কালীপুজোর আগে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করল আবহাওয়া দপ্তর
HnExpress ২রা নভেম্বর, অরুণ কুমার, ওয়েদার রিপোর্ট ঃ করোনা মহামারীর পাশাপাশি বছর শেষের দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা, ব্যাপক বৃষ্টি সহ নানান দুর্ভোগ লেগেই আছে রাজ্যবাসীর জীবনে। আর ঠিক এমনই অবস্থায় ফের দেশের বেশ কিছু রাজ্য গুলিতে কালীপূজোর আগেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। ইতিমধ্যে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, ফলে রবিবার বেলার দিকে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে সামান্য বা অতিসামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছে মৌসম বিভাগ।
আইএমডি-র সতর্কবার্তা অনুযায়ী দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে রবিবার ও সোমবার ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এদিকে দিল্লির মেট্রোলজী বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, মিজোরাম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মেঘালয় ও আসমে প্রবল বৃষ্টির সাথে হাওয়ার পূর্বাভাস জারি করেছে। আসন্ন দেওয়ালির পর থেকে ঠাণ্ডা পড়া শুরু হয়ে যাবে বললেই চলে৷ বর্ষা বিদায় নিয়েছে দক্ষিণবঙ্গ থেকে। স্বাভাবিক ভাবেই শীতের অপেক্ষায় কলকাতা-সহ গোটা শহরতলি।
দূর্গাপুজোর সময় নিম্নচাপের ভ্রুকুটি থাকলেও বাংলাদেশের দিকে অভিমুখ থাকায় এ যাত্রায় রক্ষা পায় দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি। কিন্তু ঠান্ডার ঠিক আগেই ফের কালো মেঘের সঞ্চার হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়। শনিবার সকাল থেকেই আলো ঝলমলে আবহাওয়া। তবে মাঝে মাঝে মেঘের দেখা মিললেও তা ছিল কিছুক্ষণের জন্যই। আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে দুপুরের পর থেকেই মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি এলাকায় বজ্রবিদ্যুত্-সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
কলকাতা ও শহরতলিতে এদিন আংশিক মেঘলা থাকলেও কোথাও বৃষ্টি পড়ার খবর মেলেনি। কোনো পূর্বাভাসও ছিল না। কিন্তু দুপুরের পর থেকেই মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার এলাকার উপর ঘন কালো মেঘের সঞ্চার হয়েছে। যার জেরে বজ্রবিদ্যুত-সহ ভারী বৃষ্টি হতে পারে বিভিন্ন এলাকায়। দক্ষিণবঙ্গে কমতে পারে তাপমাত্রাও। অন্যদিকে মৌসম ভবন সূত্রে জানানো হয়েছে। রবিবার, সোমবার, মঙ্গলবার দক্ষিণ ও উত্তর-পূর্বের বেশ কয়েকটি রাজ্যে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, পুদুচেরি, তামিলনাড়ু ও কেরালায় মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কর্ণাটক, আন্দামানেও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রসঙ্গত, পুজোর পর থেকেই বাতাস শুকনো, রাতের দিকে কমছে তাপমাত্রাও। নিম্নচাপের ভোগান্তি না থাকলেও বাংলায় হাজির উত্তরের শুকনো বাতাস। আর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মত আবারও বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে নতুন নিম্নচাপ। যার জেরেই আকাশ মেঘলা। দু-এক পশলা বৃষ্টি পড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গে।
পরোক্ষ প্রভাবে দখিনা বাতাসের আনাগোনা বাড়বে। ফলে আকাশ মেঘলা হবে। নভেম্বরের শুরুতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনাও থাকবে। ফলে সে সময় রাতের তাপমাত্রা বেড়ে ২০° থেকে ২১° ডিগ্রিতে পৌঁছে যেতে পারে। জনৈক আবহাওয়া অধিদপ্তর এর আধিকারিকের মতে, অক্টোবরের মাঝামাঝি নাগাদ কলকাতা থেকে বর্ষা বিদায় নেওয়ার কথা। তার পর ঘূর্ণিঝড় মরসুম। এরই ফাঁকে উত্তরের শুকনো বাতাসের আনাগোনা শুরু হয়ে যায় বাংলায়। যেমন, ২০১১ সালের অক্টোবরেই পারদ নেমে গিয়েছিল ১৮.৯° ডিগ্রি ফারেনহাইটে। ২০১৮ সালে তা ২০° ডিগ্রিতে।
আর এবার দিনকয়েক আগে পর্যন্তও রাতের তাপমাত্রা ২৫° থেকে ২৬° ডিগ্রির আশপাশেই ঘোরাফেরা করছিল। যার অন্যতম কারণ হলো সাগরে পর পর নিম্নচাপ। এবং তার ধাক্কায় অক্টোবরের শেষ সপ্তাহেও বর্ষার থেকে যাওয়া। তবে পুজোর নিম্নচাপ বাংলাদেশে সরে যাওয়ার পরই হাওয়াবদল। একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝার হাত ধরে কাশ্মীর, সিকিমে শীতের মরসুমের প্রথম তুষারপাতও হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার হেমন্ত এবারে হাজির বাংলার দ্বারে।