“থানার ভিতরে চলছে ধৃত বিজেপি কর্মীদের ভুরি ভোজ, আইসি’কে বদলী পশ্চিম মেদিনীপুরে”
HnExpress ১৬ই জুলাই, অরুণ কুমার, উত্তরবঙ্গ ঃ আন্দোলন করে গ্রেফতার হওয়া ধৃত বিজেপির কর্মী সমর্থকরা, গত মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় বসে গরম ভাত আর খাসির মাংস দিয়ে জমিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজন করছিলেন। আর এই অবিস্মরণীয় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই বুধবার বদলির নির্দেশ এল জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আই সি বিশ্বাশ্রয় সরকারের। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের কাথীতে কোর্ট ইন্সপেক্টর হিসেবে বদলি করা হয়েছে তাঁকে।
বিগত প্রায় বছর তিনেক ধরেই জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত আইসির দায়িত্বে ছিলেন এই বিশ্বাশ্রয়বাবু। উল্লেখ্য যে, গত সোমবার সকালে উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে খুন করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ জুড়ে বনধের ডাক দেয় বিজেপি। এদিন সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বনধের সমর্থনে পথে নামে বিজেপির কর্মী সমর্থকরা।
উত্তরবঙ্গের বিভাগীয় শহর জলপাইগুড়ি এবং তার সংলগ্ন এলাকাতেও সকাল থেকে পথে নেমে দোকানপাট খোলায় ও যান চলাচলে বাধা দেন এই বিজেপি কর্মীরা। স্বাভাবিক জনজীবনে বাধা সৃষ্টির অভিযোগেই জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার পুলিশ গ্রেফতার করে বিজেপির শতাধিক নেতা কর্মীকে। এদিন তাদের নিয়ে আসা হয় জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানায়। সুত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, দুপুর গড়াতেই নাকি ভিষণ খিদে পায় ধৃত বিজেপি কর্মীদের।
এরপর সেকথা জানালে তাঁদের মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করতে নেমে পড়েন এই কোতোয়ালী থানার পুলিশ। তারপর সুদৃশ্য ফয়েল প্যাক করে আনা হয় তাঁদের জন্য খাসির মাংস আর গরম ভাত। বিজেপির নেতা কর্মীদের পরম তৃপ্তি সহকারে মাংস-ভাত খাওয়ার সেই ছবি সোস্যাল মিডিয়াতে দ্রুততার সাথে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ছবি নিয়েই কলকাতা সহ গোটা রাজ্য জুড়ে যেমন তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঠিক তেমনি রাতারাতি পুলিশ মন্ত্রীর নির্দেশ যায় জলপাইগুড়ির কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত আই সি বিশ্বাশ্রয় সরকারকে বদলী করার। এ রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত এডিজি (আইন শৃঙ্খলা) এই বদলীর আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন জানা গিয়েছে । জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদীও এই বদলীর আদেশ এর কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বদলি তো একজন পুলিশ আধিকারিকের চাকরির অন্যতম শর্ত।
আর তাঁকে সেই নিয়ম অনুযায়ী বদলী করা হয়েছে বলে জানালেন তিনি। কিন্তু এই ঘটনার জেরে শহরজুড়ে যেসব প্রশ্ন উঠে আসছে তা হলো যে, রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের থানায় বসিয়ে এই আদর যত্ন করাতেই কি বদলির বলি হতে হল কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকারকে?