আমডাঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট শুরুর আগেই বিজেপি কর্মীর বাড়িতে বোমাবাজি, সাথে হুমকিও

0

HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, আমডাঙ্গা ঃ বিষ্ণুপুর থেকে বিশরপাড়া, আর আমতা থেকে আমডাঙ্গা, কোনো এলাকারই ভোটকালীন অশান্তির হাত থেকে রেহাই নেই। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্তর্গত বারাসাত পেরোলেই বামনগাছি, তার পরই দত্তপুকুর। দত্তপুকুরের অন্তর্ভুক্ত আমডাঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি কর্মী শ্যামাপদ দাসের বাড়িতে ভোট শুরুর মুখেই বোম ফেলা হয়। ঠিক কি এমন হয়েছিল এদিন?

ঘটনাটির বিষয় আমাদের সংবাদ প্রতিনিধিকে জানালেন বিজেপি কর্মী শ্যামাপদ দাস। তিনি বলেন, “বাড়ি উদ্দেশ্য করে নয়, আমাকে আহত করার জন্যই বাড়িতে বোমটি ফেলা হয়। কারন আমি সরাসরি ভাবে বিজেপি করি। এর আগেও হুমকি দেওয়া হয়েছিল, মেরে ফেলা হবে, হাত পা ভেঙ্গে দেওয়া হবে। তাঁদের একটাই উদ্দেশ্য, আমি যাতে বিজেপি না করি। গত ১৭ তারিখে পর পর দুটি বোম ফেলে আমার বাড়িতে এবং সম্ভবত ওদের কাছে অন্য হাতিয়ারও ছিল বলে আমার সন্দেহ।

বোমাটি রাত ১২ টা ৩৭ মিনিট নাগাত পরে আমার বাড়ির ছাদে। প্রথমবার বোমা পড়ার পর আমি বাড়ি থেকে বের হইনি। তার ঠিক কয়েক সেকেন্ড পর আরও একটি বোমার শব্দ হয়। এখন মনে হচ্ছে, সাথে সাথে বেরোলে আগ্নেয় অস্ত্র দিয়ে আমাকে মেরে ফেলা হত। আমি এখন খুব অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। পর পর হুমকি আসছে। আমার বড়ো ছেলে আছে, তাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলছে মেরে দেবো৷ অভিযোগ এর তীর তৃনমূলের দিকে। ফলে আমরা স্বপরিবারে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

তিনি আরও বললেন, তাদের নামে আমি আইনি ব্যাবস্থাও নিয়েছি। বাড়িতে আমার দুই ছেলের সাথে আমার বাবা থাকেন, এছাড়াও আমি ও আমার স্ত্রী থাকি। ঘরের মধ্যে একটি জানালা আছে, সেইটি সময় বিশেষে খোলা কিংবা বন্ধ থাকে। এদিন বন্ধ থাকার কারনে ঘরের ভিতরে বোমাটা ফেলতে পারেনি। একটি বাড়ির কার্নিশে ও আরেকটি ছাদে পড়েছে।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মোট ভোটারদের পরিমাণ আমডাঙা বিধানসভা কেন্দ্রে ছিল ৮৯ শতাংশ। আমডাঙা বিধানসভা হল ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।

গত লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থী অর্জুন সিং জয়লাভ করেন ব্যারাকপুর লোকসভা আসন থেকে। জয়ের মার্জিন ছিল ১৪৮৫৭টি ভোট। তিনি দিনেশ ত্রিবেদীকে হারিয়ে ছিলেন, যিনি অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস দলের সদস্য ছিলেন। ২০২১ এর ভোটে আমডাঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির পক্ষ থেকে জয়দেব মান্না, আইএসএফ এর পক্ষ থেকে জামাল উদ্দিন, তৃনমূলের পক্ষ থেকে রফিকুর রহমান ভোটে লড়ছেন।

সেই ভোট প্রসঙ্গে বিজেপি কর্মী শ্যামাপদ দাস বলেন, “আমডাঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্রে আমরা প্রায় ২০ থেকে ২৫ এর ব্যবধানে ভোটে জিতছি। ৯৫% ভোটে আমরা জিতবো, হয়তো কমতে বা বাড়তেও পারে। ফলে তৃণমূল জিততে পারবে না জেনেই বাড়ি বাড়ি বোমা ফেলে ভয় দেখাচ্ছে। ওদের যে পিসি-ভাইপো আছে তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আর রেশনের চাল চুরি করতে পারবে না, কাটমানি খেতে পারবে না তাই এই ভাবে বোমা ফাঁটিয়ে ভয় দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন সব চেয়ে বড়ো ব্যাপার হচ্ছে যে, আমরা এখানে ৪৪ বছর ধরে কোনো হিন্দু প্রতিনিধি পাইনি। ফলে একেবারে ১০০ তে ১০০ পারসেন্ট জয়দেব মান্না জিতে যাচ্ছে। আমাদের এটাই আনন্দ যে এখান থেকে এবারে আমরা হিন্দু প্রতিনিধি পাচ্ছি।” এই ঘটনার পরও সেই অঞ্চলে আরও এক বিজেপি কর্মীর বাড়ির সামনে বোম ফেলা হয়, এছাড়াও চলে দুরাউন্ড গুলি। বৃহস্পতিবারেই ভোট। আর ইতিমধ্যেই আমডাঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্রে অশান্তির সুত্রপাত ঘটে গেলো।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply