নারীর অনিচ্ছায় স্বামীর সঙ্গে থাকতে বাধ্য করা যাবে না, এমনই ঐতিহাসিক রায় দিলো সুপ্রিম কোর্ট—

0

HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, গোরক্ষপুর ঃ পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মেয়ে মানেই শালীনতা মানতে বুকে ওড়না, পিরিয়ড হওয়ার সময়ে লজ্জাতে নিজেকে লুকিয়ে রাখা, বিয়ের পর সিন্দুর, হাতে পলা, সাথে পন প্রথা তো লেগেই আছে ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে। যৌবন পেরোনোর পরে চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন নারী পুরুষ সকলেই। কিন্তু বিবাহ প্রক্রিয়ার পর ভালোর সাথে খারাপও লেগে থাকে। তাই বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনাও ঘটে থাকে।

২০১৩ সালে বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য মহিলার উপর নির্যাতন চালাতেন তাঁর স্বামী। মহিলার অভিযোগ, স্বামীই তাঁকে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে যেতে বাধ্য করেন। ফলে ২০১৫ সালে ওই মহিলা কোর্টের দারস্থ হন এবং তিনি খোরপোশের জন্য মামলাও করেন। সংবিধানের আইনের ধারা অনুযায়ী গোরক্ষপুরের আদালত ওই ব্যক্তিকে প্রতি মাসে কুড়ি হাজার টাকা করে খোরপোশ দেওয়ার আদেশ দেয়। মহিলার স্বামী প্যাঁচে পড়ে আদালতের দারস্থ হন এবং এর পরেই বিবাহবন্ধনের অধিকার পুনরুদ্ধারের আবেদন করেন।

আইনজীবী মারফত তিনি আদালতকে বলেন যে, তিনি এক সঙ্গেই অর্থাৎ তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গেই থাকতে চান। মামলার শুনানি চলাকালীন
সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দেন যে স্ত্রী দাসী নন বা কোনও অস্থাবর সম্পত্তিও নন। ওই মামলা সূত্রে ওই ব্যাক্তির আইনজীবীকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করেন যে মহিলারা কি দাসী নাকি যে, তাঁরা স্বামীর সঙ্গে থাকতে বাধ্য থাকবেন? সুত্রের খবর, বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী এই রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নারীর ক্ষমতায়নের প্রশ্নটিকে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।

ফলে নারীর মর্যাদার প্রশ্নটিও এ ক্ষেত্রে আরও গৌরবান্বিত হয়েছে। কারন এখনকার দিনে অনেকেই নারীকে ভোগ্যপণ্য বলেই ভেবে থাকেন। তাই বিবাহ বিচ্ছেদের পর পুরুষের থেকে নারী বেশি ঘৃন্য ও সমালোচনার পাত্রী হয়ে ওঠেন। ধর্ষণ কিম্বা শ্লীলতাহানির পর দায়ী করা হয় মেয়েটির পোশাকেই। আঙ্গুল তোলার ভূমিকাতে থাকেন আমজনতা থেকে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রিও।

জানা গেছে, ২০ হাজার টাকা খোরপোশ দেবার ভয়ে ব্যাক্তির আইনজীবী শুনানিটি চলাকালীন ওই মহিলাকে তাঁর স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন এবং বলেন এক সাথে থাকবেই যখন খোরপোশ দেবার প্রশ্ন উঠবার নয়। কিন্তু আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, স্ত্রী কোনও কেনা দলিল-সম্পত্তি নন বা দাসীও নন। তিনি যখন কোথাও যেতে চান না, তখন তাঁকে পণ্যের মতো কোথাও পাঠানো যায় না।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply