করোনা পরিস্থিতি বিষয়ক আলোচনা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ঃ সম্প্রতি কলকাতায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার শিয়ালদহ শাখার পক্ষ থেকে করোনা পরিস্থিতি বিষয়ক এক আলোচনা সভা এবং সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় সংগঠনের সভাপতি ডাঃ রামজি সিং। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা সি সি এইচ এর প্রাক্তন সহ সভাপতি ডাঃ অরুণ ভাসমে ও ডাঃ সুরেশ নাদাল।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হাওড়া শহরের প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তী, অ্যাসোচেম ন্যাশনাল আয়ুষ টাস্ক ফোর্স এর চেয়ারম্যান ডাঃ সুদীপ্ত নারায়ণ রায়, সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা ডাঃ আশীষ দত্ত, ডাঃ অশোক প্রধান, ডাঃ এইচ আই হোসেন সহ আরও বহু বিশিষ্ট অতিথিবর্গ। এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে উপবিষ্ট বিশিষ্ট ডাক্তারদের লাইভ সার্টিকেটের মাধ্যমে সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সংগঠনের শিয়ালদহ শাখার যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ শহিদুল ইসলাম।
এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে অ্যাসোচেম আয়ুষ ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ডা: সুদীপ্ত রায় উপস্থিত হোমিও চিকিৎসকদের জাতীয় প্রস্তাবিত ৫ ট্রিলিয়ন ডলার আর্থিক উন্নয়নে সামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন যে, অতিমারী সময়ে প্রথম ৯ মাসে আয়ুষ ক্ষেত্রে ৪৪ শতাংশ বৃদ্ধিতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বাড়তি স্বীকৃতি পায়। আর ২০২৭ সালের মধ্যে হোমিও ওষুধ ১৮.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যবসা করতে চলেছে এমনই এক সমীক্ষার ফলাফল বলে তিনি দাবী করেন।
এই সম্মেলনে তিনি অ্যাসোচেম হোমিও হ্যব নির্মাণে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রককে যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার কথাও ঘোষণা করার আহ্বান জানান। কর্পোরেট বাজারে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার যতটা বারবারন্ত হয়েছে বা অ্যালোপ্যাথি নিয়ে যত বেশি গবেষণা হয়েছে সে তুলনায় হোমিওপ্যাথি কি অনেকটাই পিছিয়ে? এ প্রশ্নের জবাবে ডা: আশীষ প্রধান বলেন, না, এমনটা ভাবার কোনও বিষয় নেই।কারণ হোমিওপ্যাথি এই অতিমারীর সময় প্রমাণ করেছে হোমিপ্যাথিক ওষুধ করোনা প্রবাহে কতটা কার্যকরী।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের সমীক্ষায় প্রমাণিত যে, হোমিওপ্যাথি ওষুধ আর্সেনিয়াম এ্যালবাম যাঁরা যাঁরা খেয়েছিলেন, পরবর্তী সময়ে তাদের কেউ কেউ করোনাতে আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর হার নেই বললেই চলে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জনক হ্যানিম্যান ২০০ বছর আগে প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কথা মাথায় রেখেই অর্গানন নামে গ্রন্থ লেখেন। এবং তাতে এই বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি হোমিওপ্যাথির হদিশ দেন। হোমিও শব্দের উৎপত্তি হোমোইস থেকে। যার অর্থ “একরকম।” আর প্যাথোস শব্দের অর্থ “দুর্ভোগ।”
হ্যানিম্যান নিজেও ছিলেন প্রচলিত চিকিৎসা শাস্ত্রেরই একজন ছাত্র। তিনিই প্রথম এই চিকিৎসা পদ্ধতির নামকরণ করেন অ্যালোপ্যাথি নামে। আর তারপর নিজেই আবিষ্কার করেন তার বিকল্প পদ্ধতি। যার নাম দেন হোমিওপ্যাথি। জার্মানি হোমিওপ্যাথির উৎস হলেও, বিশ্বের মধ্যে ভারতেই হোমিও চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি পরিব্যাপ্তি লাভ করে। বর্তমানে এই করোনাকালে মহামারী পরিস্থিতিকে আয়ত্তে আনার প্রচেষ্টায় আলোপ্যাথির পাশাপাশি হোমিওপ্যাথির চিকিৎসাও কিন্তু অপরিহার্য।