ত এত শোরগোলের পরেও আদতে কিছুই হবে না। কিন্তু কঙ্গনা একটা অসম্ভবকে সম্ভব করেছে ড্রাগ চক্রের হোতা, বলিউডে যারা নানা ভাবে ড্রাগ-ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এবং রাজনীতিকদের সে বোঝাতে পেরেছে, সবাই চুপ করে থাকলেও সে তাদের অন্যায় হজম করার মানুষ নয়! একটা মাত্র কঙ্গনা একাই গোটা ভারতবর্ষকে প্রায় জুটিয়ে ফেলেছে তার সঙ্গে। রিহার সমর্থনে জনবহুল জায়গায় কেউ আজ মুখ খুলুক দেখি, একটা মারও বাইরে পড়বে না। আর তারই ফল স্বরূপ কী কর্পোরেশনকে দিয়ে কঙ্গনার পালি হিলের অফিস ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হলো?

এদিকে জনতার পালস বুঝে গিয়ে পুরো পাল্টি খেয়েছেন শরদ পাওয়ারের বক্তব্য, তিনি বলেন “মুম্বইয়ের কর্পোরেশন এর খুঁজে পেতে কঙ্গনার অফিসটাকেই কী বেআইনি বলে মনে হল?” পাওয়ারের এই ডিগবাজির পর উদ্ভব ঠাকরের মুখের ছবিটা কেমন হয়েছে একবার অনুমান করে দেখতেই পারেন! হ্যাঁ খেলাটা জমে উঠেছে ঠিক এভাবেই‌। কেন্দ্রীয় সরকার একদিকে বলছে আমার কাছে সিবিআই এবং ইডি আছে, তো অপরদিকে মহারাষ্ট্র সরকার বলছে আমার কাছে জেসিবি আছে।

অপরদিকে এটা বলাই বাহুল্য যে, এই আঁধার জগতের সঙ্গে মুম্বাই পুলিশের অন্তরঙ্গতার আধিক্য প্রায় দীর্ঘ দিনের। এবার প্রয়োজন এই আঁধার জগতের প্রকৃত উন্মোচন ও পালের গোদাকে লকাপ বন্দী করার। গন্ধটা শিবসেনার ও মহারাষ্ট্র সরকারের দিকেই। বিজেপিও মাঠে নেমে পড়েছে। গোদাবরী এখন নদী উত্তাল! এখন এর শেষ পরিনতি কি যে হবে তা সময়ই বলবে।

Advertisements

Leave a Reply