ক্ষমতায় আসা নাকি মানুষের জন্য কাজ? বাংলার মুখ‍্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির লক্ষ‍্য কি? প্রশ্ন বিরোধীদের

0

HnExpress ২৮শে জুলাই, ঝুম্পা দেবনাথ, কলকাতা ঃ ক্ষমতায় আসা নাকি মানুষের জন্য কাজ? বাংলার মুখ‍্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির লক্ষ‍্য কি? প্রশ্ন বিরোধীদের। প্রসঙ্গত, দিনে দিনে করোনার থাবায় আক্রান্ত হচ্ছেন বাংলার মানুষ। প্রতিদিন নজরে আসছে করোনা সংক্রমণের নতুন নতুন রেকর্ড। মাস্ক পড়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, তার সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, এই হল করোনা সংক্রমণকে ঠেকানোর মূল দাওয়াই। কিন্তু অনেকেই মানছেন না এই দাওয়াইগুলি।

ফলত সংক্রমণের গ্ৰাফ হচ্ছে উর্ধ্বমুখী। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৯৩১ জন। করোনা নামক এই ভয়াবহ মহামারী পরিস্থিতিতে বাংলার মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২১শে জুলাই ‘শহিদ স্মরণে’ ভার্চুয়াল বার্তার ব‍্যাবস্থা করেছিলেন। ব্লকে ব্লকে তৃণমূল দলের দলীয় কার্যালয়ে বড়ো স্ক্রিন বসিয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল মুখ‍্যমন্ত্রীর একুশের বার্তার জন্য।

মুখ‍্যমন্ত্রী একুশের বার্তায় মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন যে, তিনি যদি ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসেন তাহলে সারা বছর বিনামূল্যে রেশনের ব‍্যাবস্থা করে দেবেন। তিনি আরও বলেন যে, তিনি ৬.৫ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে ১ লক্ষ করে টাকা দিয়েছেন। এছাড়াও মুখ‍্যমন্ত্রী ২১ জুলাই-র এই ভার্চুয়াল বার্তার মাধ্যমে সকলের উদ্দেশ্যে ২০২১ সালের ভোটের বার্তাও দিয়েছেন এদিন।
মুখ‍্যমন্ত্রীর এইরকম নানা প্রতিশ্রুতি ও ভোটের বার্তার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধীমহ‍ল বিরোধিতায় মুখর হয়েছেন।

এদিন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী কটাক্ষের সুরে বলেন, ভোটের একবছর আগে থেকে প্রতিশ্রুতি দিতে হচ্ছে মানে বুঝতে হবে অবস্থা খুবই খারাপ। তিনি আরও বলেন, মুখ‍্যমন্ত্রী তো পারতেন যুবসমাজকে চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে, কারণ তিনি জানেন যে এইরকম প্রতিশ্রুতি দিলে তা রাখতে পারবেন না। তিনি আরও জানান, বাংলায় শিল্প গড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুখ‍্যমন্ত্রী ক্ষমতায় এসেছিলেন, ক্ষমতায় আসার এত বছর পরেও কোন শিল্প তো গড়ে উঠলই না, বরং শিল্প ব‍্যবসায়ীরা বাংলায় শিল্প করার কথা ভুলেও ভাবছেন না।

কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী জানান, ১৯৯৩ সালে ১৩ জন কংগ্ৰেস কর্মী পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান; তখন মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় বলেছিলেন যে, এই ১৩ জন দলকর্মীকে গুলি করে মারার জন্য তদন্ত হবে। কিন্তু মুখ‍্যমন্ত্রী ক্ষমতায় আসায় এতগুলো বছর পার হওয়ার পরেও সেই তদন্তের কোন খবর জানানো হল না। এদিন এই বিরোধী মহলের একাংশ আবার বিরোধিতার সুর সপ্তমে রেখে বলেন, মুখ‍্যমন্ত্রী বলেছেন, ৬.৫ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে ১ লক্ষ করে টাকা দিয়েছেন, কিন্তু কারা পেয়েছেন সেই টাকা?

আর সেই টাকা পাওয়ার তালিকাই বা কোথায়? আবার কেউ বললেন, বিনামূল্যে সারা বছর রেশন দেওয়ার কথা বলছেন মুখ‍্যমন্ত্রী, কিন্তু দেশের ৫০% মানুষ এই রেশন নেন না, তাহলে তাদের কি হবে? রেশনের প্রাপ্ত চালের গুনমানই বা কি রকম হবে? আর শুধু চাল-ডাল রেশন দিলেই বাকি আনুষঙ্গিক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এর যোগান মিটবে কি উপায়? বহু মানুষ আজ কর্মহীন, কত মানুষ আছেন যাদের নিজস্ব মাথা গোঁজার ঠাঁই টুকুও নেই। তারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হলে ভাড়ার টাকা মেটাবে কি করে? মুখ‍্যমন্ত্রীর ২১ জুলাই-র বার্তা প্রেক্ষিতে এই রকম নানা প্রশ্নে মুখর হয়ে উঠেছে বিরোধী মহলের একাংশে।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply