টানা ৬ দিনের অপারেশনের পর অবশেষে ঘুমপাড়ানি গুলিতেই কাবু জিনাত
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া : টানা ৬ দিনের অপারেশনের পর অবশেষে তিন জেলা ঘুরে বাঘিনী জিনতকে (Zeenat) ঘুমপাড়ানি গুলিতে জালবন্দি করল বন দফতর। রবিবার বাঁকুড়ার গোঁসাই ডিহিতে পাতা ফাঁদে পা দেয় জিনাত। এদিন বেলা তিনটে নাগাদ জিনাতকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। সেই গুলিতেই কাবু হয় বাঘিনী (Tigress)। আর তাকে অচেতন অবস্থায় খাঁচাবন্দি করা হয়। জিনাতকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে কোথায় তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা স্পষ্ট করে বলেননি বনকর্মীরা।
মনে করা হচ্ছে অভুক্ত ছিল জিনাত। তাকে রেডিও কলারের মাধ্যমেই ক্রমশ ট্র্যাক করা হচ্ছিল। শেষপর্যন্ত জায়গা বুঝে তার জন্য টোপ দেন বন দফতরের কর্মীরা। অবশেষে তাতেই কাজ হাসিল হয়। গতকাল তাকে তিনবার ট্রাঙ্কুলাইডজ (Tranquilized) করা হয়। তার পরেও সে পালিয়ে যায়। সেই উড়িষ্যার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে শুরু করে একের পর জঙ্গলে পালিয়ে বনকর্মীদের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছিল জিনাত। আজ চতুর্থবারের জন্য জিনাতকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়।
আর তাতেই কাবু হয় বাঘিনীটি (Tigress)। যদিও গতকাল তিনবার গুলি করার পর কিছুটা কাবু হয়ে পরেছিল সে। সেই কথা মাথায় রেখেই আজ তাকে কিছুটা বিশ্রাম দেওয়া হয়। কারণ ঘন ঘন ট্রাঙ্কুলাইজার দিলে তার প্রাণনাশের আশংকা হতে পারত। এই কয়েকদিন ধরে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ায় দাপিয়ে সবে বাঁকুড়ায় ঢুকেছিল জিনাত। উল্লেখ্য, ওড়িশা থেকে বেলপাহাড়ি হয়ে এই রাজ্যে ঢুকে পড়ে জিনাত। তার গলায় রেডিও কলার (Radio caller) পরানো থাকার কারণেই তাকে এত তাড়াতাড়ি ধরা সম্ভব হল।
গতকাল তিনটে গুলি ছোড়ার পর তাকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে একটি জায়গায় নিয়ে আসা হয়। তারপর আজ ভোরে তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়। কারণ তিনটে ঘুমপাড়ানি গুলিতে সে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। টানা বারো ঘণ্টার বিশ্রাম দেওয়ার পর সে যে জায়গাটিতে আশ্রয় নিয়েছিল তার চারদিকে নেট দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। এরপর বেলা তিনতে নাগাদ জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ২টি জেসিবি (JCB)। বাঘ যে জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেল সেই জায়গাটি পর্যন্ত রাস্তা করা ফেলা হয়।
বেলা তিনটে নাগাদ চতুর্থবার ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তার পরই একটি ঝাঁপ দেওয়ার মতো শব্দ হয় এবং বাঘিনীটি বাইরে বেরিয়ে আসে। তবে বন দফতরের কর্মীদের চিৎকারে সে আবার বনে ঢুকে যায়। এরপর ধীরে ধীরে সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে পর্যাবেক্ষণ (Examination) করার পর জিনাতকে খাঁচাবন্দি করে ফেলা হয়। তারপর উপর থেকে জল দিয়ে ধাস্তস্থ করা হয়। এরপরই তাকে স্ট্রেচারে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র।