আসছে টাইফুন পোর্টালের উপর, বদলে যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমের দুনিয়া, জানতে হবে অনেক বিষয়
HnExpress অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা ঃ জানেন কি, ১৯৯৪ সালে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাপ্তাহিকের সম্মিলিত বিক্রি ছিল প্রায় ৬ কোটি, সংখ্যাটা কমে অর্ধেকের মত হয়েছে। ১৯৯৪-র পর দু’দশকে ওদেশে সংবাদমাধ্যমে কর্মীসংখ্যা ৪০ শতাংশ কমেছে। বর্তমানে বদলে যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমের দুনিয়া, তাই জানতে হবে অনেক বিষয়। পোর্টালের উপর আসতে চলেছে টাইফুনের মত এক ঝড়।
সংবাদপত্র বা সাময়িকীগুলো যে অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগছে তা সবারই জানা। বদলে যাচ্ছে প্রচারমাধ্যমের ঘরানা। ছাপা কাগজের বদলে দ্রুত বাজার দখল করছে নানা ধরণে পোর্টাল। বদলে যাচ্ছে অনেক কিছুই। সম্প্রতি কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় এ কথা জানান অ্যাডভার্টাইজিং ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি সম্রাট মুখোপাধ্যায়।
বেশ কিছু দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি জানিয়ে দিলেন, পোর্টালের এই তেজি ভাব থাকবে না। টিঁকে থাকবে সেগুলিই যেগুলি মান সত্যিকারের ভাল হবে। কেন্দ্রীয় সরকার উদ্যোগী হয়েছে বিভিন্ন নিউজ পোর্টালের ব্যাপারে নির্দিষ্ট আইন আনতে। তবে এ নিয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার ২৬ নভেম্বর বলেছে, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ প্রয়োজনে এক মাসের মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে মতামত জানাতে পারে।
সেই সব খতিয়ে রূপরেখা তৈরি হবে। গোটা দেশে ব্যাঙের ছাতার মত পোর্টাল গজিয়ে উঠেছে। প্রত্যেকেই নিজেদের প্রচুর ভিউয়ার বলে দাবি করে। আরএনআই দেওয়ার সময় কেন্দ্র সতর্কতা নেবে। সব খতিয়ে রূপরেখা তৈরি হবে। পাঠকের মূল্যায়ণটাই এখানে সবচেয়ে বড় কথা। কীভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া যাবে? সম্রাটের কথায়, বিশ্বাসযোগ্যতার প্রশ্ন সবচেয়ে বড়।
এখনও এ দেশের একটা বড় জনগোষ্ঠী ইন্টারনেটের খবরে আস্থা রাখেন না। কারণ, প্রতিযোগীদের টেক্কা দিয়ে আগে মুখরোচক খবর দিতে গিয়ে অনেক সময় ভূল তথ্য পরিবেশন করে বসে অনলাইন নানা মিডিয়া। যে কেউ নিউজ পোর্টাল খুলে বসছেন। কিন্তু যে কেউ দৈনিক সংবাদপত্র প্রকাশ করতে পারেন না। এর জন্য যন্ত্রপাতি, পরিকাঠামো চাই। তাই অনেক সতর্ক ও গোছানো হতে হয় খবর ছাপার আগে।
তিনি আরও বললেন, সংবাদপত্রের শিরোনাম বা ‘মাস্টহেড’ একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যার ওপর পাঠক আস্থা রাখেন। ফার্সপোস্ট, ডেলিহান্ট, কোয়ার্টজ ইন্ডিয়া, ফ্লিপবোর্ড প্রভৃতির তুলনা করে সম্রাট বলেন, অনলাইন পাঠকদের সিংহভাগ মুঠিফোনে দেখেন। ফলে পরিকল্পনা মোবাইল ফোন-বান্ধব হওয়া দরকার।
শিক্ষিত ভাবনা বা কন্টেন্ট প্ল্যানিং, বিষয় নির্বাচনে গবেষণা, লেখা বা কন্টেন্টে মুন্সিয়ানা রাখতে হবে। অন্যত্র প্রকাশিত কোনও লেখা থেকে নকল করার (প্লেজিয়ারিজম) ব্যাপারেও সতর্ক ও সংযত থাকতে হবে। এ ব্যাপারে ডুপ্লিকেট চেকার, রিডেবল ডট কম প্রভৃতির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
পাঠককে তাঁর রুচি বা পছন্দের বিষয় খুঁজে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। যেমন ‘ইন শর্টস’-এ ৬০ শব্দের মধ্যে একটা বিষয়ের নির্যাস রাখতে হবে। সঙ্গে লিঙ্কে ক্লিক করে পাঠক খবরটির বিস্তারিত পেতে পারেন। দেখাতে হবে সৃজনশীলতা। যাথে পাঠক আমার প্রোডাক্টের ওপর আকর্ষণ বোধ করেন। এক্ষেত্রে টাইমলাইন বা সময়সারণী একটা উল্লেখযোগ্য জিনিস।
সম্রাট এদিন জানান, প্রিন্টের মত অনলাইনেও নিজস্বতা তৈরি করে নিতে হবে। সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে যারা উঠে আসছে, তারাই টিঁকে থাকবে। একেই বলে সভ্যতা।