কলকাতার মেট্রোয় ঘটল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, দরজায় যাত্রীর আটকে যাওয়া হাত নিয়েই ছুটল মেট্রোরেল

HnExpress জয় গুহ, কলকাতা ঃ কলকাতার মেট্রো রেলের ইতিহাসে এই প্রথম ঘটল এই ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। দরজায় আটকে ছিল এক যাত্রীর হাত। তাঁকে সেই অবস্থায় নিয়েই টেনে হিঁচড়েই হুহু করে ট্রেন ছুটতে শুরু করল। যদিও চালক এবং গার্ডকে দায়িত্ব জ্ঞানহীন এই ঘটনার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে,  কিন্তু যা ঘটার তা তো ততক্ষণে ঘটেই গেছে, ওই যাত্রীটির ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়ে গিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীদের বক্তব্য থেকে জানা গিয়েছে যে, শনিবার দিন ঠিক সন্ধ্যা ৬.৪০ মি: নাগাদ পার্কস্ট্রিট স্টেশনে কবি সুভাষগামী ট্রেনে ওঠার সময় এক জন যাত্রীর হাত দরজার মাঝখানে আটকে যায়। কিন্তু তাঁর দেহ তখনও ট্রেনের বাইরে ছিল, কিন্তু ওই ঝুলন্ত অবস্থাতেই ছুটতে শুরু করল ট্রেন।

আর এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা বলতে গিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়ছেন এদিনের প্রত্যক্ষদর্শীরা। ট্রেনটি ঝুলন্ত ওই যাত্রীকে প্ল্যাটফর্ম থেকে নিয়ে ছুটতে শুরু করে। টানেলে ঢোকার মুখে পাশের দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে থার্ড লাইনে পড়ে যান ওই যাত্রী। এবং সেই মুহূর্তে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে যায় তাঁর শরীর। ফলে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তাঁর, তারপরে মেট্রোর তরফ থেকে এসএসকেএম হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই যাত্রীকে।

কিন্তু পর্যবেক্ষণের পরে চিকিৎসকেরা জানান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পরে ঘটনাস্থল থেকে জানা গিয়েছে, মৃত যাত্রীর নাম সজল কাঞ্জিলাল, তাঁর বাড়ি কসবা পোস্ট অফিস এলাকায়। তিনি একজন সাহিত্য প্রেমিক মানুষ।প্রতিদিন একাডেমি চত্বরে নাট্যপত্রিকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। তিনি ছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের আদর্শ মডেল। আজ সিআরপিএফ জওয়ান মেট্রো রেলের প্রত্যেক স্টেশনেই মোতায়েন থাকা স্বত্তেও তাদের চরম গাফিলতির ফলে হাড়িয়ে গেল একটি প্রতিভা। যদিও গার্ড এবং চালকেরই কর্তব্য, সবাই ঠিকমতো উঠল বা নামল কিনা, সেটা দেখার এবং তারপর যাত্রা শুরু করা।

এরপরেও এই ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা কী ভাবে ঘটল? কেন কাজ করল না দরজার সেন্সর? বারবার বিভিন্ন রকমের দুর্ঘটনা কেন ঘটছে কলকাতার মেট্রোতেই, কেনইবা দিনের পর দিন বাড়ছে যাত্ৰীদের দুর্ভোগ? এখন এটাই দেখার বিষয় যে দুর্ঘটনার হাত থেকে মানুষকে কতটাইবা রক্ষা করতে পারে কলকাতার এই মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ, তাই নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন চিহ্ন? এদিকে “রানারের মতো থিয়েটারের খবর পৌঁছে দেওয়ার মত কাজ সজল বাবুকে আর করতে দিলো না কলকাতার মেট্রোরেল”……