সাইক্লোন গুলাবের অবস্থান পরিবর্তন হলেও ঝোড়ো হাওয়া সহ প্রবল বর্ষণ ঘিরে বড়সড় দুর্যোগের আশঙ্কা বাংলায়—

0


HnExpress অরুন কুমার, ওয়েদার রিপোর্ট ঃ প্রবল বৃষ্টি আর তারপর গরমে অস্থির সারা রাজ্য। এরই মাঝে বড় ধরনের দুর্যোগের পূর্বাভাস দিয়েছিল রাজ্যের আবহাওয়া দপ্তর।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে চলতে থাকা একটানা বৃষ্টিতে নাজেহাল দক্ষিণবঙ্গবাসী। আর জল যন্ত্রনায় নাজেহাল কলকাতাবাসী। ফলে সকলের মনে একটাই প্রশ্ন
এই যন্ত্রণা থেকে কবে নিস্তার পাওয়া যাবে?
এ বিষয়ে কোন স্বস্তির আশ্বাস আপাতত মিলছে না বলে আলিপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রের খবর।

বঙ্গোপসাগরে দেখা দিয়েছে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ এবং জোড়া ঘূ্ণাবর্ত। পূর্ব ও মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে শক্তি বাড়িয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে সেই ঘূর্ণাবর্ত। যার প্রভাবে রবিবার তা ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি চলে আসে। প্রায় সমান্তরাল একটি ঘূর্ণাবর্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যায়। এই দুইয়ের যোগফলে গতকাল সোমবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয় বেশকিছু জেলা সহ রাজ্যে।

আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সাইক্লোন গুলাব তার গতিপথ পরিবর্তন করে অন্ধ্র এবং ওড়িশার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে। ফলে রক্ষা পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তবে ঝড় থেকে বাঁচলেও নিম্নচাপের ভ্রুকুটি এখনও বাংলার উপরে দন্ডায়মান। হাল্কা ঝড় সহ প্রবল বর্ষন ঘিরে বড়সড় দূর্যোগের আশংকা বাংলা জুড়ে। বুধবার রাজ্যের কয়েকটি অংশে সামগ্রিক ঝোড়ো হাওয়া সহ ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে দুই মেদিনীপুর, দুই চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা সহ বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাতেও হাল্কা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।



নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টির ফলে দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত নদীর জলস্তর বাড়বে। নীচু এলাকায় জল ঢুকতে পারে। তাই ত্রাণ শিবির তৈরি রাখতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। সাথেই জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরে সমস্তরকম ব্যবস্থা মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মৎস্যজীবীদের জন্য কড়া সর্তকতা জারি করেছে হাওয়া দফতর। উল্লেখ করা যেতে পারে যে, আগের একটানা বৃষ্টির ফলে এখনও জলমগ্ন কলকাতার বহু জায়গা, ফলে নাজেহাল শহরবাসী।

এই অবস্থায় ফের বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা শুনে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে লালবাজার। রবিবার রাত ১২টা থেকেই শুরু হয়ে গেছে সর্বক্ষণের কন্ট্রোল রুম। আর পুলিসের পাশাপাশি থাকছে দমকল, কেএমসি, পিডব্লুডি। হাওয়া অফিস সুত্রের খবর, বুধবার দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ৬৫ থেকে ৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। অন্যান্য জেলায় ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। ফলে রাজ্যে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, সাইক্লোন গুলাবকে রুখতে বিপর্যয় মোকাবিলায় দফতরের ১৮টি টিমকে ইতিমধ্যেই সতর্ক থাকতে বলেছে কেন্দ্র। আর পরিস্থিতি বেগতিক দেখলেই এই দল নিজেদের মতো করে উদ্ধার কাজে ব্রতী হবে। ইতিমধ্যেই অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশায় সাইক্লোনের সতর্কতা জারি করে দিয়েছে কেন্দ্র। এনডিআরএফএর ১৩টি দল ও ২৪টি সাব টিম ইতিমধ্যেই সেই পরিস্থিতির মোকাবিলায় ময়দানে নেমেও পরেছে।

এখনও পর্যন্ত পাওয়া সুত্রের খবর, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আবারও একটি ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রভাবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ওই ঘূর্ণাবর্ত সরে এসে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে অবস্থান করবে। এর ফলে বুধবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝোড়ো হাওয়া সহ ভারী, অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য উপকূলবর্তী জেলাগুলিতেও প্রতি ঘন্টায় ৫৫-৬৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। 

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply