ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা না থাকলেও, জাওয়াদের প্রভাবে বাংলায় থাকছে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, ওয়েদার রিপোর্ট ঃ আবহাওয়া দফতর সুত্রে জানা গেছে, এই মুহূর্তে ‘পুরী থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। যদিও সেভাবে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা নেই, কিন্তু গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে রাজ্যে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী ৩ ঘণ্টায় শক্তিক্ষয় করে তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে, এমনটাই আশংকা আবহাওয়াবিদদের। যা উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিক ধরে বাংলার উপকূল অভিমুখে এগোবে। আজ মধ্যরাতের মধ্যেই সেটা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে।
আজ ও আগামীকাল গোটা দক্ষিণবঙ্গে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা না থাকলেও জওয়াদের প্রভাবে রাজ্যে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছেই। হাওয়া অফিস সুত্রের খবর, আজ ও আগামীকাল দুই মেদিনীপুর সহ দুই ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টি হবে। এছাড়াও হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমানেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আগামীকাল কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হবে।
যদিও উপকূলবর্তী এলাকায় সর্বোচ্চ ৫৫ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, অন্যদিকে নদী পারাপারের ক্ষেত্রে ফেরি পরিষেবাও বন্ধ রাখা হচ্ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী জানা গেছে, আগামী ৭ই ডিসেম্বর থেকে দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়ার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পরে কিছুটা তাপমাত্রা কমবে, তবে ১১ই ডিসেম্বরের পরে তাপমাত্রা আরও অনেকটাই কমে যাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিকে, অমাবস্যায় কটালের জেরে সমুদ্রের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ উপচে প্লাবিত হলো মহিষামারি গ্রাম। আশংকা, নোনা জল ঢুকে যাওয়ায় কয়েকশো বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কৃষকেরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা শুনেই তড়িঘড়ি ধান কেটে নেওয়ার কাজ চলছিল। কিন্তু কাটা ফসল ঘরে তোলার আগেই সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় ধানজমি। বড়সড় লোকসানের আশঙ্কায় মাথায় বজ্রাঘাত চাষিভাইদের।
বাংলার মাটিতে জওয়াদ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা কেটে গেলেও, নিম্নচাপের প্রভাবে দিঘায় থাকছে মুষলধারে বৃষ্টির সম্ভাবনা, সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়াও। বাড়বে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস। পূর্বাভাস অনুযায়ী সমুদ্র সৈকত থেকে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সড়িয়ে দিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। বৃষ্টি বাড়ার ফলে গঙ্গার জলস্তরও বাড়ছে হু হু করে। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা না থাকলেও, যে কোনও ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় প্রশাসন সদা প্রস্তুত রয়েছে বলে জানা গেছে নবান্ন সুত্রে।
এদিকে, হলদিয়ায় বাড়ছে হলদি নদীর জলস্তর। ফলে সতর্ক প্রশাসন, বন্ধ করে দিলো হলদিয়া—নন্দীগ্রাম ফেরি পরিষেবা। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় আজ ও আগামীকাল বন্ধ থাকবে হুগলি জেলার সমস্ত ফেরিঘাট। বন্ধ থাকছে জলপথ পরিবহণও। অন্যদিকে, কাকদ্বীপের লট এইট থেকে সাগরের কচুবেড়িয়া পর্যন্ত ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে বলে সুত্রের খবর।